দিল্লীর গদীতে বসেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় নরেন্দ্রমোদী হতদরিদ্র ভারতের জনগণকে যে সব আশ্বাস-এর কথা শুণিয়ে ছিলেন তার একটিও কি অদ্যাবধি পূরণ করতে পেরেছেন? যাতে তিনি হাত দিয়েছেন সেটাই একেবারে ধবংস হয়ে গেছে৷ সাধারণ নাগরিকগণ আশা করেন যাতে তাঁরা দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পান৷ মাথা গোঁজার ঘর পান, রুজিরোজগারের সামান্যতম সুযোগ পান, রোগে ওষুধ পান, আর সকলেই কিছুটা লেখা পড়া শিখতে পারেন৷ দীর্ঘ ৭৫ বছরে কোনটার সুরাহা হয়েছে৷ গদীতে বসেই শ্লোগান তোলা হলো এই বলে যে সরকার আত্মনির্ভর ভারত গড়বে৷ একাধিকবার দিল্লির তক্তে বসে কতটা মানুষকে সেবা দিয়েছেন মোদী সরকার? সবই ফাঁকা আওয়াজ৷
এই সরকার তো বিমুদ্রাকরণ করতে গিয়ে সেই গরিবদের কষ্টে অর্জিত সঞ্চয়টুকুকে তাদের হাতছাড়া করে দিয়েছে! তারা অনেকেই পথে বসেছে৷ বিশাল ভারতে অদ্যাবধি কটা লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে? করোনায় আক্রান্ত হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ অকালে প্রাণ হারিয়েছেন৷ ভিনরাজ্যে কর্মরত শ্রমিকগণের জীবনে যে মর্মান্তিক ঘটনাকে ঘটানো হয়েছে৷ সে কি সুষ্ঠুশাসন ব্যবস্থার লক্ষণ!
দেশে বহু কলকারখানার বন্ধ, মন্দায় দেশ ডুবছে৷ অনাহারে মানুষ মারা যাচ্ছে! গরিবদের যেন ইচ্ছাকৃতভাবেই মেরে ফেলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে! রান্নার গ্যাসের দাম কতটা বেড়েছে সেটা কি মোদির অজানা? ডিজেল, পেট্রোল, কেরোসিনের দাম মাসে মাসে বাড়ছে! দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সীমাপরিসীমা নেই৷ জি.এস.টি বলে নোতুন কর আইনটা গরিব জীবনগুলিকে রক্তশূন্য কি করে ছাড়ছে না? এদিকে সরকার এর আত্মনির্ভরশীল নোতুন ভারতটা গড়বে কি করে? দেশের ১৩৫ কোটির অধিক মানুষতো অধিকাংশই দারিদ্র্য সীমার নীচে রয়ে গেছেন! তার উপর গুরুত্বপূর্ণ সরকারী সংস্থাগুলিকে এই বর্তমান সরকার বেচে দিয়ে বেচারামের ভূমিকা অবতীর্ণ হয়ে বসেছে!
