নেতা অভিনেতা!

 অভিনেতাদের বাস্তব জীবনের দিকটা আমরা কেউ খোঁজ খবরই রাখি না৷ নেতাদের জীবনের শেষদিনের খবর সাধারণ মানুষের নখদর্পণে থাকে৷ তাদের পাপ পূর্ণ ভালো মন্দ শেষ বয়সে জনসাধারণ বিচার করেন৷ নেতা ও অভিনেতাদের বাস্তব জীবনে কিছু মিল আছে যেমন---এঁরা দুই জনই টাকা ছাড়া কিছু বোঝে না৷ জীবনটাকে উপভোগ করে ব্যষ্টিগতভাবে৷ তাই এদের স্থায়ীভাবে কোন আদর্শ থাকে না৷ বর্তমান নেতাদের জাতিসত্তা, দল বা দেশের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা থাকে না৷ স্বার্থে ঘা লাগলে মান সন্মানের নামে বা অন্য কোনো অজুহাতে এক মুহূর্তে দল বদল করতে কুন্ঠাবোধ করে না৷ লেনদেনের বা ভাগ বাটোয়ারায় কম হলে বা অন্য দলের বড় টাকার অফার থাকলে বলতে থাকবে আমাকে সন্মানের সঙ্গে কাজে করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ আমি দলের জন্য এত স্বার্থত্যাগ করলাম, দলের বড় নেতারা তার দাম দিল না, তাই অন্যদলে যোগ দিতে বাধ্য হচ্ছি৷ আজকের নেতারা রাজনৈতিক নেতা, না অভিনেতা বোঝা খুব মুস্কিল৷ অন্যদিকে অভিনেতারা টাকাটা ভালো বোঝে৷ ভালো একটি স্টেজ চাই--- যেখানে বড় বড় ডায়লগ বলবে অথচ দেখুন বাস্তব জীবনে তাঁর কোন প্রতিফলন ঘটে না৷ যেমন ধরুন বড়দাদা বা মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী৷ তারই একটি ডায়লগ ছিল নার্র্সরিতে শুরু, হাফ প্যান্টে গুরু আর ফুল প্যান্টে মহাগুরু, অর্থাৎ ফুটপাত থেকে উঠে এসে বাঙালীর নয়নের মণি হয়েছিলেন তাঁর অধ্যাবসায়ের দ্বারা৷ আমরা এটাও দেখেছি বাঙালীর প্রীতি তাঁর জীবনের ব্রত৷ তাই প্রথম জীবনের সংগ্রাম ছিল পুঁজিবাদীদের বিরুদ্ধে৷ আর যখন  মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী হলেন তখন অর্থের বৈভব আকাশ ছোঁয়া লাগাম ছাড়া তার মানসিক চাহিদা৷ সঙ্গে সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধ নিম্নগামী হওয়ায় আমরা এটাও দেখতে শুরু করলাম ব্যষ্টিগত জীবনের নানা রকমের আর্থিক কেলেঙ্কারী যাহা আবার তাঁর নিজের হতে তৈরী করা এক কলঙ্কময় অধ্যায়৷ এর কারণগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে কোন মানুষের লক্ষ্য যদি আদর্শের পথে  অবিচল না হয় তবে তাদেরকে অর্থ ও নানা রকমের জড়বস্তু চাহিদার  নেশায় মোহগ্রস্ত হয়ে মহাগুরু থেকে  মহাপাতকের পথেই চলতে হয়৷

আমরা সাধারণ বাঙালী যুব সম্প্রদায় যারা একসময় তাকে ‘আমি সুভাষ বলছি’ ছাড়াও আরো কয়েকটি সিনেমাটির মাধ্যমে দেখেছি বারবার হিন্দি ভাষীদের কাছে আঘাত পেয়েছেন সঙ্গে সঙ্গে তার উপযুক্ত উত্তর দিয়েছেন ও প্রতিকারও করে নতুন প্রজন্মের বাঙালীদের উদ্বুদ্ধ করেছেন৷ অথচ দেখুন বাস্তব জীবনে সেই হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে মাথা নত করে তাদের পদ লেহন করতে (সিং ভেঙে বাছুরের দল) বাঙালী বিদ্বেষী হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীর দল বিজেপিতে ভিড়লেন৷ তার জন্যে মান সন্মানের দরকার পড়ে না৷ অবশ্য বড়দাদার বর্তমানে হোটেল ব্যবসায় ইডি বা সিবিআই এর জ্বালায় টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে৷ গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো তার এক ছেলে নারী ঘটিত কেলেঙ্কারীতে জড়িত বলে অভিযুক্ত যা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে৷ সেই অভিযোগ গুলোকে ধামাচাপা দেওয়াটা বড় জরুরি৷ তাই বড়ো গাছের নীচে না থাকলে বেঁচে থাকাটা দুষ্কর হয়ে পড়বে৷ বড় দলে ভিড়বার পর বললেন তিনি জলঢোড়া নয়, খাঁটি কাল নাগ৷ যে ব্যষ্টি বাঙালী বিদ্বেষী দলের সঙ্গে ভিড়লেন তাকে তো বিষাক্ত কালনাগিনী হতেই হবে, তবেই না প্রমান হবে তিনি কত বড় রাম ভক্ত বা বাঙালীর  কলঙ্ক৷ সারাটা জীবন বাঙালী করে শেষ পর্যন্ত তিন কাল পেরিয়ে গিয়ে  এক কালে ধন সম্পদের এমন কি প্রয়োজন পড়ল মান সম্মান ভুলুন্ঠিত করে পাপিষ্ঠ রাজশক্তির কাছে মাথা বিক্রয় করতে হল! অচিরেই তিনি  তাঁরা প্রাকৃতিক নিয়মে এই অপকর্মের জবাব পাবেন৷