December 2019

একের পর এক বলাৎকার ও খুনের ঘটনা ঃ সমস্যা সমাধান কোন পথে?

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূ্ত

নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার ও খুনের ঘটনা প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে৷ ২৮ শে নভেম্বর হায়দ্রাবাদের ঘটনায় সারা দেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল৷ সর্বত্রই এই সব নরপশুদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানানো হ’ল৷’’ সর্বত্র দোষীদের ফাঁসীর দাবী উঠল৷ কিন্তু না,এ ধরনের অপরাধ কাণ্ড ঘটেই চলেছে৷ উত্তর প্রদেশের উন্নাওতে ধর্ষণকারী জামিনে মুক্তি পেয়েই অভিযোগ কারিনীর  গায়ে  প্রকাশ্য রাস্তায় কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিল৷ সর্বাঙ্গে জ্বলছে আগুন৷ এই অবস্থায় ওই তরুণী প্রায় এককিলোমিটার পথ  সাহায্যের জন্যে  ছুটে গিয়ে একজনকে দেখতে পেয়ে  তার ফোনে  নিজেই থানায়  ফোন করে পুলিশকে জানায়৷ পুলিশ ওই তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়৷  হা

যুব সমাজ, শালীনতাবোধ ও অতি আধুনিকতা

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

প্রায় দশ লক্ষ বছর পূর্বে পৃথিবীর বুকে প্রথম মানব জাতির আবির্ভাব৷ সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষেরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বানর, শিম্পাঞ্জী, কুকুর, ছাগলের মতই নগ্ণাবস্থাতেই ঘুরে বেড়াতেন৷ পরবর্তীকালে সময়ের বিবর্তনে মানুষের রুচিবোধ ও চিন্তা-ভাবনায় এসেছে পরিবর্তন---দেহকে আবৃত করার সচেতনতা৷ গাছের পাতা, বাকল, মৃত পশুর চামড়ার পথ ধরে বিজ্ঞানের অগ্রগতি বর্তমানে এনেছে বহুবিধ অঙ্গাবরণ৷ পৃথিবীর নানা দেশের ভৌগোলিক পরিবেশ, জলবায়ুর বিভিন্নতা, জীবনযাত্রা, রুচিশীলতা, আচার-ব্যবহার, কৃষ্টি-সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে ব্যবহৃত হয় বিবিধ পোশাক-পরিচ্ছদ৷ বর্তমানে পোশাক শুধুমাত্র অঙ্গাবরণই নয়-রুচিবোধ, শালীনতা ও সৌন্দর্যে

সারা ভারতের সমাজগুলিকে বাঁচাতে বিকেন্দ্রীক অর্থনৈতিক আন্দোলন জরুরী

প্রভাত খাঁ

প্রথমেই বলি সংবিধানের নির্দ্দেশ মতাবেক ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম আছে৷ কিন্তু এখানকার কেন্দ্রীয় শাসকগণ দেখা গেছে যে সেটাকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে ছলবল কৌশলে৷ কেন্দ্রের শাসক রাজ্যের সরকারকে ভেঙ্গে দিয়ে নিজেদের অধীনে এনে শাসন ক্ষমতা কায়েম করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পদদলিত করে৷ পূর্বতন কংগ্রেস সরকার এর নজির রেখে গেছে৷ কংগ্রেসের দেখানো পথেই বর্তমান সরকার হাঁটছে৷ তাই এই শাসন ব্যবস্থায়ও দেশবাসী সন্তুষ্ট নয়৷ এদের আর্থিক সংস্কার নীতিও জনগণকে পথে বসিয়েছে৷ তাছাড়া বিদেশী তাড়ানোর নামে যা কান্ড করছে সেটা মানবতাকে ও গণতন্ত্রকে অবজ্ঞা করে সাম্প্রদায়িকতাকে সামনে রেখে৷ ধর্ম নিরপ

জলাভাব---ভারতের ইতিহাসে ঘনিয়ে আসছে সঙ্কটময় সময়

মনোজ দেব

ভারত সরকারের নীতি আয়োগের এক সমীক্ষায় জানা গেছে --- আগামী একবৎসরের মধ্যে দেশের ২১টি বড় শহরের ভূগর্ভস্থ জল নিঃশেষ হয়ে যাবে৷ রাজস্থান, তামিলনাড়ু , মহারাষ্ট্র, দিল্লীর মতো রাজ্যগুলিতে জলের অভাব তীব্ররূপ ধারণ করবে৷

নীতিনিয়োগের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে শেষ ১০ বছরে দেশের ভূগর্ভস্থ জলের ৬১ শতাংশ ব্যবহার হয়ে গেছে৷ যদি এইভাবে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করা হয় তবে আগামী দুবছরে ভূগর্ভস্থের জল শেষ হয়ে যাবে৷ চেন্নাই, দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরু  মতো বড় শহর গুলিতে জলসংকট মহামারির রূপ ধারণ করবে৷

 

অগস্ত্যপত্নী–কৌশিতকী

কৌশিতকী ছিলেন মহর্ষি অগসেত্যর পত্নী৷ মহর্ষি অগস্ত্য তাঁর জীবন কাটিয়ে দিয়েছিলেন আদর্শের প্রচারে, মানবিকতার সম্প্রসারণে৷ তাঁকে এই কাজে প্রতি পলে বিপলে সাহায্য করে থাকতেন তাঁর স্ত্রী কৌশিতকী৷ কৌশিতকী ছিলেন অত্যন্ত বিদুষী মহিলা ও ব্যাপক মানব হূদয়ের অধিকারিণী৷ কখনও অগস্ত্য তাঁকে নির্দেশনা দিয়ে কাজ করাতেন, কখনও বা তিনিও নব নব ভাব–তত্ত্ব উদ্ভাবনের দ্বারা মহর্ষি অগস্ত্যকে নির্দেশনা দিতেন৷ এই ভাবে উভয়ে মিলেমিশে কাজ করে গেছলেন মানব জীবনে দেবত্ব ভাবের উত্তরণের জন্যে৷

