কৃষি অর্থনীতির ভিত্তি৷ কৃষি গোটা সমাজেরও ভিত্তি৷ একটা বহুতল বাড়ীর ভিত্তি যদি দুর্বল হয়, তাহলে তা ভেঙ্গে পড়ে৷ তেমনি কৃষি ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ হলে সমগ্র সমাজের বির্পযয় দেখা দেবে৷ বর্তমানে ঠিক হচ্ছেও তাই৷ এ অবস্থায় উচিত কৃষিকে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো৷ বলা হয়, That which is wrong in principle, must be wrong in detail.
মূলনীতিতে ত্রুটি থাকলে, সমস্ত ব্যবস্থাটাই ত্রুটিপূর্ণ হয়ে যাবে ও পরিশেষে তা ধবংস ডেকে আনবে৷ তাই মূলনীতির দিকে আগে দৃষ্টি দেওয়া উচিত৷
বর্তমানে অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রধানতঃ দু’টো নীতি চলছে৷ একটা ধনতন্ত্র, আর একটা মার্কসবাদ বা কম্যুনিজ্ম৷ ধনতন্ত্রের ভিত্তি হ’ল ব্যষ্টি স্বাতন্ত্র্যবাদ (individualism) আর, কম্যুনিজ্মের ভিত্তি হ’ল সমষ্টি তন্ত্রবাদ (Collectivism), ধনতন্ত্র ব্যষ্টি স্বাধীনতার ওপর অত্যধিক গুরুত্ব দেয় ও সমষ্টি স্বার্থকে উপেক্ষা করে৷ এর ফলে ধনতন্ত্রে কিছু মানুষ প্রয়োজনাতিরিক্ত সম্পদের অধিকারী হয়ে পুঁজিপতিতে পরিণত হয়৷ আর সমাজের অধিকাংশ মানুষ নিঃস্ব রিক্ত হয়ে যায়৷
অপরপক্ষে মার্ক্সবাদে সমষ্টি স্বার্থের নামে ব্যষ্টি স্বাধীনতাকে বলি দেওয়া হয়৷ বলা ndividual is abstraction and class is reality. কম্যুনিজ্ম ব্যবস্থায় মানুষের ব্যষ্টিগত চিন্তার স্বাধীনতা নেই, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই৷ বৌদ্ধিক ও আত্মিক ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে ডানা মেলবার অধিকার নেই৷
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ এ সম্পর্কে তাঁর ‘রাশিয়ার চিঠি’ পুস্তকে মন্তব্য করেছেন, ‘সমষ্টির প্রতি ব্যষ্টির উপেক্ষা ক্রমশঃ বেড়ে উঠেছিল বলেই সমষ্টির দোহাই দিয়ে ব্যষ্টিকে বলি দেওয়ার আত্মঘাতী প্রস্তাব উঠেছে৷ তীরে অগ্ণিগিরি উৎপাত বাঁধিয়েছে বলে সমুদ্রকেই একমাত্র বন্ধু বলে এ ঘোষণা৷ কিন্তু তীরহীন সমুদ্রের যখন পরিচয় পাওয়া যাবে, তখন কূলের জন্যে প্রাণ হাঁকুপাঁকু করবে৷ সেই ব্যষ্টি বর্জিত সমষ্টির অবাস্তবতা কখনই মানুষ চিরদিন সইবে না৷ ব্যষ্টিকে বৈতরণী পার করে দিলে সমাজ রক্ষা করবে কে?’
