গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী জম্মু-কশ্মীরের পুলওয়ামাতে সি.আর.পি.এফ কনভয়ে আত্মঘাতী বোমা বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে ৪৯ জন ভারতীয় জওয়ানকে হত্যা করা হয়েছে৷ এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক জঙ্গী গোষ্ঠী জয়েশ-ই-মহম্মদ৷ ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দ্বর্থ্যহীন ভাষায় বলা হয়েছে যে, এই জঙ্গীহানার পেছনে পাকিস্তানের হাত আছে৷ প্রকৃতপক্ষে এদের প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে শুরু করে বিষ্ফোরক দ্রব্যাদি সরবরাহ করেছে পাকিস্তানী সেনা৷
বিভিন্ন ইসলামিক জঙ্গীগোষ্ঠী ভারতে ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালিয়ে বিশ্বের সমস্ত মানুষের কাছেই ত্রাসের কারণ হয়ে উঠেছে৷ ভারতে তারা ইতোপূর্বে যে সমস্ত বড় বড় হামলা চালিয়েছে সেগুলির মধ্যে আছে---
(১) ২০০১ সালের---ভারতীয় সংসদ ভবনে হামলা৷ তাতে ৭জন নিহত হয়েছিলেন ও ১২ জন সাংঘাতিক ভাবে আহত হয়েছিলেন৷ তাতে জড়িত ছিল জয়েশ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তৈবা --- এই দুই জঙ্গী গোষ্ঠী৷ তাদের লক্ষ্য ছিল ভারতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে হত্যা করে এদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা৷
(২) ১১ই জুলাই , ২০০৬ মুম্বাই-এর শহরতলী ষ্টেশনে ১১মিনিট ধরে ৭টি বড় বড় বিষ্ফোরণ ঘটানো৷ সে সময় তাদের এই বোমা বিষ্ফোরণের ফলে ২০৯ জন নিরপরাধ মানুষ নিহত হন ও আহত হন অন্ততঃ ৭০০জন ৷
(৩) ২০০৮ সালে ২৬শে জুলাই আমেদাবাদে বোমা বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে ৫৬ জনকে হত্যা করেছিল ও ২০০ জনকে জখম করেছিল৷
(৪) আবার ওই বছরই ২৬শে নভেম্বর ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই-এ ভয়ঙ্কর বোমা বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছিল৷ তাতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছিলেন৷ লস্কর-ই-তৈবা- এর পেছনে ছিল৷
(৫) ২০১৬ সালে পাঠানকোর্টে ২রা জানুয়ারী পাঠানকোর্টের ইণ্ডিয়ান এয়ারফোর্সের ব্যারাকে জঙ্গী হানা হয়েছিল৷ এতে ৭জন নিহত হয়৷ পেছনে ছিলেন জয়েশ-ই-মহম্মদ৷
(৬) ওই বছর ১৮ই সেপ্ঢেম্বর জম্মু-কশ্মীরের বারামূলা জেলার উরী এলাকায় জঙ্গী হানার ফলে ১৮ জন জওয়ান নিহত হয়েছিল৷ আহত ১১ জন৷
শুধু ভারতেই নয় জঙ্গী ইসলামী গোষ্ঠী সারা পৃথিবী জুড়ে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালিয়ে সর্বত্র এক সন্ত্রাসের আবহ সৃষ্টি করেছে৷ এই শতাব্দির শুরুতেই আমেরিকার ওয়াল ট্রেড সেন্টারে জেট বিমান দিয়ে আঘাত করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে চরম সন্ত্রাসের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল৷ সেই জঙ্গী হানাতে নিহত হয়েছিল ২,৯৯৬ জন৷ আহত প্রায় ৬ হাজার মানুষ৷
গত ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল ---এই ৫ বছরে জঙ্গী হানায় সারা পৃথিবীতে মৃত্যু হয় ২০১৪ সালে ---১২৬২ জন, ২০১৫ সালে ২৬৬জন,২০১৬সালে ২৪১জন, ২০১৭ সালে ৪৭০ জন ও ২০১৮ সালে ৮২৯ জন৷ অর্থাৎ এই পাঁচ বছরের মধ্যে ইসলামী জঙ্গী হানায় মৃত্যু হ’ল ৩০৬৮ জনের৷
এইভাবে মানব সমাজের এক ধবংসকারী শক্তিরূপে আত্মপ্রকাশ করছে এই ইসলামিক জঙ্গী গোষ্ঠী৷ এরা অন্যান্য সমস্ত জনগোষ্ঠীকে ধবংস করে সেই ধবংস্তুপের ওপরে তাদের মতবাদের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায় যা মানব জাতির পক্ষে অত্যন্ত মারাত্মক৷