February 2021

নীলকন্ঠ দিবসের শপথ–শোষণমুক্ত নোতুন বিশ্ব

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূত

পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা গেছে, যখনই কোনো মহাপুরুষ প্রচলিত ধর্মীয় কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের বিরোধিতা করেছেন, সামাজিক–র্থনৈতিক নানান শোষণ ও অবিচারের প্রতিবাদ করেছেন, শোষণমুক্ত সমাজের আদর্শ তুলে ধরেছেন, তখনই তাঁর বিরুদ্ধে শোষকশ্রেণী বা কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী ও তাদের স্তাবকরা নানা ভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে, এমন কি তাঁদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যে নানান্ভাবে চেষ্টা চালিয়েছে৷

তাই সক্রেটিসকে হেমলগ বিষ পান করানো হয়েছিল,  যীশুখৃষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল–এমনি অজস্র উদাহরণ ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে৷

মন্ত্র ও দীক্ষা

গত রাতে আমি তোমাদের ‘মন্ত্র’ শব্দের যথাযথ অর্থ সম্বন্ধে অনেক কিছু বলেছিলুম৷ আমি বলেছিলুম যে ‘মন্ত্র’ শব্দের আধ্যাত্মিক অর্থ ও জাগতিক অর্থ এক নয়৷ আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে মন্ত্রের অর্থ হচ্ছে সেই সত্তা যা তোমাকে স্থায়ীভাবে মুক্তি প্রদান করবে৷ এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ৰন্ধন থেকে তুমি চিরস্থায়ী নিবৃত্তি পেয়ে যাবে৷ আমি আরও বলেছিলুম যে ভারতীয় বর্ণমালায় সব ধ্বন্যাত্মক অভিব্যক্তিই মন্ত্র পদবাচ্য৷

সামাজিক সুবিচার ঃ নারী

অধিকাংশ জীবের মত মানুষের সমাজেও নারীরা শারীরিক বিচারে পুরুষের চাইতে দুর্বল৷ স্নায়ুর দুর্বলতার জন্যে মনও তাদের কিছুটা দুর্বল৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও সমাজের কাছে তাদের মূল্য পুরুষের চাইতে এক পাইও কম নয়৷ স্বার্থপর পুরুষ কিন্তু এই মূল্যবোধের অপেক্ষা না রেখে নারীর দুর্বলতার সুযোগটুকুই ষোল আনা নিয়েছে ও নিচ্ছে৷ মুখে মাতৃজাতি বলে’ ঘোষণা করলেও আসলে তাদের অবস্থাটা করে’ রেখেছে ঠিক গৃহপালিত গোরু–ভেড়ার মত৷ একথা খুবই সত্যি যে কতকগুলি বিশেষ ক্ষেত্রে যোগ্যতার অভাবের ফলেই নারীরা ধীরে ধীরে তার অধিকার বা স্বাধীনতা খুইয়ে বসেছে, আর এই জন্যেই যাঁরা বিশেষ বিশেষ কতকগুলি যোগ্যতাকেই অধিকার প্রাপ্তির একমাত্র চাবিকাঠি হিস

কেন্দ্রীয় আয়-ব্যয় মাত্রিকার উদ্দেশ্য

আচার্য সত্যশিবানন্দ অবধূত

আগামী ২০২১-২২-এর কেন্দ্রীয় আয - ব্যয়-মাত্রিকার (বাজেট) সবচেয়ে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি চোখে পড়ল, তারমধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখনীয় হ’ল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ঘোষণা করলেন, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে ব্যাপকভাবে পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে৷ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত,সংস্থাগুলির মধ্যে ৪টি মাত্র ষ্ট্রাটেজিক (জাতীয় স্বার্থে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ,শিল্পের ক্ষেত্রে সরকার সামান্য অংশীদাদায়িত্ব রাখবে,বাকি সবগুলির বেসরকারীকরণ করা  হবে৷

২০২১-২০২২ আর্থিক বছরের  বেচারামের  দিশাহীন কেন্দ্রীয় বাজেট

প্রভাত খাঁ

ভারতে করোনার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার এর ২০২১-২২ সালের আর্থিক বছরের আয়ব্যয়মাত্রিকা পেশ করা হয়েছে মাননীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতার মনের দ্বারা৷ এই আয়ব্যয় মাত্রিকা বেশ কিছুক্ষেত্রে  বিলগ্ণিকরণের উল্লেখ আছে৷ এতে যে দেশের হতদরিদ্র লোক প্রাণে বাঁচার সুযোগ পাবেন তা আশা করাই বৃথা, কারণ দেশটি চলছে পুঁজিবাদী শাসকদের দ্বারা৷ অদ্যাবধি দেখা যাচ্ছে এ সরকার যা করে চলেছেন তা সকল ক্ষেত্রে ধনীদেরই জয় জয়কার৷ সরকার আর্থিক  ক্ষেত্রে একেবারেই জি.ডি.পির মান শূন্যের নীচে এ দাঁড় করিয়েছেন৷ লক্‌ডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ১২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ৷ কিন্তু ১০০ জন ধনকুবের লক্‌ডাউনে ৩৫ শতাংশ সম্পদ বাড়িয়েছেন৷ সম্প্রতি অক্সফ্যাম ‘

