যে ধরণের ভাবা উচিত নয় কেউ সেই ধরণের ভেবে থাকলে তাদের জন্যে ঠাট্টা করে ‘স’ শব্দ ব্যহৃত হয়ে থাকে৷ এই ‘স’ শব্দ প্রসঙ্গে আমার আবার আক্ল্মন্দ সিং - এর কথা মনে পড়ে গেল৷ একবার পরপর কয়েকদিন ধরেই আক্ল্মন্দের দেখাসাক্ষাৎ পাচ্ছিলুম না৷ তারপর একদিন হঠাৎ মীরজাপুর বাজারে মাদুর কিনতে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল৷ তাকে বললুম, ‘হ্যাঁরে আক্ল্মন্দ, এতদিন তোর দেখা পাচ্ছিলুম না কেন!’ সে ললে ‘দারুণ ব্যস্ত ছিলুম’৷
আমি বললুম, ‘ব্যস্ত! ব্যস্ত তুই তো কখনও থাকিস না’৷ সে বললে---‘ব্যস্ত মানে, আমার গুরুজী এসেছিলেন৷ তাঁকে নিয়ে সমুদ্রের তীরে রোজ বেড়াতে যেতুম কি না’৷
আমি বললুম, ‘তাহলে ক’টা দিন তোর খু আনন্দেই কেটেছে, সৎসঙ্গ পেয়েছিলি৷’
সে বললে, ‘সৎসঙ্গ লে সৎসঙ্গ! গুরুজী আমার প্রকাণ্ড ড় রকমের মহাপুরুষ৷ এমন সৎসঙ্গ মানুষের জীবনে খুব কমই ঘটে থাকে’৷ আমি বললুম, ‘তিনি মুখ্যতঃ ধর্ম সম্বন্ধেই কথা বলেছিলেন, না সৎ নীতি সম্বন্ধে বলেছিলেন’?
সে বললে, ‘ধর্ম সম্বন্ধে তেমন কিছু বলেন নি৷’
আমি বললুম, তবে কি তিনি নীতি সম্বন্ধে বলেছিলেন?’
সে বললে, ‘তাও নয়’৷
আমি বললুম, ‘তর্ে কি সমাজ -সংস্কার সম্বন্ধে বলেছিলেন?
সে বললে ‘তাও-ও নয়’৷
আমি বললুম, ‘তর্ে কি তিনি বিভিন্ন ধরণের পরাবিদ্যা সম্বন্ধে বলেছিলেন?’
সে বললে, ‘তাও-ও-ও নয়’৷
আমি বললুম,‘তবে কি তিনি অপরাবিদ্যা সম্বন্ধে বলেছিলেন?’
সে বললে, ‘না তাও-ও নয়’৷
আমি বললুম,‘তবে কি তিনি বিজ্ঞান সম্বন্ধে বলেছিলেন?
সে বললে, ‘না তো, তাও-ও নয়’৷
আমি বললুম, ‘তবে কি তিনি দর্শন সম্বন্ধেই বলেছিলেন?’
সে বললে, ‘না তো, তাও-ও নয়’৷
আমি বললুম, ‘তবে কি তিনি সৎপথে চলবার জন্যে কাঝকা শাসন করেছিলেন?’
সে বললে, ‘তাও-ও নয়’৷
আমি বললুম, ‘তবে কী করে ঝলি তিনি মহাপুরুষ?’
সে বললে, ‘একবার নয়, একশ’ বার ঝেছি তিনি মহাপুরুষ’৷
আমি বললুম , মহাপুরুষ তো নিশ্চয়৷ তবে জানতে ইচ্ছে হয় তুই কী করে বলি তিনি মহাপুরুষ’৷
সে বললে, ‘‘আমি তাঁর সেবার জন্যে দশ সের গরমাগরম জিলিপি একটা পরাতে সাজিয়ে দিয়েছিলুম৷ দশ সেরই তিনি কয়েক মিনিটের মধ্যেই সবাড় করে দিয়েছিলেন৷ মহাপুরুষ না হ’লে এমনটি কেউ পারে? তুমি কি পারবে? আমি কি পারবো?
তাহলে ঝলে, এই ধরণের ব্যাপারকে ‘স’ বলা হয়৷