ভারতের কম্যুনিষ্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নাথ রায়ও পরবর্তীকালে কম্যুনিজ্মের মোহ থেকে মুক্ত হয়ে তাঁর Radical Humanism তত্ত্বে কমিউনিজ্ম্ তত্ত্বের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘ব্যষ্টি স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে সমাজের উন্নতি সাধন একটা অবাস্তব কথা৷’
এখন, এ ব্যাপারে প্রাউটের বক্তব্য কী? প্রাউটের নীতি হ’ল, Happy blending between individual liberty and collective interest. প্রাউট ব্যষ্টিস্বাধীনতা ও সমষ্টি স্বার্থের মধ্যে সুষম সমন্বয় সাধন করেছে৷ প্রাউটের অর্থনীতির ক্ষেত্রে তা কৃষিনীতি হোক বা শিল্পনীতি হোক একটা অন্যতম প্রধান মৌলনীতি৷
প্রাউটের অর্থনীতির আর একটি মূলনীতি হ’ Maximum Utilisation of all mundane, supra-mundane and spiritual potentialities. জগতের সমস্ত সম্পদের সর্বাধিক উপযোগ প্রাউট চায়৷
প্রকৃতির দেওয়া মাটি, জল, আলো ও বাতাসের কীভাবে সর্বাধিক উপযোগ গ্রহণ করে মানুষের কল্যাণ করতে হবে, সেটাই প্রাউটের কৃষিনীতিতে বলা হয়েছে৷ প্রাউটের অর্থনীতির আর একটি স্তম্ভ হ’ল বিশ্বের সমস্ত সম্পদের •rational distribution— যুক্তিসঙ্গত বন্টন৷ কারুর বাড়ীতে যথেচ্ছ বিলাসের স্রোত বইবে, সম্পদের অপচয়, অপব্যবহার হতে থাকবে, অন্যদিকে মানুষ না খেয়ে শুকিয়ে মরবে, তা চলবে না৷
আবার একেবারে সমবন্টনও অবাস্তব৷ তাতে মানুষের গুণের ও দক্ষতার মর্যাদা দেওয়া হয় না৷ তা অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিপর্যয় ডেকে আনে৷ তাই প্রাউট–সম্পদের যুক্তিসঙ্গত বন্টন চায়৷
এই মূলনীতিগুলির ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে প্রাউটের কৃষিনীতি তথা সমগ্র অর্থনীতি৷
এবার আমরা আলোচনা করব প্রাউটের কৃষিনীতির প্রয়োগভৌমিক দিক৷ পূর্বেই বলা হয়েছে, প্রাউটের অন্যতম প্রধান মূলনীতি হ’ল, প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বাধিক উপযোগ গ্রহণ করতে হবে৷ আর তা করতে গেলে প্রাউটের নীতি অনুসারে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে৷ কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখছি, এই রকেটের যুগে মান্ধাতা আমলের চাষের পদ্ধতিই এখন চলছে৷ বিজ্ঞানকে যথাযথ ভাবে কৃষিক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না৷ আসলে কৃষির আধুনিকীকরণের পথে বর্তমানে বেশ কিছু বাধা আছে৷ এইসব বাধাকে দূর করতে না পারলে উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ করে কৃষিবিপ্লব আনা যাবে না৷
এখন দেখা যাক্, কী কী সেই বাধা৷ প্রথমতঃ, বর্তমানে কৃষিজমি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খণ্ডে বিভক্ত৷ ক্রমশই তা ক্ষুদ্রতর হচ্ছে৷ মনে করুন, কারুর এক জায়গাতে ২ বিঘা জমি আছে৷ ওই দু’বিঘা জমি যখন তার চার ছেলের মধ্যে ভাগাভাগি হ’ল, প্রত্যেকের ভাগে পড়ল ১০ কাঠা৷ তার পরের প্রজন্মে ওই দশ কাঠা আবার ভাগাভাগি হয়ে হয়তো প্রত্যেকের ভাগে ২কাঠা করে পড়ল৷ ২ কাঠা জমি নিয়ে এক একটা খণ্ড –Plot.. এইভাবে যত দিন যাচ্ছে ভূমিখণ্ড ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হচ্ছে৷
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমিখণ্ডে উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ করা অসম্ভব৷ উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ করতে গেলে বড় বড় Plot বা ভূমিখণ্ড না হলে হবে না৷
