অসমে বাঙালীদের অবস্থা রোহিঙ্গাদের মতো  ঃ আমরা বাঙালী, অসমে শুদ্ধ নাগরিকপঞ্জী দেওয়ার ব্যাপারে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

অসম সরকার  শুদ্ধ নাগরিকপঞ্জী দিতে পারবে না বলে আশংকা প্রকাশ  করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও ৷ নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত খসড়ায়  অনেক ভারতীয়ের  নাম বাদ পড়বে বলে তিনি আশংকা করেছেন ৷ তিনি বলেছেন, মুসলমানদের  পাশাপাশি  হিন্দু বাঙালীদের নামও  বাদ পড়বে৷ তাই একটা বিষয়  পরিষ্কার যে  অসমের  বিজেপি  সরকার  শুদ্ধ নাগরিকপঞ্জী প্রকাশ  করতে অসমর্থ৷ ইতোপূর্বে অসমে  নূতন নাগরিকপঞ্জী থেকে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ বাঙালীর  নাম বাদ পড়েছে৷  তাদের  নাগরিকত্ব হরণের  প্রতিবাদে অসমে ‘আমরা বাঙালী’ সহ  বিভিন্ন বাঙালী সংঘটন  ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিক্ষোভ  আন্দোলনে  সামিল হয়েছে৷

গত ২৭শে মার্চ  দিল্লির প্রেসক্লাবে ‘আমরা বাঙালী’ জাতীয় কংগ্রেস , বিজেপি  ও সিপিএম-এর প্রতিনিধি সহ  বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা সভা  হয়েছে৷ ওই আলোচনা সভায়  সর্বসম্মতি ক্রমে  অসমে বাঙালীদের  নাগরিকত্ব হরণ ও মানবাধিকার  লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে  তীব্র প্রতিবাদ  জানানো হয়েছে৷

‘আমরা বাঙালী’ অসম রাজ্য সচিব সাধন পুরকায়স্থ এই পরিপ্রেক্ষিতে  জানাচ্ছেন, ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চকে ভিত্তি করে  অসমে যে নাগরিকপঞ্জীর কাজ চলছে  তাতে  অসমে বসবাসকারী প্রায় দেড় কোটি  বাঙালীকে  বিদেশী ঘোষণা করে  আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিয়েছে৷ ইতোমধ্যে  অনেকে আত্মহত্যাও করেছেন৷ বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার যদিও ২০১৫ সালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আগত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের (যারা ২০১৪ সালের  ৩১শে ডিসেম্বর অবধি  ভারতে এসেছে তাদের) ভারতের বৈধ নাগরিকত্ব দানের নোটিফিকেশন জারী করেছেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাকে কোনো সুনির্দিষ্ট আইনে পরিণত করেননি৷ কেন্দ্রীয় সরকারের এই ঘোষণা সত্বেও অসম সরকার ১৯১৭ সালের ২৪ শে মার্চকে ভিত্তি বৎসর  ধরে  নূতন নাগরিকপঞ্জী তৈরী  করে অসমে  বসবাসকারী  ১কোটি ৩৯ লক্ষ বাঙালীর  ভারতীয় নাগরিকত্ব কেড়ে  নিয়েছে৷ এখন এই প্রায় দেড় কোটি বাঙালীর আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকছে না৷ দেশভাগের  সময়কার পরিস্থিতি থেকেও  বর্তমান পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর  বলে আমরা মনে করি৷ রোহিঙ্গাদের চেয়েও খারাপ  পরিস্থিতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে৷

‘‘আমরা বাঙালী’’ দল এই ইস্যুতে সারা দেশে ঐক্যবদ্ধ বাঙালী আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান  রাখছে৷ তাঁর দাবী, অসহায় বাঙালীদের রক্ষার জন্যে পৃথক নাগরিকত্ব আইন চাই৷ এটাই একমাত্র সমাধান৷