যদিও জন্মকালের রাশি–লগ্ণের অবস্থিতি অনুযায়ী ব্যষ্টি ও রাষ্ট্রের ভাগ্য গণনা করাই প্রাচীনকালের প্রথা কিন্তু পরবর্ত্তীকালে করকোষ্ঠী বা ত্ন্ত্রপ্তপ্পন্ব্দব্ধব্জ্ এই বিদ্যাটি ভারতের পুরাতন বিদ্যা নয়৷ শাকদ্বীপী ব্রাহ্মণেরা বিদেশ থেকে এটি ভারতে এনেছিলেন৷ সমুদ্রের ওপার থেকে এদেশে এসেছিল, তাই এর নাম সামুদ্রিক বিদ্যা) শাস্ত্রের উদ্ভাবন ও প্রচলন হয়৷ নাম অনুযায়ী ও ব্যষ্টির সংস্কার সম্পর্কিত সংখ্যা অনুযায়ীও আরও পরবর্ত্তীকালে ভাগ্য গণনার কাজ শুরু হয়৷ স্ফটিক দর্শন ন্তুব্জম্ভব্দব্ধ্ত্রপ্ত, নখদর্শন ন্প্ত–ন্ধ্ত্রম্ভ্রনুন্ধগ্ প্রভৃতি বিদ্যাগুলির প্রচলন হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩০০০ বছর আগে৷ গণনা বিদ্যায় বা গণকের আওতার মধ্যে এরা সবাই আসে৷ বলা বাহুল্য মাত্র, জ্যোতিষের এই বিভিন্ন ধারার গণনা নিরঙ্কুশ বা ত্রুটিমুক্ত নয়৷ অবশ্য কেউ কেউ বলতে পারেন যে, যে সকল তথ্যের ভিত্তিতে গণনা করা হয়ে থাকে, সেই তথ্যে যদি ভুল থাকে বা গণনার অঙ্কে যদি ভুল থেকে যায় তাহলে ফলেতে তো ভুল থাকবেই৷ এই জন্যে জ্যোতিষ শাস্ত্রের নিন্দা করা বৃথা৷ তাঁদের বক্তব্য একেবারে ফ্যালনা নয়৷ তবে কোনো মানুষেরই জ্যোতিষের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকা উচিত নয়৷ পুরুষকারের সাহায্যেই মানুষকে এগিয়ে যেতে হবে ও এটাই বলিষ্ঠ পদক্ষেপ৷
‘‘দৈবং নিহত্য কুরু পৌরুষমাত্মশক্ত্যা৷’’
কোথাও জ্যোতিষীর গণনা যদি নিষ্ঠার সঙ্গেও করা হয়ে থাকে তাহলেও তা যে সবাইকার ক্ষেত্রে সমভাবে ফলে যাবে এমন কথা হলপ করে বলা যায় না৷
রাজার ছেলে ও প্রজার ছেলে দু’জনেই যদি একই সময়ে জন্মায় তাহলে কোনো তারিখে প্রদোষ আট ঘটিকায় যদি রাজকুমারের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠিত হয় তাহলে প্রজার ছেলেটিকে হয়তো সেই সময়ে যাত্রার দলের রাজার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা যাবে৷ লোকে সেই সময়ের জন্যে তাকেও রাজা বলে ডাকবে৷
সেই যে কথা আছে না একটি নবজাত শিশু–তার নাম রামফল সিং৷ গণকঠাকুর খড়ি পেতে গুনে বললেন, এর গ্রহসংস্থান যেমন..........দশা–ন্তর্দশা যেমন তাতে এর খুবই প্রাচুর্য্যের মধ্যে দিন কাটবে৷ আমি যে দেখছি, এর ডাইনে বাঁয়ে সামনে পেছনে থাকবে কেবল গাড়ির পর গাড়ি৷ এ কী কম ভাগ্যের কথা
বন্ধু–বান্ধব আত্মীয়–স্বজন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগল কবে রামফলের সেই সৌভাগ্যের দিন আসবে৷ ২৪ বছর পর দেখা গেল রামফল সিং ট্রাফিক কন্ষ্টেবল হয়ে চউরাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে আর তার সামনে পেছনে ডাইনে বাঁয়ে হুস্ হুস্ করে গাড়ি চলছে৷
তা যাই হোক, গণকঠাকুররা যে সব সময় ভুল করেন একথা আমি বলছি না৷ কিছু কিছু জিনিস মিলে যেতে আমিও দেখেছি৷ তবে তোমরা যেন জ্যোতিষ বিদ্যার মুখ চেয়ে বসে থেকো না৷
একবার হজরৎ মোহম্মদের দুই দল শিষ্যের মধ্যে তুমুল বাদ–বিতণ্ডা শুরু হয়ে গেল৷ একদল বললে, তক্দির বা ভাগ্যে যা আছে তাই হবে৷ কোনো চেষ্টা করা বৃথা৷ আর একদল বললে, মানুষ তদ্বির অর্থাৎ চেষ্টা করেই সব কিছু পাবে৷ যুধ্যমান দু’দলই হজরৎ মোহম্মদের কাছে যখন পৌঁছুল, তখন উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে তিনি বললেন, তক্দিরে যা আছে তা–ই হবে কিন্তু তোমরা তদ্বির করে যাও৷