সম্পাদকীয়

দায় কার!

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

সম্প্রতি মনিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরান ও উত্তরপ্রদেশে যুবকের মুখে প্রস্রাব করে দেওয়া, দুই বালককে বোতলে প্রস্রাব ভোরে জোর করে খাওয়ানো--- এ সমাজ কোথায় চলেছে! মনুষ্য নামধারী দ্বিপদ জীবের এ কেমন আচরণ! মানব আধারে এই পাশবিকতার দায় কার? সমাজ কোন পথে চলেছে৷ এ থেকে পরিত্রাণের পথ কি?

সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার কবে প্রতিষ্ঠিত হবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী দেশ শাসনের জন্যে ভারতের নিজস্ব সংবিধান প্রবর্ত্তিত হয়৷ তারপর ৭৩ বছর অতিবাহিত হয়েছে৷ আজ দেশের নাগরিককে নাগরিকত্বের প্রমাণের জন্যে লাইনে দাঁড়াতে হবে৷ সীমাহীন অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক বিভাজন ও রাজনৈতিক সংঘাতে প্রতিনিয়ত পদদলিত হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার৷ পরিতাপের বিষয় এই যে শাসক দলের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদতে এগুলি হয়ে চলেছে৷ অথচ শাসক দলেরই প্রধান দায়িত্ব সংবিধানের অঙ্গীকারগুলি পালন করা৷ মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করা৷

ভয়ঙ্কর ফ্যাসিষ্ট শোষনের শিকার বাঙালী জনগোষ্ঠী

মনোজ দে

মার্কস শোষণ বলতে ভেবেছিলেন - --শ্রমিক শ্রেণীকে ন্যায্য পাওনা না দিয়ে পুঁজিপতিরা যে মুনাফা লোটে সেটাই শোষণ৷ এটাও শোষণ কিন্তু এই শোষণের আগেও আরও শোষণ আছে৷ শোষণের সঠিক সংজ্ঞা একমাত্র প্রাউটের দৃষ্টিকোণ থেকেই পাওয়া যায়৷ প্রাউট প্রবক্তার ভাষায়---একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমার মধ্যে অবস্থিত তথাকার জনগোষ্ঠীর দৈহিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশকে স্তম্ভিত করে, ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর শ্রম ও মানসিক সম্পদের অবাধ লুণ্ঠনই হ’ল শোষণ৷

বিকৃত মানসিকতা বীভৎস অত্যাচার–প্রতিকারের পথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

নির্ভয়াকাণ্ড থেকে মনিপুর রাজনৈতিক দল থেকে কবি সাহিত্যিক শিল্পী প্রতিবাদে মুখর সমাজের সর্বস্তরের মানুষ৷ তবু এই ধরণের বর্বরতার অবসান হচ্ছে কই বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে৷ শুধু সংখ্যায় নয়, বর্বরতা নৃশংসতার মাত্রাও৷

আসলে সমাজ থেকে এই কদর্যতা নির্মূল করার আন্তরিক প্রচেষ্টা কি প্রশাসন, কি রাজনৈতিক দল ও বুদ্ধিজীবী সমাজ কারো মধ্যেই নেই৷ নেই, কারণ যুবসমাজকে এই কু–পথে নামানোর দায় এইসব কবি,সাহিত্যিক, শিল্পী ও রাজনৈতিক দাদা–দিদিরা অস্বীকার করতে পারে না৷

দার্জিলিং  জিটিএ পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা৷

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পর পাহাড়ে সুভাষ ঘিসিং এর উদয়৷ তাকে শান্ত করতে তৈরী হয় গোর্খা হিল কাউন্সিল৷ কয়েক বছর চলার পর নূতন করে উদয় হলো বিমলগুরুং৷ তাকে ঠাণ্ডা করতে জিটিএ অতপরঃ! গোর্র্খদের আন্দোলন দেশদ্রোহী বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন৷ ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের  অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ দার্জিলিং৷ আর গোর্র্খরা বিদেশী--- নেপালের লোক৷ রুজি রোজগারের ধান্দায় দার্জিলিং এসেছে৷ এতো বিদেশীদের আগ্রাসী আন্দোলন যা কোন মতেই সহ্য করা যায় না ৷ ওরা নেপালের লোক৷ নেপালে গিয়ে গোর্খাল্যান্ড করুক৷

