সর্বত্রই চলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মারপিট, বোমাবাজী, গুলির লড়াই. নিজস্ব সংবাদদাতা ঃ নির্র্বচনের নামে সর্বত্র হিংসাত্মক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে৷ দলীয় স্বার্থে পারস্পরিক ঘৃণা, বিদ্বেষ, খুণ-জখম বাংলার গ্রাম-শহরের শান্তি কেড়ে নিয়েছে৷ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিনই মারপিট-সংঘর্ষের খবর আসছে৷ গত ৯ই এপ্রিল বর্ধমান থেকে প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায়, তৃণমূল নেতা তথা বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার মহম্মদ সেলিমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়৷ যদিও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়৷ কারণ তাঁর ওপর আক্রমণ হচ্ছে বুঝতে পেরে তিনি উল্টো দিকের গলিতে গাড়ী নিয়ে ঢুকে পড়েন৷
অভিযোগ, যাঁরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল তাঁরা বিজেপির কর্মী৷ পুলিশের কাছে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে৷ আবার সিউড়িতে বিজেপি কর্মীদের ওপর মারধোরের অভিযোগ উঠেছে৷ তৃণমূল-বিজেপি’র মধ্যে যুগপৎ জোরকদমে দলবদল ও ঘন ঘন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে৷
আসানসোলে তৃণমূল ও সিপিএম কর্মীদের মধ্যে এখানে ওখানে সংঘর্ষের খবরও আসছে৷ উত্তরবঙ্গের দিনহাটা থেকেও বিজেপি তৃণমূলের লড়াইয়ের খবর আসছে৷ দিনহাটায় বিজেপি’র নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙ্গাচুরের খবর এসেছে৷ এইভাবে সারা রাজ্যেই পার্টিতে পার্টিতে ইতস্ততঃ সংঘর্ষ চলছে৷ ফলে গণতান্ত্রিক আদর্শ অনুসারে স্বাধীনভাবে বিচার বিবেচনা করে জনসাধারণ তাদের পছন্দমত প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে নির্বাচিত করবে, এ চিত্র কোথা দেখা যায় না৷ সর্বত্র পেশীশক্তির আস্ফালন ও মোটা টাকার প্রলোভনই লোকসভা বোটের নিয়মকশক্তি হয়ে উঠেছে৷ সারা দেশের এটাই বাস্তব চিত্র৷ গণতন্ত্র কেবল কথার কথা৷ বাস্তবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা কোনো পার্টিরই নেই৷ অন্ততঃ সমস্ত প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলির ব্যাপারে এই অভিযোগ বর্ণে বর্ণে সত্য৷ তাদের কাছে গণতন্ত্র কেবল ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের হাতিয়ার মাত্র৷
আর প্রচারের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যে তাদের নীতির কথা তুলে ধরবে ও বিপক্ষীয় দলের নীতির ত্রুটি তুলে ধরবে --- তা কোথাও হচ্ছে না ৷ বরং বিভিন্ন পার্টির নেতারা বিপক্ষ পার্টির নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়াছঁুড়িতে ব্যস্ত৷ পরস্পর গালাগালি ও তাতে কদর্য ভাষাও ব্যবহার করা হচ্ছে, থাকে ভদ্রজনোচিত বলা চলে না৷ তারপর তো মিথ্যা ভাষণ, ভুয়া প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি আছে৷ এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনের সঙ্গে প্রকৃত সত্যের সম্পর্ক প্রায় নেই বললেই চলে৷ জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করাটাই এখানে প্রধান কৌশল হয়ে উঠেছে৷ সঙ্গে সঙ্গে জাত-পাত গত বা সাম্প্রদায়িক বিভেদ-বিদ্বেষ বাড়িয়ে দিয়ে জনগণকে নিজেদের কাছে টানতে চাইছে, যা নীতিগতভাবে ঘোরতর অন্যায়৷ এইভাবে দেশবাসীর মধ্যেকার সম্প্রতি ও সংহতি নষ্ট হচ্ছে৷