যত রঙ্গ এই বঙ্গে

জ্যোতিবিকাশ সিনহা

২০২১ সনের সূচনা বিভিন্ন দিক দিয়ে অত্যন্ত অর্থবহ৷ সমগ্র ২০২০ সাল ধরে অতিমারি করোনার মারণ তাণ্ডবের পর এই বছরেরই  প্রথম মাস জানুয়ারির ১৬ তারিখে ভারতে করোনা-প্রতিষেধক  প্রয়োগের আনুষ্ঠানিক শুভারম্ভ করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রীযুক্ত নরেন্দ্র মোদী৷ অবশ্য জানুয়ারি মাসটি সারা বিশ্বে তথা বঙ্গদেশসহ ভারতবর্ষে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে৷ এই মাসেরই প্রথম দিন পৃথিবীর সব দেশে ইংরেজী দিনপঞ্জী মতে বছরের প্রথম দিন হিসেবে স্বীকৃত৷ এছাড়াও এই দিনটিকে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ‘‘কল্পতরু দিবস’’ হিসাবে পালন করা হয়৷ ১৮৮৬ সালের ১লা জানুয়ারি উত্তর কলকাতার কাশীপুর উদ্যানবাটীতে  শ্রীরামকৃষ্ণ কল্পতরুরূপে  ভক্তগণকে আশীর্বাদ কর

কমলপুরে তত্ত্বসভা ও অখণ্ড কীর্ত্তন

গত ৬ই ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় ত্রিপুরার ধলাই জেলার কমলপুর আনন্দমার্গ স্কুলে একটি তত্ত্বসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ সভায়  আলোচনার বিষয় ছিল ‘কৃষ্ণতত্ত্ব গীতা সার’, কীর্ত্তন মহিমা, ব্যষ্টি ও পারিবারিক জীবনে আধ্যাত্মিক অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তা৷ বর্তমান সামাজিক সংকট, ধর্মীয় অনাচার থেকে মুক্ত এক সুস্থ সবল শান্তিময় জীবন যাপনে আধ্যাত্মিক অনুশীলন একান্ত প্রয়োজন৷ আলোচ্য বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন আচার্য জগন্মিত্রানন্দ অবধূত ও আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত৷ দীর্ঘক্ষণ ব্যাপী আলোচনায় উপস্থিত সকলে গভীর আগ্রহের সঙ্গে শোনেন ও মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনচর্র্চর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন৷

দেশের মধ্যে প্রথম বাঙলার স্বর্ণালী

উত্তর ২৪ পরগণা জেলার কাঁচরা পাড়ার মেয়ে স্বর্র্ণলী দে, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ছাত্রী৷ পিতা অধ্যাপক বিশ্বজিত দে, মাতা সুবর্ণা দে৷ জয়েন্ট সি.এস.আই আর ইউ.জি.সি নেট জুন ২০২০ সর্বভারতীয় পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন স্বর্ণালী৷ এই পরীক্ষাটি হওয়ার কথা ছিল গত জুন মাসে৷ কিন্তু করোনার কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে যায়৷ অবশেষে গত ২১শে নভেম্বর ২০২০, পরীক্ষা হয়৷ পরীক্ষার ফলপ্রকাশে দেখা যায়  স্বর্র্ণলী প্রথম স্থান পেয়েছে৷ স্বর্র্ণলী বর্তমানে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে প্ল্যান্ট ফিজিওলজির ওপর গবেষনা করছেন৷ এই কলেজ থেকেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম স্থান পেয়ে এম.এস.সি পাশ করেন ২০১৭-১৯ বর্ষে৷

করোনা ভীতি কাটিয়ে খুলছে স্কুল

আজ থেকে রাজ্য সরকারী ও বেসরকারী স্কুলের এক অংশে ক্লাস শুরু হচ্ছে৷ স্কুলে এসে ক্লাস করার অনুমতি রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে দিয়েছেন৷ দীর্ঘ এগারো মাস স্কুল বন্ধ থাকার পর আবার ক্লাস শুরু হচ্ছে৷ করোনা যেহেতু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ব্যাপার তাই এব্যাপারে অভিভাবকদের সম্মতি নিয়েই ক্লাস শুরু হবে৷ আপাতত নবম থেকে দ্বাদশশ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস শুরু হচ্ছে৷ অবস্থা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে শিক্ষাদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে৷ বিভিন্ন স্কুল কর্ত্তৃপক্ষ থেকে জানা যাচ্ছে অধিকাংশ অভিভাবকই স্কুলে এসে ক্লাস করার সম্মতি দিয়েছেন৷ এবছরে সরকার স্কুলে সরস্বতী পূজারও অনুমতি দিয়েছেন৷

মার্গীয় বিধিতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান

আগরতলা শহরের অরুন্ধুতীনগরের বাসিন্দা একনিষ্ঠ আনন্দমার্গী রামকৃষ্ণ দেবনাথের পরলোকগত মাতৃদেবী শ্রীমতি সুমিত্রা দেবনাথের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান আনন্দমার্গে চর্যাচর্য বিধি মতে অনুষ্ঠিত হয় গত ৮ই ফেব্রুয়ারী৷ প্রভাত সঙ্গীত  কীর্ত্তন ও মিলিত সাধনার পর মার্গগুরু দেবের রচনা থেকে পাঠ করে শোনান আচার্য সর্বজ্ঞানানন্দ অবধূত৷ আনন্দমার্গের সমাজশাস্ত্র ও জীবনদর্শন বিষয়ে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত৷ শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন ব্রহ্মচারিনী সত্যাপ্রিয়া আচার্যা৷ অনুষ্ঠান শেষে দুঃস্থ মানুষদের হাতে পরণের বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়৷