দ্বিতীয়তঃ, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চাষীর উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ করার আর্থিক সামর্থ্য নেই৷ উন্নত বীজ, উপযুক্ত সার, উপযুক্ত জলসেচের ব্যবস্থা, পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টারের ব্যবস্থা করা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চাষীদের পক্ষে সম্ভব হয় না৷ তাই মাঠের পর মাঠ বৎসরের অধিকাংশ সময় জমি পতিত পড়ে থাকে৷ এই সব কারণে বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ সম্ভব হয় না৷
তাহলে কীভাবে এ সমস্যার সমাধান হবে? প্রাউট বলছে, একমাত্র সমবায়িক কৃষিব্যবস্থার মাধ্যমেই কৃষিক্ষেত্রে উন্নত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে প্রয়োগ করার পথের সমস্ত বাধা দূর করা যায়৷
প্রাউটের সামবায়িক কৃষি–ব্যবস্থায় কী কী সুবিধা –একবার বিশ্লেষণ করা যাক্৷
প্রথমতঃ, সামবায়িক কৃষি পদ্ধতিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জমিগুলিকে একত্রিত করা হবে৷ ওই সব জমির সীমানা নির্ধারক আল তুলে দেওয়া হবে৷ ফলে ছোট ছোট জমিগুলির চারপাশের আলের জন্যে যে জমি নষ্ট হত, তাও আর নষ্ট হবে না৷ জমির আয়তন এইভাবে বাড়িয়ে বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষের উপযোগী করা যাবে৷
দ্বিতীয়তঃ অনেকের আর্থিক সামর্থ্যও একত্রিত হওয়ার ফলে সমবায়ের আর্থিক সামর্থ্যও বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে৷ এক্ষেত্রে সরকার ও ব্যাঙ্কগুলিও সবরকমের সহযোগিতা করবে৷ ফলে আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষে অসুবিধা হবে না৷
তৃতীয়তঃ, সমবায়ে কে কত জমি দিয়েছে, তার হিসাব থাকবে৷ এখানে চাষীদের জমি হারাবার ভয় থাকছে না৷ যৌথভাবে চাষ করা হচ্ছে মাত্র৷ চাষের পর সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে যে নীট লাভ হবে, তার একটা অংশ সমবায়ে যার যতটা পরিমাণ জমি আছে সেই অনুপাতে বন্টন করা হবে৷ আর একটা অংশ সমবায় চাষে যে যেমন শ্রম দিয়েছে সেই অনুপাতে বন্টন করা হবে৷ তবে প্রাউট এ কথাও বলছে, এই সমবায়ীকরণ সব জমিতে এক সঙ্গে করা হবে না৷ ধাপে ধাপে করা হবে৷
প্রথম ধাপে যে সমস্ত uneconomic holding আছে–অর্থাৎ অলাভজনক জমি রয়েছে সেইগুলিকে সমবায়ের আওতায় এনে বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ করা হবে৷
Uneconomic holding বলতে সেই সমস্ত জমিকে বোঝাচ্ছে, যেগুলি বর্তমানে লাভজনক নয়৷ input বেশী output কম৷ অর্থাৎ চাষ করতে যে অর্থব্যয় হয়, চাষ করে তাও উঠে আসে না৷ বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ করে ওই জমির উৎপাদন অনেকগুণ বাড়ানো যাবে৷ তাতে অন্যান্য চাষীরাও সমবায়ে যোগ দিতে উৎসাহিত হবে৷ পরবর্ত্তী ধাপে সমস্ত জমিকেই সমবায়ের অন্তর্ভূক্ত করা হবে৷
প্রথম ধাপে সমবায়ের নীট লাভের ৫০ শতাংশ সমবায় প্রদত্ত শ্রম অনুসারে বন্টন করা হবে৷ এই শতাংশ অবশ্য স্থির করা হবে ওই সময়কার পরিস্থিতি ও সামাজিক মনস্তত্ত্ব অনুসারে৷
এখানে বলা বহুল্য, যে চাষী সমবায়ে জমি দিয়েছে, সে জমির মালিকানা অনুসারে যেমন লাভের অংশ পাবে, শ্রমদান করার জন্যেও আর এক দফা লভ্যাংশ পাবে৷ অর্থাৎ দু’দিক থেকেই অংশ পাবে৷
পরবর্ত্তী ধাপে নীট লাভের বেশী অংশ, ধরা যাক্ ৭৫শতাংশ বন্টন করা হবে সমবায়ে প্রদত্ত শ্রমের জন্যে, আর ২৫ শতাংশ বন্টন করা হবে মালিকানার জন্যে৷ যে চাষী সমবায়ে জমি দিয়ে ওখানেই কাজ করছে, তার কোন ক্ষতি নেই৷ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উৎপাদন যত বাড়বে,ততই তার লাভ৷
তৃতীয় ধাপে, জমির যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রয়োজন অনুযায়ী পুনর্বিন্যাস করা হবে৷ এখানে উল্লেখ করা উচিত, সামবায়িক চাষের সঙ্গে সঙ্গে জনসাধারণের সমবায়–মানসিকতাক্ ক্রমশঃ উন্নত করার উদ্দেশ্যে শিক্ষা–সংস্কৃতির সংস্কার সাধনের ওপরও জোর দিতে হবে৷
