প্রবন্ধ

অসুবিধা তো সেই বাঙলাদেশীদের নিয়ে!

বঙ্গকন্যা অনন্যা

মূল অসুবিধা তো সেই বাঙলাদেশীদের নিয়ে, সে তো হবারই কথা৷ দেশভাগের পর থেকে বাঙলায় আসা পূর্ব পাকিস্তান বাসীরা (অধুনা বাঙলাদেশ) যদি পাঞ্জাবীদের মত প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ বাসস্থান ও নিঃশর্ত নাগরিকত্ব পেয়ে যেত সকলে তাহলে তো আজকের শরণার্থী সমস্যাই থাকতো না৷ কিন্তু অদ্ভুত ভাবে বিগত বছর ধরে বাঙলার রাজনৈতিক দলগুলি বাঙলা ও বাঙালীর জন্য জোরালো দাবী করে এই অধিকার আদায়ের চেষ্টাই করেনি৷ হয়তো জাতীয় স্তরে পদের লোভে৷ বরং স্থানীয় যে দল বাঙলা ও বাঙালীর হয়ে লড়ে এসেছে তাদের সমর্থন করা তো দূর  উল্টে বিরোধিতা করেছে৷ শুধু ভোটের লোভে বহিরাগতদের প্রাধান্য দিয়ে স্থানীয় ভাষা সংস্কৃতি ও স্থানীয় ভূমিপুত্রদের অবহেলা, অবজ্ঞা করে

সিএবি-তে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে হিন্দু বাঙালীরা

শঙ্কর দাশ

সোমবার (৯ই ডিসেম্বর ২০১৯) লোকসভা ও মঙ্গলবার রাজ্যসভায় সিএবি সংক্ষেপে ক্যাব পাশ হয়ে গেল ও বৃহস্পতিবার (১২ই ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে ক্যাব বিলটি আইনে পরিণত হয়ে গেল৷ এরই মধ্যে ক্যাবের বিরোধিতা করে অসম রাজ্যে উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ সরকার গুলি চালিয়ে তিনজনকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে এমনই পরিস্থিতি৷ আহত কয়েকজন হাসপাতালেও মারা গেছেন৷ পশ্চিমবঙ্গও উত্তাল৷ ত্রিপুরা রাজ্যের পরিস্থিতিও তথৈবচ৷ যদিও গুলি করে হতাহত করার খবর নেই৷ তবুও ক্যাব বিরোধী আন্দোলনকারীদের ‘ত্রিপুরা বন্ধ’ আর ‘রেল অবরোধ’ প্রভৃতি কারণে একজন শিশু সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে৷ অসমে বিশেষ করে অবাঙালী সম্প্রদায় ক্যা

নারীর মর্যাদা রক্ষার চিন্তায় একটি ব্যানার

এইচ.এন.মাহাত

কয়েকদিন আগে শ্যামবাজার পাঁচ মাথায় রাস্তার ধারে টাঙানো একটি ব্যানার নিয়ে আমাদের সুসভ্য আধুনিক নারী সমাজের গেল গেল রব উঠতে শুরু করেছে৷ আধুনিকতার ছোঁয়া লাগা অত্যাধুনিক কিছু নারী স্বাধীনতা চায়৷ সেটা কোন স্বাধীনতা, যাদের হাবভাবে শুধুমাত্র বেলেল্লাপনা ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না৷ এটা ভুললে চলবে না, মেয়েরা প্রথমে মায়ের জাত, প্রতিটি মুহূর্ত্ত একটি মা যেমন তার শিশুকে বুকে আগলে রাখে ও তার মৃত্যুর প্রাক্ মুহূর্ত্ত পর্যন্ত তাকে রক্ষা করে৷ তেমনি বোনের আদর  ভালবাসা উজাড় করে ভাইকে একটি লক্ষ্যে পৌঁছুতে সাহায্য করে৷ এরপর সেই মায়ের আর একটি দিক তার জীবনে মনের মানুষের খোঁজ৷  এ সম্পর্কে আমি অবশ্য একটু ভিন্নমত পো

আন্দোলনের নামে এই উচ্ছৃঙ্খলতা বঙ্গ সংস্কৃতির অঙ্গ নয়

মনোজ দেব

ক্ষোভের যথেষ্ট কারণ আছে৷ অর্থনীতির বেহাল অবস্থা৷ নুন আনতে পান্তা ফুরায় দশা৷ গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত বিভেদের বিল আইনে পরিণত হ’ল৷ ধুরন্ধর অর্থনীতির কারিগর ও রাষ্ট্রশক্তির নিয়ন্ত্রকরা অত্যন্ত সুচতুরভাবে একটি সামাজিক বিভেদ সৃষ্টিকারী বিলকে সংখ্যাধিক্যের জোরে লোকসভা, রাজ্যসভায় পাশ করিয়ে, রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে আইনে পরিণত করল৷ কয়েক কোটি মানুষের সামনে নাগরিকহীনতার খাঁড়া ঝুলিয়ে দিল৷ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী তক্মা সেঁটে দেবার ব্যবস্থা করল৷ এক ঢিলে অনেক পাখী মারতে চাইল মোদী সরকার৷ বেহাল অর্থনীতির দিক থেকে দৃষ্টিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হ’ল, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এ নিয়ে আর কোন উচ্চবাচ