জলের বিশুদ্ধতা

জলম্, নীরম, তোয়ম্, উদকম, কম্বলম, পানীয়াম–জলের এই ক’টি হল পর্যায়বাচক শব্দ৷ জল শব্দটিকে তৎসম রূপেই বাংলায় ব্যবহার করি৷ যার মানে– any kind of water (যে কোন প্রকারের জল)৷ ‘নীর’ মানে সেই জল যা অন্যকে দেওয়া যায় ‘তোয়’ মানে যে জল উপচে পড়ে ‘উদক’ মানে যে জল খুঁড়ে পাওয়া যায় ‘কম্বল’ মানে যে জল ওপর থেকে পড়ে ‘পানীয়’ মানে যে জল পান করবার যোগ্য, খাল–বিল–নালার জল নয়৷ বাংলা ভাষায় ‘জল’ ও ‘পানী’ দুটো শব্দই চলে৷ জল শব্দটি তৎসম, আর পানী শব্দ ‘পানীয়ম’–এর তদ্ভব রূপ৷ ‘জল’ মানে যে কোন জল–ড্রেনের জল, পুকুরের জল, ফিল্টার করা কলের জল–সবই৷ তবে drinking water বললে তার জন্যে বাংলা হবে পানীয় জল বা পানী৷ মনে রাখবে, যে কোন জ

কিশোর বিপ্লবী

প্রণবকান্তি দাশগুপ্ত

সেটা ১৯০৬ সাল৷  সারা দেশ ব্রিটিশের অত্যাচারে অতিষ্ট৷ মুক্তি পাগল দেশবাসীর মনে  স্বাধীনতার স্পৃহা জাগাবার জন্য সশস্ত্র উষ্ণ রক্ত বিপ্লবীর দল সবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে৷ ফেব্রুয়ারি মাস মেদিনীপুর শহরের একটি পুরোনো জেলখানার প্রাঙ্গনে কৃষি শিল্পের প্রদর্শনী শুরু হয়েছে৷ নানান লোকের আনাগোনা চলছে৷  দর্শকের সংখ্যা নিতান্ত কম নয়৷ একটি বালক রোজই আসে৷ মেলা দেখে চলে যায়৷

মেলা আরম্ভ হবার ৮ দিন পর  শুরু হলো পুরস্কার বিতরণী সভা৷ জেলায় যত হোমড়া-চোমড়া এবং বড় সরকারী কর্মচারী যোগ দিলেন সেই সভায়৷ চারদিকে হৈচৈ পড়ে গেল৷ অতিথিদের আপ্যায়ণে সভার উদ্যোক্তারা ব্যস্ত ৷

বেগুণ গাছ ও বিরিক্ষি

‘‘যত্র বিদ্বজনো নাস্তি শ্লাঘ্যস্তত্রাল্পধীরপ্৷

নিরস্তে পাদপে দেশে এরণ্ডহপি দ্রুমায়তে৷৷’’

যেখানে সত্যিকারের বিদ্বান নেই সেখানে অল্পজ্ঞ ব্যষ্টিও শ্লাঘ্য অর্থাৎ বরণীয় রূপে গণ্য হন৷ যেমন যে দেশে বৃক্ষ নেই সে দেশে এরণ্ড (রেড়ির গাছ) বৃক্ষরূপে সম্বোধিত হয়ে থাকে৷ ওপরের কথাটির কী জুৎসই বাংলা হবে একদিন আমি তা ভাবছিলুম৷ ভাবতে ভাবতে চলেছি হুগলী জেলার বেলুন গ্রামের পাশ দিয়ে৷ সবে সন্ধ্যে হয়েছে৷ হঠাৎ দেখি দীর্ঘকায় দুই নারী নাকি সুরে চিৎকার করছে---একজনের হাতে আঁশবটি৷ অন্যের হাতে মুড়ো ঝাঁটা৷ তাদের নাকি সুরে বুঝলুম তারা মানবী নয়---পেত্নী৷ কথা শুণে মনে হ’ল তারা দুই জা৷

ফৌ

রামদাস বিশ্বাস

নাম তার কাকলাস

কেউ বলে ফৌ

কেউ বলে বহুরুপী বর নাকি বৌ৷

গাছে গাছে ডালে ডালে ঝোপের আড়ালে

পাঁচিলেও দেখা যায় মুখটি বাড়ালে৷

মুখ তুলে মাথা নেড়ে রঙ বদলাস

ফৌ বলে ডাকে কভু, কভু কাকলাশ৷

টিকটিকির মতো তুই  খানিক বড়

খসখসে গা তোর কিছু জড়জড়৷

পোকামাকড় খেয়ে তুই বেশ তো আছিস

জানি না কতদিন বাঁচিয়া থাকিস৷

আর একটি নাম তোর জানি গিরগিটি

ধূসর হলে রঙ যেন টিকটিকিটি৷

সব দেশে যায় দেখা আনাচে কানাচে

বহুরূপী গিরগিটি মাথা তুলে নাচে৷

কাকলাশ বল দেখি তুই কার বৌ

অথবা বরবেশী হয়ে আছিস ফৌ৷