পশ্চিম রাঢ়ের এক বৃহদাংশ নিয়ে গঠিত হয়েছে বর্তমান ঝাড়খণ্ড রাজ্য৷ সাবেক বিহারের ছোটনাগপুর কমিশনের পাঁচটি জেলা (রাঁচী, পালামৌ, হাজারীবাগ, মানভূম ও সিংভূম) তৎসহ তৎকালীন সাঁওতাল পরগণা জেলাকে নিয়ে ইংরেজী সন ২০০০ খ্রীষ্টাব্দে ঝাড়খণ্ড রাজ্যটি গঠিত হয়েছে৷ এই ছয়টি জেলার মধ্যে মানভূম ও সিংভূম জেলার এমন কোনও মানুষ নেই যিনি বাংলা মোটেই বোঝেন না বা বাংলায় কথা বলতে পারেন না অর্থাৎ এই দুটি জেলার প্রত্যেকটি মানুষ বাংলায় কথা বলেন৷ সাঁওতাল পরগণা জেলায় প্রায় ২৫০ বছর আগে মধ্যপ্রদেশের বস্তার জেলা থেকে আগত সাঁওতাল জনগোষ্ঠী বাদে প্রত্যেকেই বাংলায় কথা বলেন৷ এছাড়াও রাঁচী জেলার পূর্বাংশে অবস্থিত সিল্লী, সোনাহাতু, বুন্দু, তামাড়, আরকি ও আঙ্গারা ব্লকের জনগণের মাতৃভাষা পাঁচ পরগনিয়া বাংলা যা মধ্যরাঢ়ী বাংলার একটা সহ উপভাষা sub-dialect) তৎকালীন হাজারীবাগ জেলার রামগড়, গোলা, পেটরবর, কসমার, গমিয়া, বেরমৌ ও জড়িডিহ ব্লকের জনমানসের মাতৃভাষা পাতকুর্মী বাংলা৷ এও মধ্য রাঢ়ী বাংলার একটা সহ উপভাষা৷ অতএব পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে বিচার-বিশ্লেষণ করলে স্পষ্টরূপে দেখা যাবে যে, বর্তমান ২৪টি জেলার মধ্যে প্রায় ১৩টি জেলার জনসমুদয়ের মাতৃভাষা বাংলা৷ অতএব নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে যে, ঝাড়খণ্ড রাজ্যে বাংলাভাষী জনগোষ্ঠীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ৷ সুতরাং ঝাড়খণ্ড রাজ্যে প্রথম রাজভাষার মর্যাদা বাঙলারই প্রাপ্য৷ কিন্তু সুযোগ সন্ধানী হিন্দী সাম্রাজ্যবাদী নেতৃবর্গ নিজেদের সুযোগ-সুবিধা কায়েম রেখে ঝাড়খণ্ডের বনজ, খনিজ ও কৃষিজ সম্পদ লুণ্ঠন করে তাদের নিজস্ব এলাকায় পাচার করার তাগিদে ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যের শাসন ক্ষমতা কুক্ষিগত করার নিমিত্তে বাঙালী জনসমুদয়কে কোনঠাসা করে রাখার কাজে রত৷
‘আমরা বাঙালী’র এক প্রতিনিধি বলেন---একদা বিহার সরকারও এখানকার অধিবাসীদের বঞ্চিত করেছে৷ আর ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকারের কাছেও স্থানীয় বাসিন্দারা একইভাবে বঞ্চিত হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে ‘আমরা বাঙালী’ একমাত্র সংঘটন যারা স্থানীয় মানুষের ১০০ শতাংশ স্বার্থরক্ষা করতে পারবে৷ কারণ নব্যমানবতাবাদের ভিত্তিতে এক সুন্তুলিত সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক সংরচনা তৈরীর পথ ‘প্রাউট’ দর্শনের অনুগামী ‘আমরা বাঙালী’৷ অন্য কোন রাজনৈতিক সংঘটন বাংলাভাষীদের কথা চিন্তা করে না৷ ওরা নির্বাচনে বাঙালীদের ভোট পাওয়ার জন্যে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করে না৷ তাই আজও ঝাড়খণ্ডের বাঙালীরা স্কুল-কলেজে বাংলা পড়ার অধিকারটুকুও পেল না৷ এই অবস্থায় ঝাড়খণ্ড লোকসভায় স্থানীয় মানুষের হয়ে বলার জন্য কোনও প্রতিনিধি নেই৷ তাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটন নির্বাচনে সামিল হয়েছে৷ ঝাড়খণ্ডবাসীদের কাছে আমাদের আবেদন---আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আমরা বাঙালী প্রার্থীদের বিপুল ভাবে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন৷