প্রসঙ্গ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার

লেখক
পত্রিকা প্রতিনিধি

অনুদান না দিয়ে স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়াতে অর্থের উপযুক্ত ব্যবহার হয়৷ এই সহজ সত্যটা বোঝার জন্যে অর্থনীতিতে পণ্ডিত হওয়ার প্রয়োজন নেই৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের হাতে নগদ অর্থ তুলে দিচ্ছেন৷ কোভিডজনিত আর্থিক পরিস্থিতিতে মানুষের হাতে ক্রয় ক্ষমতা দিতে কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ এই ধরণের প্রস্তাবও দিয়েছেন৷ রাষ্ট্রসংঘে রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্প পুরস্কারও পেয়েছে৷

বর্তমানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে মানুষের বিপুল উৎসাহ দেখা যাচ্ছে৷ তবে সমাজ কল্যাণ ভাবনায় ভাবিত কিছু মানুষ  এর বিরোধিতা করছেন৷ তাঁরা হিসেব কষে দেখিয়ে দিয়েছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে কত টাকা ব্যয় হচ্ছে ও সেই টাকায়  শিল্প হলে কত মানুষের স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা হবে৷ কিন্তু কী ধরণের শিল্প করা উচিত বা যারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাওয়ার উপযুক্ত তাঁরা কী ধরণের শিল্পে চাকরী পাওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন তার বিস্তারিত কিছু লেখেননি৷

দেশে আজও লক্ষ লক্ষ পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরোয়ে অবস্থা৷ যাঁরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁরা কেউ কিন্তু এমন পরিবারের নন৷ নুন আনতে পান্তা ফুরোয় পরিবারের কাছে ৫০০/১০০০ টাকার মূল্য কত তাঁদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়৷ তাছাড়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রাপকদের চাকরির ব্যবস্থা করতে গেলে কি ধরণের শিল্প গড়া সম্ভব, তার পরিকাঠামো কেমন হবে, কত ব্যয় হবে পরিকাঠামো গড়তে তার বিস্তারিত কিছু অবশ্য দেননি সমাজ কল্যাণ ভাবনায় ভাবিতরা৷

প্রাউটের অর্থনীতিতে একটি কথা আছে---

                   ‘‘অর্থকে সচল রাখো’’৷

সব খারাপেরও একটা ভালো দিক থাকে৷ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের খারাপটা যারা দেখেছেন ভালোর দিকটা তারা দেখেননি৷ ওই যে ৫০০ বা ১০০০ টাকা গরীব মানুষের হাতে---সেখান থেকে মুদিখানায়, সবজির দোকানে, বস্ত্রালয়ে.... অর্থ চলতেই থাকবে৷ কিন্তু ধনকুবেরদের হাতে ও সুইসব্যাঙ্কে যে হাজার হাজার কোটি কালো টাকা অচল হয় পড়ে আছে তাকে সচল করার পরিকল্পনা সমাজ কল্যাণের  ভাবনায় ভাবিত কারোর মাথায় আসেনি৷