শিলচর ঃ ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটনের অসম রাজ্য কমিটির সচিব সাধন পুরকায়স্ত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন---সংবিধানের নামে শপথ নিয়ে যারা সংবিধান অবমাননা করে, হুমকির সুরে সংবাদ মাধ্যমের কাছে বক্তব্য রাখে, তাদেরকে সংবিধান অবমাননার দায়ে ব্যবস্থা নেওয়া সরকারের দায়িত্বে পড়ে৷
মিজোরামের সংসদ ভানলাল ভেনা ‘‘মিজোরামের মাটিতে এলে সবাইকে মেরে ফেলব ও অসম পুলিশের জোয়ানরা ভাগ্যবান যে তারা প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন’’ এই বলে যে মন্তব্য করেছেন,’’ আমরা বাঙালী দল তার এই উদ্ধত বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছে৷ আমরা তাহার সংসদ পদ খারিজ করে তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ এনে গ্রেফতার করার দাবি করছি৷
২৬শে জুলাই অসমের কাছাড়-মিজোরামের সীমান্তে যেইভাবে অসম পুলিশের ৬ জোয়ান আর ১ সাধারণ নাগরিক কে মিজোরামের পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে৷ এই ঘটনা মিজোরাম সরকার ও ঐ সাংসদের প্ররোচনা ও উস্কানিতে সংঘটিত হয়েছে৷
১৯৯৪ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে দিল্লিতে সীমা বিবাদ নিয়ে সভা হয়েছিল৷ অসম মিজোরাম মুখ্যমন্ত্রী সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন৷ সেই সভায় যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাতে অসম মিজোরামের সীমানার স্থিতাবস্থা বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে৷ সরজমিনে জরিপ করে সীমানা নির্র্ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি, উপরন্তু দেখা যায় প্রতি বছর মিজোরা অসমের জমি দখল করতে থাকে৷ তা বর্তমানে প্রায় ৬ কিলোমিটার কাছাড় সীমান্তে, প্রায় সাড়ে ৩ কিমি করিমগঞ্জ সীমান্তে ও সাড়ে পাঁচ কিমি হাইলাকান্দি সীমান্তে দখল করে বসে আছে৷ বরাকের সঙ্গে মিজোরামের যত পাহাড়ী অঞ্চল আছে, তাহা তো দখল করবে, উপরন্তু কাছাড় জেলার দুয়ারবন্দ, ভাগাবাজার, কুকিছড়া ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত সরকারি ভাবে দাবী করা হয়েছে৷ লুসাইপাহাড় জেলা ব্রিটিশের তৈরী৷ ১৮৮৯ সালে লুসাই পাহাড় ব্রিটিশ ভারতে অন্তরভুক্ত হয়৷ ১৮৭৪ সালে অসম প্রদেশ তৈরি হয়৷ তাই লুসাই পাহাড় জেলা অসমের অন্তভুক্ত একটি জেলা৷ স্বাধীন মিজোরামের দাবীতে যারা দীর্ঘদিন ভারতবর্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, দেশের অখণ্ডতা চ্যালেঞ্জ করছে, সেই মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট শান্তি আলোচনার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে মিজোরামের শাসন ভার সামলাচ্ছে৷ তবু আমরা দেখি চিনকে স্বাগত জানিয়ে মিজোরামের কোন কোন জায়গায় পোস্টার হাতে দেশদ্রোহিরা দাঁড়িয়ে স্বাধীন মিজোরামের দাবী জানাচ্ছে৷ সব কিছু জেনেও কেন্দ্রীয় সরকার নির্বিকার৷ এদিকে আবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলছেন--- অসমের কোনো জমি মিজোরা দখল করেনি, অসমের এক ইঞ্চি জমিও মিজোরামকে দেওয়া হবে না৷ এই সব পরস্পর বিরোধী কথায় সাধারণ নাগরিক বিভ্রান্ত৷ এই ব্যাপারে অসম সরকারের সঠিক পদক্ষেপ আমাদের জানা দরকার৷ আমরা চাই বরাকের কত পরিমান জমি মিজোরাম ১৯৯৪ সালের পর থেকে এখনো পর্যন্ত দখল করেছে, তা সরকারীভাবে প্রকাশ করা হউক৷