অত্যন্ত লজ্জার কথা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সরকার এমন সব কাণ্ড ঘটাচ্ছেন যাতে সংখ্যা লঘুরা ভারত যুক্তরাষ্ট্রেরই চিরশত্রুতে পরিণত হচ্ছে৷ পৃথিবীর প্রায় ১৫টি মুসলীম রাষ্ট্র ভারতের বিরুদ্ধে চলে গেছে৷
বর্তমানে ১২১টি রাষ্ট্রের ক্ষুধাসূচক ভারতের স্থান হয়েছে ১০৭এ৷ তাই এটাতে তো বোঝায় যে ভারত আরো অন্ধকারের দিকে চলেছে৷ ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির স্থান ভারতের উপরে আছে৷ এই দেশগুলির স্থান নাকি ১০০ সূচকের মধ্যে৷ ভারতে নাকি ২২.৪৩ কোটি মানুষ বর্তমানে অপুষ্টির শিকার৷ এদিন ভারত এটা মানতে রাজি নয়৷
তাই ভারতের বিরোধী দলগুলি বলছে যে কেন্দ্রের মোদি সরকার গদীতে বসে অপশাসন চালাচ্ছেন৷ সেটা বুঝেই তাঁরা অর্থাৎ সরকার জনগণকে স্বনির্ভর ভারত গড়ার মিথ্যা স্তোক বাক্য দিয়ে চলেছেন সেই স্বনির্ভর নোতুন ভারত গড়ার কারণ আগামী ২০২৪এতে লোকসভা বোটের স্বার্থে৷ ব্যর্থতা ঢাকতে সরকার এর দাবী যে ক্ষুধাসূচক রিপোর্টটা অবাস্তব৷ যাইহোক জনগণ মোটেই বর্তমান সরকারের শাসনে কোনই শান্তিতে নেই৷ এই কথাটি যেন শাসক দলের স্মরণে থাকে যে শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না বা যাবে না৷ ২০২৪-এর আগেই কেন্দ্রের সরকার নাকি আত্মনির্ভরশীল নব ভারত গড়ে তুলবেন! যে কোন আলোচনার মধ্যে থাকা উচিত যুক্তি ও বিজ্ঞান সম্মত বিশ্লেষণ ও ঐক্যের পথের সন্ধান কারণ একসঙ্গে মিলেমিশে থাকার ভাবনাটাই হলো বুদ্ধিমানের কাজ কথায় আছে একা না ভেকা৷ তাই সমাজকে রক্ষা করেই চলতে হয় ঐক্যের পথে৷ উপনিষদে তাই বলা হয়েছে ‘‘সংগচ্ছধবং’’৷ কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় মুখে বলছি আমরা এক কিন্তু আচরণে দেখা যায় সেই দুই ভাবেরই অর্থাৎ বিভিন্নতার মানসিকতা৷ এটাই হলো ধবংসের বা পতনের কারণ৷ আর এই মানসিকতা রয়েছে প্রকৃতির মধ্যে প্রবল৷ সকল গাছকে এককথায় আমরা বলি গাছ কিন্তু বাস্তবে তো আম, জাম, কাঁঠাল নামে গাছগুলির পরিচয়৷ গাছহলো সমষ্টিগত নাম৷ আর পৃথিবীতে তাই সমাজগুলিকে অবশ্যই রক্ষা করতে হয়৷ কিন্তু এক বিভেদকামী মানসিকতার কারণে সেটাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ আর অহেতুক সংঘর্ষ বাড়ছে৷ এটা আজ বেশী করে দেখা যাচ্ছে দলছুট রাজনৈতিক দলগুলির খেয়োখেয়ির মধ্যে৷ তাই ভারতের এতো দুর্দশা৷ চাই কোন সমাজই বেশী দিন টিকছে না৷ শুধু হুংকার ও অহমিকা বোধের আস্ফালন৷ আজ সব রাজনৈতিক দলগুলিই প্রায় এগোচ্ছে ধবংসের পথে এতে সুবিধা হচ্ছে তাদের যারা চতুর ও ছলাকলায় পোক্ত৷ স্বেচ্ছাচারিতাই চাই গণতন্ত্রকে ধবংস করছে৷ দলের স্বার্থর চেয়ে বড়ো দরকার সামাজিক ঐক্য ও সংহতি৷ তাই গণতন্ত্রে মান্যতা দান করার উদারতা থাকাটা জরুরী৷ এটারই দারুণ অভাব৷ তাই বাঁচতে হলে বিরোধী ঐক্য জরুরী৷ তাই বলা হয় দল এর মধ্যে রয়ে গেছে সেই ভয়ঙ্কর বিচ্ছেদেরই ভাবনা৷ যেটা শেষে ধবংস ডেকে আনে৷
- Log in to post comments