December 2019

সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিল আইনে পরিণত প্রতিবাদের রোষে উত্তাল দেশ

সংসদের উভয় কক্ষে সি.এ.বি.-বিল পাশ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে তা আইনে পরিণত হয়৷ সংবিধানের মৌলিক ধারাকে অবজ্ঞা করে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক বিভাজনের এই আইন দেশের বৃহৎ অংশের মানুষ মেনে নিতে পারছে না৷ তাই দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের রোষ৷ পুড়েছে ট্রেন, বাস, পথ অবরোধে নাকাল হয়েছে হাজার হাজার মানুষ৷

প্রতিবাদে পথে‘ আমরা বাঙালী’

‘আমরা বাঙালী’ সংঘটনও অসংবিধাবিধানিক   আইনের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন৷ ১৭ তারিখে বিধাননগরে একটি বিক্ষোভ সভায় কেন্দ্রীয় সচিব বকুলচন্দ্র রায় বলেন বিভাজনের আইন বরদাস্ত করবে না বাঙালী৷ বাঙালী জনগোষ্ঠীকে আইন করে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের চক্রান্ত ‘আমরা বাঙালী’ সর্বশক্তি দিয়ে রুখবে৷ এই অসাংবিধানিক আইনকে অবিলম্বে বাতিল করার দাবী জানান তিনি৷

আগামী ২১শে ডিসেম্বর বেহাল অর্থনীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও সি.এ.বি.-র প্রতিবাদে আগরতলায় মহামিছিল করবে ‘আমরা বাঙালী’৷

বনগাঁয় শুরু হ’ল প্রাউট প্রশিক্ষণ শিবির

১৯শে ডিসেম্বর থেকে বনগাঁয় শুরু হ’ল প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের প্রাউট প্রশিক্ষণ শিবির৷ ২২শে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই শিবির চলবে৷ ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাউটিষ্ট কর্মীরা এসে পৌঁছেছেন৷ অন্যান্য রাজ্য থেকেও প্রাউটিষ্ট কর্মীরা এই শিক্ষা শিবিরে যোগ দিয়েছেন৷

১৯ তারিখ সকাল ৯টা থেকে অখণ্ড মহানাম মন্ত্র ‘বাবনাম কেবলম্’ কীর্ত্তন দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়৷ তিন ঘণ্টা কীর্ত্তন শেষে মধ্যাহ্ণ ভোজনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়৷

নিউ জল্পাইগুড়ি ষ্টেশনে আটক যাত্রীদের পাশে এ্যামার্ট

সি.এ.এ.-র প্রতিবাদ বিক্ষোভের ফলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণ বঙ্গের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ৷ ট্রেন না চলায় বহু যাত্রী এন.জে.পি. স্টেশনে আটকে পড়েন৷ ১৮ই ডিসেম্বর আনন্দমার্গ ইয়ূনিবার্সাল রিলিফ টীমের উদ্যোগে একদল সদস্য নিউ জল্পাইগুড়ি  ষ্টেশনে গিয়ে আটক যাত্রীদের বিভিন্ন অসুবিধা দূর করার চেষ্টা করেন ও আশ্রম থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে গিয়ে তিন শতাধিক যাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করেন৷ এই কর্মকাণ্ডে মুখ্য উদ্যোক্তা ছিলেন দার্জিলিংয়ের ভুক্তিপ্রধান দীপা শর্মা, কলিকাতার ভুক্তিপ্রধান সুনন্দা সাহা, শিলিগুড়ি আনন্দমার্গ আচার্যর অধ্যক্ষ আচার্য নন্দন ব্রহ্মচারী ও এ্যামার্ট মহিলা শাখার সদস্যবৃন্দ প্রমুখ৷

ভৌতিক সম্পদের সর্বাধিক উপযোগ ও সঞ্চয়ে নিয়ন্ত্রণ চাই

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূত

সম্পদ তিন ধরণের– ভৌতিক সম্পদ, মানস সম্পদ ও আধ্যাত্মিক সম্পদ৷ ভৌতিক সম্পদ বলতে বোঝায় যা পঞ্চভূত দিয়ে তৈরী৷ যেমন ধন দৌলত, জমিজমা প্রভৃতি–যে সম্পদ চোখে দেখা যায় বা আমাদের ইন্দ্রিয়ানুভুতির মধ্যে আসে৷

প্রকৃতপক্ষে পরম ব্রহ্ম মানুষের সমস্ত ধরণের অভাব পূরণের জন্যে নানান ধরণের সম্পদ সাজিয়ে রেখেছেন কিন্তু আমরা এই সমস্ত সম্পদের যথার্থ উপযোগ গ্রহণ করতে জানি না বা করি না৷ মানুষের সমস্ত অভাবের মূল কারণ এইটাই, সমস্ত সমস্যার মূল কারণ এইটাই৷

তাই কীভাবে সমস্ত সম্পদের যথার্থ উপযোগ গ্রহণ করতে হবে–প্রাউট–প্রবক্তা তাঁর নবোদ্ভাবিত তত্ত্বে সেই নীতিটাই তুলে ধরেছেন৷