পরবর্ত্তী ধাপে সমবায়ের সমস্ত নীট লাভের সমস্তটাই সমবায়ে শ্রমদানরত চাষীদের মধ্যে শ্রমদান অনুসারে বন্টন করা হবে৷ তখন সমবায়ের অন্তর্ভুক্ত সমস্ত চাষী সমবায়ের সমস্ত জমিকে তাদের যৌথ সম্পত্তি হিসেবে গ্রহণ করবে৷ এইভাবে প্রাউট কৃষিজমির সামাজীকরণ করবে৷
প্রাউট প্রবক্তা এও বলেছেন, সমবায়ের সফলতা নির্ভর করে তিনটে শর্তের ওপর –(১) জনসাধারণের সামবায়িক মানসিকতা, (২) উন্নত নৈতিক মান ও (৩) কড়া তত্ত্বাবধান৷
এই তিনটি শর্ত পূরণ করার জন্যে সমবায় সংঘটকদের প্রথম থেকেই সচেষ্ট হতে হবে৷ প্রাউট আরও বলছে, কৃষিতে সমবায়ীকরণের কাজ চলতে চলতে, কৃষির পাশাপাশি–কৃষির পরিপূরক হিসেবে–কৃষিকে পুষ্ট করতে কৃষি সহায়ক শিল্প •Agrico Industry— ও কৃষিভিত্তিক শিল্প •Agro Industry— ও গড়ে তুলতে হবে৷
তাও করা হবে যৌথ মালিকানার ভিত্তিতে৷
কৃষি সহায়ক শিল্প বলতে কী বোঝায়? বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ করতে গেলে তার উপযোগী উন্নত যন্ত্রপাতি চাই, পাওয়ার টিলার চাই, ট্রাক্টর চাই, আবার সার চাই, কীটনাশক চাই৷ এ সব তৈরীর কারখানাকে বলা হয় কৃষিসহায়ক শিল্প৷ এক্ষেত্রে আরও একটা কথা প্রাউট–প্রবক্তা বলেছেন, রাসায়নিক সার ও রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্ত্তে জৈব সার ও জৈব কীটনাশকের ব্যবহার অধিকতর বাঞ্ছনীয়৷ এ ব্যাপারে ব্যাপক গবেষণা করা প্রয়োজন বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেছেন৷
আর কৃষিভিত্তিক শিল্প বলতে বোঝায় কৃষিতে উৎপাদিত দ্রব্যের ওপর ভিত্তি করে শিল্প৷ কৃষির বিকাশের জন্যে তাও একান্ত জরুরী৷ এ ব্যাপারে, একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই, আমি তখন উত্তরবঙ্গে থাকতুম৷ একবার উত্তরবঙ্গের হলদিবাড়িতে দেখলুম, মাঠে প্রচুর টমাটো পেকে শুকিয়ে যাচ্ছে৷ কেন এমন হচ্ছে? খোঁজ নিয়ে জানলুম, বাজারে টমাটোর দাম এত কম যে, জমি থেকে টমাটো বাজারে বয়ে নিয়ে যাওয়ার যে খরচ তাও টমাটো বিক্রি করে উঠে আসবে না৷ চাষীদের কতই না ক্ষতি হচ্ছে৷
ওই এলাকায় যদি টমাটো থেকে জ্যাম, জেলি প্রভৃতি তৈরী করার কারখানা থাকত, তাহলে টমাটোর ভালই দাম থাকত৷ ফলে চাষীরা লাভবান হতো৷ টমাটো চাষে উৎসাহিত হত৷ অন্য দিকে ওই কারখানায় চাষীদের পরিবারের লোকেরা কাজ পেত৷ এইভাবে শুধু টমাটো কেন বিভিন্ন ফল থেকে জ্যাম, জেলি বানানোর কর্মসূচী নেওয়া উচিত৷
এই বাংলায় একসময় ব্যাপক কার্পাস চাষ ও সূক্ষ্ম বস্ত্রশিল্প গড়ে উঠেছিল৷ এই বস্ত্রের, যেমন মসলিন, সারা পৃথিবীতে খ্যাতি ছিল৷ ব্রিটিশরা তাদের স্বার্থে এই বস্ত্রশিল্প ধ্বংস করে দেয়৷ আজ আবার বাংলায় ব্যাপক ভাবে কার্পাস চাষ করা যায়৷ শীতকালে ধান ওঠার পর কার্পাস বুনে তিনমাসে ফসল তোলা যায়৷ বাংলায় কার্পাস চাষের বিস্তার ঘটিয়ে –তা থেকে সূতো বের করে –বাংলায় বস্ত্রশিল্পকে আবার গড়ে তোলা যায়৷ তাহলে বাংলার চাষী ও বেকার শ্রমিক সবাই লাভবান হবে৷ এইভাবে কৃষিসহায়ক শিল্প ও কৃষি ভিত্তিক শিল্প কৃষিকে পুষ্ট করবে৷ যথার্থ কৃষিবিপ্লব আনবে ও সঙ্গে সঙ্গে বেকার সমস্যার সমাধান করবে৷
আজকের সমস্ত চিন্তাশীল সমাজহিতৈষী সুধীবর্গের কাছে আমার আবেদন, আজকের সামাজিক–র্থনৈতিক ক্ষেত্রের অমানিশার অবসান ঘটিয়ে পূর্বদিগন্তকে রাঙিয়ে আজ যে নোতুন সামাজিক–র্থনৈতিক তত্ত্ব–প্রাউটের আবির্ভাব হয়েছে, এই প্রাউটকে ভালভাবে জানুন৷ নোতুন সর্বাত্মক শোষণমুক্ত সর্বাঙ্গসুন্দর সমাজ গড়ার মহাযজ্ঞে যোগদান করার জন্যে আমি আপনাদের সবাইকেই সাদর আহ্বান জানাচ্ছি৷
- Log in to post comments