আজও জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন না হন তা হলে মিথ্যাচারী শাসকগণ তাঁদের শোষণ করেই যাবে

লেখক
নিরপেক্ষ

আজ যাঁরা অতি প্রবীণ তাঁরা দেখছেন ও বুঝছেন যে, বর্তমানে দেশের যাঁরা শাসক ও ভাগ্য বিধাতা তাঁরা প্রতিপদে পদে ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন আর বড়ো বড়ো খবরের কাগজে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন৷  সারা ভারতের ১৩৫ কোটি মানুষের মধ্যে শতকরা ৯০ শতাংশ মানুসের পেটে  দুবেলা অন্ন জোটে না৷ বাস্তবের মাটিতে যে ভয়ঙ্কর অভাব অনটন  সেটা বুঝতে  তিলমাত্র সময় লাগে না৷ অসহায় জনগণ শাসকদলের ধাপ্পাবাজিকে নীরবে ধিক্কার জানান৷

সারা পৃথিবীর সচেতন মানুষরা এইসব দেখে ভারতের  গণতান্ত্রিক শাসনের যে চরম ব্যর্থতা সেটাকে তুলে ধরেন  তাঁদের সমালোচনা ও যুক্তিবাদী লেখনী ও বক্তব্যের মধ্য দিয়ে৷ তবুও এদেশের চরম ব্যর্থ ও ভণ্ড শাসকদের চেতনা  ফেরে না! কারণ বর্তমানের যুবক-যুবতীরা তাঁদের গ্রাহ্য করেন না৷ বর্ত্তমানে করোনা ও আর্থিক দুরাবস্থার মধ্য দিয়ে যে এদেশের  হতভাগ্য জনগণ দিন যাপনের গ্লাণী বহন করে চলেছেন সেদিকে মিথ্যাচারী দলীয়  শাসকদের কোন নজর নেই৷  নির্বাচনে শুধু বোটে জিততে এদের ধান্দাবাজী৷  সেই কারণে বিজেপি শাসক নিম্নমানের মিথ্যাচারিতাকে প্রচারের মাধ্যম করে বেড়াচ্ছেন  উত্তর প্রদেশে নির্বাচনে জিতে যাবার জন্য৷ এতে কি উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে ভণ্ডদের? সেই ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট যে ভয়ংকর মিথ্যাচারিতার মুখোশে এদেশের মানচিত্রে যে অখণ্ড ভারতবর্ষ ছিল তাকে টুকরো টুকরো করে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে শোসক ইংরেজের হাত থেকে শাসনের দায়িত্ব নেন সেদিনের এদেশের দেশ নেতারা যথা  কংগ্রেস ও মুসলীমলীগের তাঁরা ও দেশমাতাকে রক্তাক্ত করে কোটি কোটি জনগণকে  মিথ্যা স্তোক বাক্য দিয়ে ছিলেন যে তাঁরা এদেশে স্বাধীনতা আনয়ন করেছেন চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ! আর শাসন হাতে পেয়ে সেই দিন থেকেই  এদেশের  শাসকরা হতদরিদ্র মানুষদের ঠকিয়েই আসছেন নানা মিথ্যা ছলচাতুরীর মধ্য দিয়েই৷ হতভাগ্য হতদরিদ্রদের অদ্যবধি কোন দলীয় রাজনৈতিক নেতাই তাঁদের জন্য তিলমাত্র চিন্তাই করেননি আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে৷ শুধু    গদী সামলাতে আর উচ্চবর্ণের ধনীদের  তোষণ করতেই কোটি কোটি হতদরিদ্রদের নির্মমভাবে শোষণ করেই চলেছেন৷ তাই মাত্র ১ শতাংশ ধনী আরো ধনী হচ্ছেন সেই সুযোগে তাঁরাই সেই ধনীরাই এদেশের শাসকদের বাঁচিয়ে রেখেছেন নামকেওয়াস্তে গণতন্ত্রের ছত্রচ্ছায়ায়৷ দেখা যায় ঐ ধনীদের সাঙ্গ পাঙ্গরা রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়ে এম.এল.এ ও এমপি হচ্ছেন আর তাঁরাই মন্ত্রী,উপমন্ত্রী হয়ে দেশটাকে লুটে পুটেই খাচ্ছেন! বর্তমানের মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে তো  শাসক দলেরই নিজেদেরই বাড়ির হচ্ছেন আর তাঁরাই মন্ত্রী, উপমন্ত্রী হয়ে দেশটাকে লুটে পুটেই খাচ্ছেন!

