৯৭৩ সালের এই ১২ ফেব্রুয়ারী তারিখে পাপশক্তির ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী আধ্যাত্মিক শক্তিবলে মারাত্মক বিষকে আত্মস্থ করেছিলেন৷ পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে সমুদ্রোত্থিত মারাত্মক বিষকে শিব কন্ঠে ধারণ করে ওই মারাত্মক বিষের বিষক্রিয়াকে ব্যর্থ করে’ ‘নীলকন্ঠ’ রূপে পরিচিত হয়েছিলেন, তেমনি শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীকেও হত্যা করার জন্যে তাঁর প্রতি প্রয়োগ করা বিষের মারাত্মক বিষক্রিয়াকে আধ্যাত্মিক শক্তি বলে ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন৷ প্রমাণ করেছিলেন অত্যুৎকৃষ্ট আদর্শের অনির্বাণ দীপশিখা আনন্দমার্গকে ধবংস করা যাবে না৷
গত ১২ই ফেব্রুয়ারী কলকাতায় আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় আশ্রম সহ বিশ্বের সর্বত্র মহাসমারোহে ‘নীলকন্ঠ দিবস’ পালিত হয়৷
১৯৭৩ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী ওষুধের নাম করে জেলের ডাক্তারের মাধ্যমে তাঁর ওপর বিষ প্রয়োগ করা হয়৷ এই বিষের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় তাঁর চোখ মুখ ফুলে যায়, চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়তে থাকে৷ পরে শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী তাঁর ঐশী শক্তির সাহায্যে এই বিষের ক্রিয়াকে নষ্ট করে দেন৷ তিনি তাঁর ওপর ওষুধের নাম করে বিষ প্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করেন৷ সরকার এই দাবী মানে নি৷ পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন আইন মন্ত্রী অমর প্রসাদ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এক বেসরকারী তদন্ত কমিশন গঠিত হয়৷ এই কমিশন যথারীতি সাক্ষীসাবুদ নেয় ও শেষে রায় দেয়, যথার্থই শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর ওপর বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল৷ এরপর আন্তর্জাতিক পর্যায় মার্গগুরুর ওপর বিষ প্রয়োগের তদন্ত হয়৷ রাণী এলিজাবেথের উপদেষ্টা এইচ.জি.ওয়েলস নিরপেক্ষ তদন্ত করে রায় দেন শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর ওপর বাঁকীপুর সেন্ট্রাল জেলে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল৷ শ্রীশ্রী আনন্দমূত্তিজী এই বিষপ্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবীতে ১৯৭৩ সালের ১লাএপ্রিল থেকে ৫ বছর ৪মাস ১দিন অনশন করেন৷ অবশেষে উচ্চআদালতের রায় তিনি সম্পূর্ণ নির্র্দেষ প্রমাণিত হয়ে ১৯৭৮ সালের ২রা আগষ্ট মুক্তি লাভ করেন৷
শিলিগুড়ি ঃ গত ১২ই ফেব্রুয়ারী শিলিগুড়ি শহরে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ শহর পরিক্রমা করে ও বিভিন্নস্থানে নীলকন্ঠ দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন বক্তা৷
আগরতলা ঃ আগরতলা শহরে এইদিন একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে মোটরস্ট্যাণ্ডে পৌঁছায়৷ সেখানে এক সভায় নীলকন্ঠ দিবসের তাৎপর্য ও সেই দিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বক্তব্য রাখেন আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত ও আচার্য বিশকানন্দ অবধূত৷