কলকাতা ঃ প্রভাত সঙ্গীতের ৩৬ বর্ষ পূর্ত্তি উপলক্ষ্যে গত ২৭ শে অক্টোবর কলকাতার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে ‘রাওয়া’র উদ্যোগে প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে এক অপূর্ব মনোমুগ্ধকর সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান হয় ও তার সঙ্গে সঙ্গে প্রভাত সঙ্গীতের স্রষ্টা শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তীির্ সর্বান্যুসূত দর্শনের ওপর আলোকপাত করেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক (ডিন) ডঃ রঘুনাথ ঘোষ ও মার্গের প্রবীণ সন্ন্যাসী আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত৷ এই অনুষ্ঠানে পরিবেশিত প্রভাত সঙ্গীত ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য হলভর্তি দর্শকদের মোহিত করে দেয়৷
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডঃ রঘুনাথ ঘোষ, প্রাক্তণ ডিন, আর্টস্, কর্র্মস ও ল বিভাগ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতির আসন অলঙ্কৃত করেন আনন্দমার্গের প্রবীণ সন্ন্যাসী আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত৷ এছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাওয়া সেক্রেটারী আচার্য রবীশানন্দ অবধূত ও আচার্য ভবেশানন্দ অবধূত৷
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়, ‘এগিয়ে চল আজিকে শুভ বিজয়া’ এই প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্যানুষ্ঠান দিয়ে৷ এটি পরিবেশন করেন খড়গপুরের নীলোৎপল নৃত্যগোষ্ঠীর শিল্পীরা৷
এরপর অতিথি বরণ, প্রভাত সঙ্গীতের স্রষ্টা পরম শ্রদ্ধেয় শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকারের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান পর্বের পর বিভিন্ন গায়ক-গায়কী ও নৃত্য শিল্পীরা প্রভাত সঙ্গীত ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য পরিবেশন করে এক অপূর্ব মনোমুগ্ধকর নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করেন৷
এর মধ্যে ডঃ রঘুনাথ ঘোষ, মানব সমাজে প্রভাত সঙ্গীত-স্রষ্টা শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকারের বিস্ময়কর বহুমুখী প্রতিভা ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের ওপর বিস্তৃত আলোচনা করেন৷ তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী একজন ‘ক্রান্তদর্শী’ ত্রিকালজ্ঞ পুরুষ৷ তিনি আজকের সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের পথ নির্দেশনা দিয়েছেন৷ তিনি ‘ব্রহ্মসত্য ও জগৎ মিথ্যা’ বলে দ্বিচারিতা করেন নি, তিনি বলেছেন জগৎ আপেক্ষক সত্য৷ মানুষের উচিত অন্তর্জগৎ ও বহির্জগতের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলা৷ এর মধ্যেই রয়েছে জীবনের জটিল সমস্যার সমাধানের চাবিকাঠি৷ তিনি আরো বলেন, শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী প্রকৃতই Embodiment of the bliss. তাঁর সর্বানুসূ্যত দর্শন আজও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক৷ সভাপতি আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী মহান আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে এক আদর্শ সর্বাঙ্গসুন্দর সমাজ গড়ার জন্যে সবাইকে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান৷
সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানে প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন করেন আকাশবাণী ও দূরদর্শন শিল্পী সৌরভ চক্রবর্তী, কেরালার বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সাধিকা, কলকাতার অন্যান্য বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী কাঞ্চন দাস, তানিয়া দাম, বৈতালিক সঙ্গীত শিল্পীগোষ্ঠী প্রমুখ৷
নৃত্য পরিবেশন করেন শান্তিনিকেতনের সবুজকলি নৃত্যগোষ্ঠী, কলকাতার কঙ্কনা ভট্টাচার্য ও তাঁর সম্প্রদায়, খড়গপুরের নীলোৎপল নৃত্যভূমির শিল্পীরা ওড়িশার ভূবনেশ্বর রাওয়া একাডেমীর শিল্পীরা৷ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শুভেন্দু ঘোষ৷
অনুষ্ঠানের শেষে আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত শ্রীবিভাংশু মাইতি রচিত প্রভাত সঙ্গীতের ওপর একটি পুস্তক ‘প্রভাত সঙ্গীত জীবনের আনন্দধারা’ প্রকাশ করেন৷