বিজেপি সরকার কেন্দ্রে আসীন হয়ে দেশের কি উন্নতিটা করতে পেরেছেন? সংবাদ পত্রেই দেখা যাচ্ছে মোদির টুইটারে হ্যাকার হানা! আর ১৫ লক্ষের প্রতিশ্রুতির মতই টিকা করণের  ভুয়োদাবী! কারণ আগামী নির্বাচনে গদী সামলাতে তো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া শাসক বিজেপির হাতে অন্য কিছুই নেই৷

হত দরিদ্রদের ও প্রবীণদের সেই একটাই প্রশ্ণ এমন করে আর কতো দিন মিথ্যার এই মহান ভারতে চলবে? এর কি কোন প্রতিকার নেই? জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধ না হন আর সচেতন হয়ে যদি বোট দান না করেন তাহলে এই মিথ্যার রাজত্বই জনগণের রক্তমোক্ষন করে যাবেই৷ প্রথমেই বলি নোংরা দলবাজিটাই দেশটাকে  ধবংস করে চলেছে৷ এর জন্যে কম-বেশী সব দলই দায়ী৷ তাই বর্তমানের রাজনৈতিক দলগুলো কোনটি ভাল আর কোনটি মন্দ  তা মা ভগাই জানে৷ রাজনৈতিক দলগুলির অধিকাংশই ইংরেজদের তাঁবেদার ধনীদের দল৷ তারাই আজও শাসন চালাচ্ছে গণতন্ত্রের নামে৷ আর যারা বামপন্থী তাদের মধ্যেও ঐ ধনীদের বর্তমানে বেশ প্রভাবও আছে৷ কারণ অর্থযোগান ঐ ধনীরা দিয়ে থাকে তাঁদের নিরাপত্তার কারণে৷ অনেক জমিদারের বংশোধরগণই রাজনীতিতে যোগ দেন নানা কারণে৷ তাই হতদরিদ্র কোটি কোটি জনগণ তাদেরই কৃপার ওপর নির্ভর করে৷

তবে জওহরলাল নেহেরুর প্রধান মন্ত্রীত্বে যে ১৯৫০ সালে  সংবিধান হয় দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে বিভক্ত ভারত যুক্তরাষ্ট্রের , সেটার মধ্যে তাঁর অবদানকে  অস্বীকার করার নেই৷ সেটা হল ধর্মমত নিরপেক্ষ সংবিধান৷ এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিশেষ দিক হচ্ছে বহুভাষাভাষী ও বহুধর্মমতে বিশ্বাসী ভারতে জনগণ তাঁদের নিরাপত্তাটাই বেশী প্রয়োজন৷ এটা মহান সংবিধান দিয়েছেন অনেক ভাবনা চিন্তা করে তবে দুঃখের  কথা যাঁরাই কেন্দ্রে শাসনে এসেছে তারাই কিন্তু দলবাজিটা করে গেছে সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে সংবিধান ঘনঘন সংশোধন করে৷  তাতে ভারতের ক্ষতিটা অদ্যাবধি অনেক হয়েছে৷ আর গণতন্ত্রের ছত্রচ্ছায়ে স্বৈরাচারী সরকার উঁকি মারে এদেশে৷ সেটা কংগ্রেস আমলে হয়েছে আর জনতা দলের চলে যাওয়ার পর বিজেপি ভারতীয় জনতা দলের মধ্যে তো প্রকট হচ্ছে৷ এটাই মারাত্মক অকল্যাণকর দৃষ্টান্ত৷ সেটা কিন্তু দলগুলো বুঝেও বোঝে না৷ হতদরিদ্র জনগণ আজ পর্যন্ত প্রকৃত গণতন্ত্রের কোন সেবাই পায়নি৷ শুধু তাই নয় আজ দলগুলির জাতীয় দল হয়েছে সেগুলি ধবংস হলো কেন সেটার আত্মসমীক্ষা কিন্তু জাতীয় দলগুলো করে না৷ তাই কংগ্রেস কমিউনিটি ও বিজেপি সেটা করার প্রয়োজন মনেই করে না তাঁদের সংকীর্ণ মানসিকতার জন্য৷ তাই সেই দলগুলির ব্যর্থতাই আঞ্চলিকতাকেই বাড়িয়ে তুলেছে  যেটা বিরাট ভারতের পক্ষে  মোটেই কল্যাণকর নয়৷ সেগুলি হয়তো এককালে ভারতকে টুকরো টুকরো  করে বসবে৷ তাই আজ বিশ্বৈকতাবোধে সেই প্রাচীন ভারতের অধ্যাত্মবাদকে শিরোধার্য করে সমগ্র ভারতকে চালাতেই হবে৷ সেটি মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার তাঁর আধ্যাত্মিকতা ভিত্তিক সামাজিক অর্থনৈতিক তত্ত্ব প্রাউটে দিয়ে গেছেন৷ যেখানে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের নানা ভাষা কৃষি সংস্কৃতির প্রতিটি জনগোষ্ঠী সম-অধিকার নিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে জীবন যাপন করতে পারবে৷ দেশের জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করার দায়িত্ব প্রাউটিষ্টদেরই নিতে হবে৷