April 2021

গণতান্ত্রিক নির্বাচন

বলা হয়, গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের জন্যে, জনগণের দ্বারা, জনগণের শাসন৷ শূদ্র যুগের পর গোষ্ঠীপতিদের হাতে ক্ষমতা স্থানান্তরিত হয়৷ কালক্রমে গোষ্ঠীপতিরা সামন্ত রাজা হয়ে পড়ে৷ রাজতন্ত্রের অত্যাচারের বিরুদ্ধ মনোভাব থেকে গণতান্ত্রিক মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে৷ গণতন্ত্রের ইতিহাস অতি প্রাচীন৷ কথিত হয় যে প্রাচীন ভারতবর্ষে লিচ্ছবী রাজবংশের সময়ে গণতন্ত্রের সূত্রপাত হয়৷ অত্যন্ত প্রাচীন সংঘটন বলে এতে কিছু বিকৃতি আসা মোটেই অস্বাভাবিক নয়৷

নববর্ষের অঙ্গীকার

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

 আর একটা বছর বছর অতিক্রম করে এসে গেল বাঙ্লার শুভ নববর্ষ৷ বাংলা ১৪২৭ সাল পেরিয়ে আমরা ১৪২৮–এ পড়লুম৷ নোতুন বছরে পা দিলাম৷ এমনি এক বাংলা নববর্ষের প্রবচনে প্রাউট–প্রবক্তা পরম শ্রদ্ধেয় শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার যিনি একাধারে মহান দার্শনিক, ইতিহাসবিদ্, ভাষাতত্ত্ববিদ্, শিক্ষাবিদ্, সঙ্গীতকার, যিনি মহাসম্ভূতি শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী রূপে সমধিক পরিচিত, তিনি আত্মবিস্মৃত বাঙালী জাতি সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘বাঙালী নামধেয় জনগোষ্ঠী অতীতে জীবিত ছিল, আজও জীবিত ও আমি আশা করব, ভবিষ্যতে আরও দুর্দান্তভাবে জীবিত থাকবে৷ সেই জনগোষ্ঠীকে নোতুন করে শপথ নিতে হবে–এই নোতুন বছরটা তারা কীভাবে আরও সফল করে তুলবে৷ নিজেদের অস্তিত্বকে কী

বিশ্বের সব মানুষের ধর্ম এক

প্রভাত খাঁ

আজ বলা হয় যে অত্যাধুনিক যুগে মানুষের সমাজ এসে পৌঁচেছে৷ সত্যই কি মানুষের সমাজ গড়ে উঠেছে? আর সত্যই কি মানুষ অতি আধুনিক যুগে এসে পৌঁচেছে? যদি সত্যই মানুষের সমাজ অতি আধুনিক যুগে পৌঁছাতো তা হলে এতো ঘৃণা, হিংসা, বিদ্বেষ, নরহত্যা হ’ত না৷

মানব সমাজ এক ও অবিভাজ্য–এ কথাটি যেমন অতীব সত্য, ঠিক তার পাশাপাশি দেশ কাল পাত্রের পরিবর্ত্তনের সাথে সংগতি রেখে ও ভৌগোলিক পরিবেশের তারতম্য অনুসারে তাদের আচার, ব্যবহার, খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে কিছুটা পার্থক্যও আছে তাকে মান্যতা দিতেই হয়৷ তাই তো বলা হয় বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য৷

বাঙালী আর কতকাল হিন্দী সাম্রাজ্যবাদের দলদাস হয়ে রক্ত ঝরাবে?

এইচ.এন.মাহাতো

সম্প্রতি কোচবিহার শীতলখুচিতে ভোট পর্ব চলাকালিন  শান্ত পরিবেশের মধ্যে এমনকি ঘটলো বিজেপির কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে তাজা ৪টি প্রাণ বাঙালীর মায়ের কোল খালি করে চলে গেল৷ রাজনৈতিক তর্জা অনেক কিছুই বলতে পারে৷ বর্তমান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এক ডজনের উপর বাঙালীর মৃত্যু হয়েছে৷ কেউ বলছে বিজেপি মারা গেছে৷ কেউ বলছে তৃণমূল আপনারা কী কখনো ভেবে দেখেছেন মৃতদেহটি জন্মসূত্রে কোনো পার্টির নয়৷ বাঙলায় জন্মেছে মানেই বাঙালী৷ বলুনতো বাঙালীরা আর কতকাল হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী পার্টির দলদাস হয়ে প্রাণ বিসর্জন করে চলবে?

ভারতবাসীর মোহ নাশ ঘটবে কবে?