ভৌতিক সম্পদের সর্বাধিক উপযোগ ও সঞ্চয়ে নিয়ন্ত্রণ চাই

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূত

সম্পদ তিন ধরণের– ভৌতিক সম্পদ, মানস সম্পদ ও আধ্যাত্মিক সম্পদ৷ ভৌতিক সম্পদ বলতে বোঝায় যা পঞ্চভূত দিয়ে তৈরী৷ যেমন ধন দৌলত, জমিজমা প্রভৃতি–যে সম্পদ চোখে দেখা যায় বা আমাদের ইন্দ্রিয়ানুভুতির মধ্যে আসে৷

প্রকৃতপক্ষে পরম ব্রহ্ম মানুষের সমস্ত ধরণের অভাব পূরণের জন্যে নানান ধরণের সম্পদ সাজিয়ে রেখেছেন কিন্তু আমরা এই সমস্ত সম্পদের যথার্থ উপযোগ গ্রহণ করতে জানি না বা করি না৷ মানুষের সমস্ত অভাবের মূল কারণ এইটাই, সমস্ত সমস্যার মূল কারণ এইটাই৷

তাই কীভাবে সমস্ত সম্পদের যথার্থ উপযোগ গ্রহণ করতে হবে–প্রাউট–প্রবক্তা তাঁর নবোদ্ভাবিত তত্ত্বে সেই নীতিটাই তুলে ধরেছেন৷

জলাভাব---ভারতের ইতিহাসে ঘনিয়ে আসছে সঙ্কটময় সময়

মনোজ দেব

ভারত সরকারের নীতি আয়োগের এক সমীক্ষায় জানা গেছে --- আগামী একবৎসরের মধ্যে দেশের ২১টি বড় শহরের ভূগর্ভস্থ জল নিঃশেষ হয়ে যাবে৷ রাজস্থান, তামিলনাড়ু , মহারাষ্ট্র, দিল্লীর মতো রাজ্যগুলিতে জলের অভাব তীব্ররূপ ধারণ করবে৷

নীতিনিয়োগের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে শেষ ১০ বছরে দেশের ভূগর্ভস্থ জলের ৬১ শতাংশ ব্যবহার হয়ে গেছে৷ যদি এইভাবে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করা হয় তবে আগামী দুবছরে ভূগর্ভস্থের জল শেষ হয়ে যাবে৷ চেন্নাই, দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরু  মতো বড় শহর গুলিতে জলসংকট মহামারির রূপ ধারণ করবে৷

 

সারা ভারতের সমাজগুলিকে বাঁচাতে বিকেন্দ্রীক অর্থনৈতিক আন্দোলন জরুরী

প্রভাত খাঁ

প্রথমেই বলি সংবিধানের নির্দ্দেশ মতাবেক ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম আছে৷ কিন্তু এখানকার কেন্দ্রীয় শাসকগণ দেখা গেছে যে সেটাকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে ছলবল কৌশলে৷ কেন্দ্রের শাসক রাজ্যের সরকারকে ভেঙ্গে দিয়ে নিজেদের অধীনে এনে শাসন ক্ষমতা কায়েম করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পদদলিত করে৷ পূর্বতন কংগ্রেস সরকার এর নজির রেখে গেছে৷ কংগ্রেসের দেখানো পথেই বর্তমান সরকার হাঁটছে৷ তাই এই শাসন ব্যবস্থায়ও দেশবাসী সন্তুষ্ট নয়৷ এদের আর্থিক সংস্কার নীতিও জনগণকে পথে বসিয়েছে৷ তাছাড়া বিদেশী তাড়ানোর নামে যা কান্ড করছে সেটা মানবতাকে ও গণতন্ত্রকে অবজ্ঞা করে সাম্প্রদায়িকতাকে সামনে রেখে৷ ধর্ম নিরপ

যুব সমাজ, শালীনতাবোধ ও অতি আধুনিকতা

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

প্রায় দশ লক্ষ বছর পূর্বে পৃথিবীর বুকে প্রথম মানব জাতির আবির্ভাব৷ সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষেরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বানর, শিম্পাঞ্জী, কুকুর, ছাগলের মতই নগ্ণাবস্থাতেই ঘুরে বেড়াতেন৷ পরবর্তীকালে সময়ের বিবর্তনে মানুষের রুচিবোধ ও চিন্তা-ভাবনায় এসেছে পরিবর্তন---দেহকে আবৃত করার সচেতনতা৷ গাছের পাতা, বাকল, মৃত পশুর চামড়ার পথ ধরে বিজ্ঞানের অগ্রগতি বর্তমানে এনেছে বহুবিধ অঙ্গাবরণ৷ পৃথিবীর নানা দেশের ভৌগোলিক পরিবেশ, জলবায়ুর বিভিন্নতা, জীবনযাত্রা, রুচিশীলতা, আচার-ব্যবহার, কৃষ্টি-সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে ব্যবহৃত হয় বিবিধ পোশাক-পরিচ্ছদ৷ বর্তমানে পোশাক শুধুমাত্র অঙ্গাবরণই নয়-রুচিবোধ, শালীনতা ও সৌন্দর্যে

‘প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব’ নামকরণের তাৎপর্য

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার তাঁর নোতুন সামাজিক-অর্থনৈতিক তত্ত্বের নামকরণ করেছেন ‘Progressive Utilization Theory’’ ( এরই সংক্ষিপ্ত রূপ PROUT) প্রাউট৷ এর  বাংলা হল প্রগতিশীল  উপযোগ তত্ত্ব৷ প্রশ্ণ জাগতে পারে প্রাক্তন প্রবক্তা তাঁর  তত্ত্বের  নাম এরূপ রাখলেন কেন?