একের আধিপত্য মানুষ মেনে নেবে না

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

প্রাউট দর্শনের প্রবক্তা মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন---‘‘বৈচিত্র্যং প্রাকৃত ধর্মঃ সমানং ন ভবিষ্যতি৷’’ বৈচিত্রই প্রকৃতির ধর্ম৷ সৃষ্ট জগতের কোনও দুটি বস্তু হুবহু এক নয়৷ দু’টি মন এক নয়, দুটি অণু বা পরমাণুও এক নয়৷ এই বৈচিত্র্যই প্রকৃতির স্বভাব৷ যদি কেউ সবকিছুকে সমান করতে চায় সেক্ষেত্রে প্রাকৃত ধর্মের বিরোধিতা করায় অবশ্যই ব্যর্থ হবে৷ সব কিছু সমান কেবল প্রকৃতির অব্যক্ত অবস্থায়৷ তাই যারা সব কিছুকে সমান করার কথা ভাবে, তারা সব কিছুকেই ধবংস করার কথা ভাবে৷ .....সবাইকে যেমন এক ছাঁচে ঢালা যাবে না, তেমনি বৈচিত্র্যের ধূয়ো তুলে কেউ যাতে শোষণ করতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে৷ বৈচিত্র্য স

মানবধর্মের সাধনাই বিশ্বৈকতাবাদ প্রতিষ্ঠা করবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বর্তমানে ধর্মের নামে নানান ধরণের গোঁড়ামী, জাত–পাতের ভেদ ও সাম্প্রদায়িক বিভেদ ও বিদ্বেষ চলছে৷ অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারের জালে জড়িয়ে আঁতুড় ঘর থেকে শশ্মানঘাট পর্যন্ত শোষনের জাল বোনা হয়েছে৷ অপ্রয়োজনীয় সামাজিক আচরণের বোঝাকে ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে বলা হচ্ছে৷ তা কিন্তু  মোটেই ঠিক নয়৷

ত্রিস্তরীয় উন্নতি চাই

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মানুষের অস্তিত্ব ত্রিস্তরীয়---শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক৷ মানুষের উন্নতি মানে এই ত্রিস্তরীয় সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নতি৷ এই সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নতি যদি না থাকে তাহলে উন্নতির পরিবর্তে অবনতি হবে৷ বর্তমানে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির হাত ধরে বা আধুনিকতার ছাপ মেরে যে বিপুল উন্নতির বড়াই আমরা করি এই তথাকথিত উন্নতি যে অনেক জটিল প্রশ্ণের সম্মুখে আমাদের দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, তা আজ কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না৷ তার কারণ একটাই৷  বাড়ী, গাড়ী, রাস্তা-ঘাট, পোষাক-পরিচ্ছদ, নানান্‌ সুস্বাদু খাওয়া-দাওয়া এসবের জাঁকজমকের পাশাপাশি দুর্নীতি, যৌন কেলেঙ্কারী, মানবিকতার অভাব, শোষণ, খুন-জখম এসবও যে মহামারীর মত ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে

আত্মনির্ভরতা---জনগণের সঙ্গে প্রতারণা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে দেশের বয়স্ক মহিলাদের প্রায় ৮০ শতাংশ আর্থিক স্ব-নির্ভরতার অভাবে সংসারে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত হয়৷ দেশের প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে আত্মনির্ভরতার বুলি জনগণ শুনে আসছে৷ কিন্তু পুঁজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রিত অর্থনৈতিক কাঠামোময় মানুষের পক্ষে আর্থিক স্বনির্ভর হওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়৷ কারণ দেশের অর্থনীতি পুঁজিবাদী ধনকুবেররাই নিয়ন্ত্রণ করে৷ তাই শুধু মহিলারাই নয়, সমগ্র দেশবাসীই ধনকুবেরদের শোষণে জর্জরিত৷

আদর্শ নেতৃত্বের অভাবে দেশ ডুবছে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন শুধু মোদি সরকারের আমলেই বা বলি কেন স্বাধীনতার পর থেকে অর্র্থৎ সেই গান্ধী নেহেরুর আমল থেকে বর্তমানে মোদির আমল পর্যন্ত এই ৭৬ বছর ধরে দেশীয় শাসনে ভারতের ২৭ কোটি মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পায় নি---এখন তারা ক্ষুধার শিকার৷ তারা প্রত্যহ রাতে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমোতে যায়--- ক্ষুধা নিয়ে জাগে৷

অথচ মুষ্টিমেয় কয়েকজন ধনকুবের দেশে সিংহভাগ সম্পদ দখল করে আছে৷

দেশের বিশাল এক অংশ আজ চরম দারিদ্রের শিকার৷ দেশের অধিকাংশ ছাত্র-যুবা বেকারত্বের জ্বালায় জ্বলে পুড়ে মরছে৷ জীবনকে সুন্দর করে বিকাশের কথা ভাববার অবসর নেই তাদের৷  ---অন্নচিন্তা চমৎকারা !