পরোপকারের দ্বারা মহান হও

শাস্ত্রে বলা হয়েছে, ‘প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্ণেন সেবয়া’–মানুষপ্রণিপাত, পরিপ্রশ্ণ ও সেবা–এই তিনের সহায়তায় অর্থাৎ এই তিনের সমন্বয়ে পরমপুরুষের কাছে পৌঁছতে পারে৷ সাধক জীবনে সেবা তাই অনিবার্য৷ সেবার ভাবনা না থাকলে, দরজা বন্ধ করে বিশ ঘণ্ঢা সাধনা করলেও কোনো উন্নতি হবে না কারণ পরমপুরুষের আসন তোমার হৃদয়েও আছে, আবার বাইরেও আছে৷ তুমি ভিতরের আসনকে উজ্জ্বল করতে চাইবে, সেখানে দীপ জ্বালাবে আর বাইরের আসনকে অন্ধকারে রেখে দেবে, এতে কাজ হবে না৷ দীপ  ভিতরেও জ্বালাতে হবে, বাইরেও জ্বালাতে হবে৷

শিক্ষা প্রসঙ্গে কিছু বক্তব্য

শিক্ষার পদ্ধতি

শিক্ষাদানের পদ্ধতি  কীরকম হওয়া উচিত তা চিরকালেরই এক জটিল প্রশ্ণ৷ মানুষের মনের ওপর পরিবেশের প্রভাব অপরিসীম৷ যে পরিবেশে একজন জন্মায়, বেড়ে ওঠে, তার প্রভাব জীবনের শেষক্ষণ পর্যন্ত সেই মানুষটির ওপর কার্যকরী থাকে৷ একজন যেভাবে শিক্ষা পেল সেই অনুযায়ী তার মানসিক সংরচনাও তৈরী হয়৷ আর মানুষের জীবনে শারীরিক সামর্থ্যের চেয়ে মানসিক ক্ষমতার প্রভাব অনেকগুণ বেশী শক্তিশালী ৷

কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিভাজনের নীতির ভিত্তিতে এনআরসি-র পরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব) পাশ করায় সারা দেশ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে Citizenship Amendment Bill—CAB) বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাঙলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আগত হিন্দু বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, খ্রীষ্টান ও পার্সী সম্প্রদায়ের এ যাবৎ বে-আইনী অনুপ্রবেশকারীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে৷ কিন্তু মুসলমান সম্প্রদায়ের কেউ এভাবে এলে তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না৷ এ বিলের প্রতিবাদে অসম, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গে প্রায় সব জেলায় ট্রেনে, বাসে, দোকান, বাড়ীতে অগ্ণিসংযোগ, রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি দিয়ে পথ অবরোধ করা এমনকি রেল ষ্টেশনে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে৷ অসমে তো প্রায়ই দিনই এই হিংসাত্মক আন্দোলনের জেরে সাত  জনের মৃত্যুও হয়েছে৷

আন্দোলনের নামে এই উচ্ছৃঙ্খলতা বঙ্গ সংস্কৃতির অঙ্গ নয়

মনোজ দেব

ক্ষোভের যথেষ্ট কারণ আছে৷ অর্থনীতির বেহাল অবস্থা৷ নুন আনতে পান্তা ফুরায় দশা৷ গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত বিভেদের বিল আইনে পরিণত হ’ল৷ ধুরন্ধর অর্থনীতির কারিগর ও রাষ্ট্রশক্তির নিয়ন্ত্রকরা অত্যন্ত সুচতুরভাবে একটি সামাজিক বিভেদ সৃষ্টিকারী বিলকে সংখ্যাধিক্যের জোরে লোকসভা, রাজ্যসভায় পাশ করিয়ে, রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে আইনে পরিণত করল৷ কয়েক কোটি মানুষের সামনে নাগরিকহীনতার খাঁড়া ঝুলিয়ে দিল৷ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী তক্মা সেঁটে দেবার ব্যবস্থা করল৷ এক ঢিলে অনেক পাখী মারতে চাইল মোদী সরকার৷ বেহাল অর্থনীতির দিক থেকে দৃষ্টিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হ’ল, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে এ নিয়ে আর কোন উচ্চবাচ

নারীর মর্যাদা রক্ষার চিন্তায় একটি ব্যানার

এইচ.এন.মাহাত

কয়েকদিন আগে শ্যামবাজার পাঁচ মাথায় রাস্তার ধারে টাঙানো একটি ব্যানার নিয়ে আমাদের সুসভ্য আধুনিক নারী সমাজের গেল গেল রব উঠতে শুরু করেছে৷ আধুনিকতার ছোঁয়া লাগা অত্যাধুনিক কিছু নারী স্বাধীনতা চায়৷ সেটা কোন স্বাধীনতা, যাদের হাবভাবে শুধুমাত্র বেলেল্লাপনা ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না৷ এটা ভুললে চলবে না, মেয়েরা প্রথমে মায়ের জাত, প্রতিটি মুহূর্ত্ত একটি মা যেমন তার শিশুকে বুকে আগলে রাখে ও তার মৃত্যুর প্রাক্ মুহূর্ত্ত পর্যন্ত তাকে রক্ষা করে৷ তেমনি বোনের আদর  ভালবাসা উজাড় করে ভাইকে একটি লক্ষ্যে পৌঁছুতে সাহায্য করে৷ এরপর সেই মায়ের আর একটি দিক তার জীবনে মনের মানুষের খোঁজ৷  এ সম্পর্কে আমি অবশ্য একটু ভিন্নমত পো