গত ৯ ও ১০ই মার্চ ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা শহরের স্থানীয় টাউন হলে আনন্দমার্গের ধর্মমহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ এই ধর্মমহাসম্মেলনে উত্তর ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জেলা থেকে আনন্দমার্গীরা সমবেত হয়েছিলেন৷ শ্রদ্ধেয় পুরোধা প্রমুখ আচার্য কিংশুক রঞ্জন সরকার আধ্যাত্মিক প্রবচন দান করে সমবেত ভক্তমণ্ডলীকে আধ্যাত্মিক সাধনায় উদ্বুদ্ধ করেন৷ তিনি বলেন প্রতিটি মানব জীবনের নিত্য কর্ম হ’ল আহার, স্নান, বিশ্রাম ও আধ্যাত্মিক সাধনা৷ আহার, স্নান, বিশ্রাম মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য অবশ্য করণীয়৷ কেননা মানুষের অস্তিত্ব রক্ষা না হলে তার প্রগতির প্রশ্ণ ওঠে না৷ আর মানব জীবনের প্রকৃত প্রগতি হয় আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে৷ আধ্যাত্মিক সাধনার দ্বারা মানুষ ঈশ্বর লাভ করতে পারে৷ পরম ব্রহ্মের সঙ্গে একীভূত হতে পারে৷ অনেকে আধ্যাত্মিক সাধনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয় না৷ কিন্তু আধ্যাত্মিক সাধনা না করলে মনের অধোগতি হবে৷ দেহটা মানুষের কিন্তু মনটা অন্য জীবের হয়ে যাবে৷ মৃত্যুর পর ওই মানুষটি পশুযোনিতে জন্মগ্রহণ করবে৷ একে আনন্দমার্গ দর্শনে বলা হয় ঋণাত্মক প্রতিসঞ্চর৷ প্রকৃতপক্ষে মানব জীবনের লক্ষ্য পরমপুরুষ৷ আধ্যাত্মিক সাধনার দ্বারা মনকে অন্তর্মুখী করে পরমপুরুষের দিকে চালিয়ে দেওয়া যায়৷ এইভাবে সাধক পরমপুরুষের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়৷ এই কারণে আধ্যাত্মিক সাধনা মানুষের নিত্যকর্মের মধ্যে পড়ে৷
১০ই মার্চ গোড্ডা শহরে আনন্দমার্গের এক বর্ণাঢ্য মিছিল বের হয়৷ এইদিন বিকেল ৪ ঘটিকায় মিছিল শুরু হয়৷ তিন ঘণ্টা ধরে মিছিলটি সারা শহর পরিক্রমা করে৷ পথসভায় মানব জীবনের আধ্যাত্মিক সাধনার গুরুত্ব সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন আচার্য বীতমোহানন্দ অবধূত ও আচার্য প্রিয়কৃষ্ণানন্দ অবধূত৷ ধর্ম মহাসম্মেলন স্থলে দু’দিন সন্ধ্যায় আনন্দমার্গের সাংসৃকতিক প্রকোষ্ঠ রাওয়ার পক্ষ থেকে প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে মনোজ্ঞ সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়৷ অনুষ্ঠানে বিশেষ করে রাওয়ার স্থানীয় শিল্পীরা প্রভাত সঙ্গীত ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য প্রদর্শন করে সবাইকে মোহিত করে দেন৷ বোলপুর,-শান্তিনিকেতন থেকে আগত রাওয়া শিল্পীরাও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য গীত পরিবেশন করেন৷