দেশের আর্থিক পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক৷ চরম আর্থিক মন্দার কবলে পড়ে গভীর সংকটে অর্থনীতি৷ কর্মহীনতা, ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস, লগ্ণীর হার তলানিতে, অর্থনীতির সর্বক্ষেত্রেই অবস্থা সঙ্কটজনক৷
অর্থনীতির এই দূরবস্থার মধ্যে আরও বিপজ্জনক বার্তা দিল গত ১৩ই জানুয়ারী প্রকাশিত একটি সরকারী আর্থিক প্রতিবেদন৷ আর পক্ষকাল পরেই সংসদে পেশ হবে সাধারণ বাজেট৷ তার আগে এই সরকারী প্রতিবেদন অর্থনীতিতে আরও বড় দুর্যোগের ইঙ্গিত দিচ্ছে৷ ২০১৪ সালে ‘অচ্ছে দিন’-এর আবাজ দিয়ে মোদী ক্ষমতায় বসার পরই মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.৫ শতাংশ হয়েছিল৷ কিন্তু মাত্র দু’মাসে কোন সরকারের সাফল্য-অসাফল্য বিচার করা সম্ভব নয়৷ তাই সে যাত্রায় মুদ্রাস্ফীতির দায় মোদী সরকারের ঘাড়ে চাপেনি৷ কিন্তু পাঁচ বছর পার করে দ্বিতীয় মোদী সরকার আরও ছ’মাস অতিক্রম করেছে৷ এবার কিন্তু আর্থিক দূরবস্থার দায় এড়ানো কঠিন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে৷ এবারের আর্থিক দূরবস্থার দায় মোদী সরকারকেই নিতে হবে৷
১৩ই জানুয়ারীর প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.৫ শতাংশে পৌঁছেছে৷ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও ক্রমবর্ধমান৷ খাদ্য পণ্যের মুদ্রাস্ফীতি ১৪ শতাংশে পৌঁছেছে৷ সব্জির মুদ্রাস্ফীতি ৬০ শতাংশ অতিক্রম করেছে৷ নিত্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার ব্যর্থ৷ এই অবস্থায় সরকার প্রকাশিত প্রতিবেদনে সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে৷ রাজ্যস্তরে মুদ্রাস্ফীতির হারে উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটকের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান ভাল৷ ওই দুটি রাজ্যই বিজেপি শাসিত৷
আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি শিল্পোদ্যোগীদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে৷ তাদের আশঙ্কা এভাবে মূল্যবৃদ্ধি হতে থাকলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষে ঋণের সুদ কমানো সম্ভব হবে না৷ সুদ না কমলে নতুন লগ্ণীর সম্ভাবনাও কমবে৷ শিল্পমহল বর্তমান সঙ্কটজনক অবস্থার আশু সমাধানের আশা করছে না৷
পশ্চিম বাঙলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন---দেশের মানুষের কর্মসংস্থান নেই, আত্মহত্যা করছে কৃষক, মুদ্রাস্ফীতি শিখরে আর প্রধানমন্ত্রী হিন্দুস্তান-পাকিস্তান, হিন্দু-মুসলমান করে বেড়াচ্ছেন৷
প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের কেন্দ্রীয় সাংঘটনিক সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত বলেন---পুঁজিবাদের পতন ঘনিয়ে আসছে৷ সরকার ও শিল্পমহল যদি দেশ ও দেশবাসীর মঙ্গল চান তবে মুনাফা লোটার লোভ ত্যাগ করে প্রাউট তত্ত্বের চর্চা করুন৷ আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সব সমস্যার বাস্তবসম্মত ও যুক্তি-বিজ্ঞান নির্ভর সমাধানের পথ খুঁজে পাবেন৷ আমরা বাঙালী-র কেন্দ্রীয় সচিব বকুল রায় বলেন---পুঁজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রীত অর্থনীতির কুফল বিপদসীমা অতিক্রম করেছে৷ অবিলম্বে জনগোষ্ঠীগত ও ভৌগোলিক অবস্থান, জল হাওয়া প্রভৃতি বিচার-বিশ্লেষণ করে সামাজিক-অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরী করে প্রতিটি অঞ্চলকে অর্থনীতিতে স্বয়ং-সম্পূর্ণ করে গড়ে তুলতে হবে৷ তবেই সমস্যার সমাধান হবে৷ তিনি বলেন---প্রাউট তত্ত্বের প্রয়োগেই এটা সম্ভব৷