হরিগোপাল দেবনাথ

১৯৪৭ সালে বছরের মাঝামাঝি পার হয়ে এসে ভারত ব্রিটিশশাসনের নাগপাশ তথা সাম্রাজ্যবাদী উপনিবেশবাদী বন্দী দশা থেকে মুক্তিলাভ করেছিল৷ তবে, যেহেতু অতটুকু মুক্তি পেতে গিয়েই বহু বছর ধরে লাখো লাখো ভারতবাসীকে শারীরিক, মানসিক, বৌদ্ধিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আধ্যাত্মিক---সকল দিক থেকেই অপারিমেয় মাত্রায়  দুঃখ-কষ্ট ও লাঞ্ছনা ভোগ করতে হয়েছিল৷ অনশনে, অর্ধাশনে অসংখ্য মানুষকে তিলে তিলে মৃত্যুর কোলে নিজেদের শঁপে দিতে হয়েছিল৷ স্বাধীনতার দাবী নিয়ে আন্দোলন চালাতে গিয়ে হাজার হাজার প্রাণ বলি হয়েছে, দ্বীপান্তরে নির্বাসনে যেতে হয়েছে---ব্রিটিশের বুলেটের ঘায়ে মরণকে আলিঙ্গন করতে হয়েছে---কাউকে বা আহত হয়ে

ভয়ঙ্কর ফ্যাসিষ্ট শোষক ধেয়ে আসছে  বাঙলায়

মনোজ দেব

মার্কস শোষণ বলতে ভেবেছিলেন---শ্রমিক শ্রেণীকে ন্যায্য পাওনা না দিয়ে পুঁজিপতিরা যে মুনাফা লোটে সেটাই শোষণ৷ এটাও শোষণ কিন্তু এই শোষণের আগেও আরও শোষণ আছে৷ শোষণের সঠিক সংজ্ঞা একমাত্র প্রাউটের দৃষ্টিকোণ থেকেই পাওয়া যায়৷ প্রাউট প্রবক্তার ভাষায়---একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমার মধ্যে অবস্থিত তথাকার জনগোষ্ঠীর দৈহিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশকে স্তম্ভিত করে, ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর শ্রম ও মানসিক সম্পদের অবাধ লুণ্ঠনই হ’ল শোষণ৷

যদুলাল দেবনাথের মাতৃবিয়োগ

দক্ষিণ ত্রিপুরার গুয়াচাঁদের বিশিষ্ট আনন্দমার্গী যদুলাল দেবনাথের মাতৃদেবী বিরজা সুন্দরী দেবী গত ১১ই এপ্রিল নিজ বাসভবনে পরলোক গমন করেন৷ মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০৭ বছর৷ বেশ কিছুদিন তিনি বার্দ্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন৷ তিনি  পাঁচপুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জননী ছিলেন৷ তাঁর দুই পুত্র ও কন্যা আগেই গত হয়েছেন৷ ওইদিন অপরাহ্ণে পারিবারিক সমাধিক্ষেত্রে মার্গীয় বিধিতে তাঁর শবদেহের সৎকার্য সম্পন্ন  হয়৷

দেশের শাসকগণ নির্বাচন করছেন না জনগণের সঙ্গে ঠাট্টা তামাশা করছেন সেটা বোঝা যাচ্ছে  না!

সঞ্জয় দেব

পশ্চিমবাঙলার রাজ্য নির্বাচনটাকে এক ভয়ঙ্কর কুৎসিত দলবাজির যাকে নেতা ও অভিনেতাগণ বলেন খেলা বা খেলযুদ্ধ সেই খেলাটা চলছে কয়েকমাস ধরে করোনার কবলে আক্রান্ত পশ্চিমবাঙলায়৷ এটা আবার অনেকে কুরুক্ষেত্রের অসম যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করছেন৷ তবে স্মরণে রাখা দরকার কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বাঙালীরা অংশগ্রহণ করেনি৷ প্রাগজ্যোতিষপুরের রাজা খাদ ও যিনি নরকাসুরের পুত্র ছিলেন তিনি কৌরবদের পক্ষ গ্রহণ করেন৷ এই প্রাগজ্যোতিষপুরটি ছিল উত্তর বাঙলা ও অসমে অবস্থিত৷ শ্রীকৃষ্ণ নাকি নরকাসুরকে দমন করেন তাই তার পুত্র ক্ষুদ্ধ হয়ে কৌরবদের পক্ষ নেন ও যুদ্ধে হস্তি যোগান দেন৷

জাতিভেদ ও নারীর মর্যাদা হ্রাস

(মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার তাঁর শব্দ চয়নিকা–২৬ খণ্ড গ্রন্থের বিভিন্ন স্থানে ‘নারীর মর্যাদা’ বিষয়ক অনেক কিছুই বলেছেন৷ ওই গ্রন্থ থেকে কিছু অংশ সংকলিত করে প্রকাশ করা হচ্ছে৷

–সম্পাদক)

বাংলা নববর্ষ (১৪২৮)

কৌশিক খাটুয়া

নববর্ষের প্রথম প্রভাত আলো,

ধুয়ে মুছে দাও অতীতের গ্লানি

হৃদয়ে  প্রদীপ জ্বালো৷

সুখ-দুঃখের ঘটনা প্রবাহে

ভরে রবে এই মন,

প্রভুর বরণে রবির কিরণে

উজ্জীবিত ত্রিভূবন৷

মিলন মেলায় মিলেছে মানুষ

বিভেদকে ফেলে দূরে,

প্রীতি-বন্ধনে, অভিনন্দনে

সংহতি গীতি সুরে৷

আজ বর্ষের প্রথম সূর্র্য্যেদয়ে

সব সংশয় দূর করে হব

উদ্দিপীত  বরাভয়ে৷