একুশের ভাবনা

লেখক
জহরলাল সাহা

আবার এসেছে ফিরে

একুশে ফেব্রুয়ারী

সবুজ বাংলায় কৃষ্ণচূড়ার দেশে

আলতা মাটি রােে পলাশের দেশে

বাতাসে তুলেছে ঢেউ

আমি কি ভুলিতে পারি .......

তোমায়, হে একুশে ফেব্রুয়ারী

ওরা পাঁচ ভাই

শুয়ে আছে শীতল কফিনে

অমর–চিরমরতা পেয়ে আজো

যায়নি মুছে ধমনীর ফিনকি

ঢাকার সবুজ ঘাসে চাপ চাপ রক্ত

প্রতিটি হূদয়ে হূদয়ে

অফুরন্ত প্রাণ, শাশ্বত প্রেরণার কাছে

উদ্যত উর্দু বেয়নেট গেছে হেরে

সালাম, বরকত, জব্বর, রফিক, শফিক

তোমাদের হাজার সালাম

বাহান্নর একুশে থাকুক চির অম্লান

বাহান্নর পর একষট্টি

এপার বাংলায়

বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় শিলচরে

অসমের অসমীয়া প্রেমীরা

আরও এগারো প্রাণ নিল কেড়ে বাংলার

একাদশ দধীচির মালা নিয়ে কাঁদি

পরাবো কোথায়?

অমর অক্ষয় ওদের প্রাণ

আজও সব ভাষা দধীচির শুনি

               জাগৃতির আজান৷

ব্রহ্মপুত্রের বয়ে আনা মঙ্গোলীয় কৃষ্টি

গঙ্গা দিলো তাতে আর্য সংস্কৃতি

দামোদর সুবর্ণরেখা কংসাবতীর

অষ্ট্রিক রক্ত – অনেক রক্ত

গড়েছে বাংলায়–এ বিমিশ্র সভ্যতা

বাঙালীর ধমনীতে বইছে

কালো হলদে সাদা মিলে সংকর রক্ত

তাই এ সার্বজনীন চেতনা

একুশের বাংলা ভাষা দিবস

মাতৃভাষা দিবস গোটা দুনিয়ার

পলাশ রাঙা ধূন–

‘আমি কি ভুলিতে পারি ....’

কলিচুন আর কাতা দড়ি

গোবিন্দপুর সুতানুটি নিয়ে কলিকাতা

বাংলা ভাষা সংস্কৃতির পীঠস্থান

আজ হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের পিঠের নীচে

জ্যান্ত কবরের অপেক্ষায়

মায়ের ভাষা

শিল্প সাহিত্য–যাত্রাপালা নাটক

আজ প্রয়োজন,

বড়ো প্রয়োজন

অগ্ণিক্ষরা একুশের

হে একুশে ফেব্রুয়ারী

অপেক্ষামান বাঙালীরা যে তোমারই৷