জি.এস.টি. প্রসঙ্গে

লেখক
পি.এন.এ.


গত ৩০শে মার্চ লোকসভায়, সরকারপক্ষের সংখ্যাধিক্য থাকায়,  অর্থবিল ২০১৭ পাশ হয়ে গেল বিরোধীদের ৫টি সংশোধনী প্রস্তাব বাতিল করে দিয়ে, যেটি আগের দিন অর্থাৎ ২৯শে মার্চ রাজ্য সভায় গৃহীত হয়ে ছিল৷ এই বিলটিই জিএসটি বিল নামে পরিচিত৷ এটি কার্যকর হবে আগামী ১লা জুলাই থেকে৷ 
জি.এস.টি. কী?
গুডস্ সার্ভিস ট্যাক্স (জিএসটি) বা পণ্য সেবা কর যা প্রযোজ্য হবে পণ্য পরিষেবায়৷  এটি বর্তমানে চালু করগুলো যেমন এক্সাইজ্, ভ্যাট ও সারভিস্ ট্যাক্স---এদের পরিবর্তে ব্যবহার হবে৷ 
জিএসটি কেন?
বর্তমানে ভ্যাটের নিয়মাবলী বিভিন্ন রাজ্যর ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা৷ এতে সমস্যা হয় যখন কোনও পণ্য এক রাজ্য থেকে বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হয়৷ এছাড়াও ব্যবসায়ীদের এক্সাইজ্, ভ্যাট ও সারভিস্ ট্যাক্স এই তিনটি ক্ষেত্রেই কর দিতে বাধ্য করা হয়৷
জিএসটি  বিল সাড়া দেশে একটিই কর ব্যবস্থা চালু করবে৷ এর দ্বারা কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে আরম্ভ থেকে চুড়ান্ত পণ্য বিক্রী বা সরবরাহ পর্যন্ত পুরোটাই এই কর ব্যবস্থার আওতায় থাকবে৷ এর ফলে বড় উদ্যোগ থেকে ছোট ব্যবসায়ী সকলের ক্ষেত্রেই একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷ জিএসটি র লক্ষ্য হল পুরো অর্থনৈতিক কর ব্যবস্থায় সরলীকরণ৷
জিএসটি  কে দেবে?
পণ্য উৎপাদক ও বিক্রেতা৷ এছাড়া বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানকারী যেমন টেলিকম সেবা প্রদানকারী, পরামর্শ-কারী consultants), চাটার্ড এ্যাকাউণ্ট্যাণ্টস্ ইত্যাদি৷ যাইহোক, পরোক্ষ কর হিসাবে শেষপর্যন্ত উপভোক্তার ঘাড়েই এর বোঝা এসে পড়বে বর্তমান কর ব্যবস্থার মত৷
ভারতে কত রকম জিএসটি  থাকবে?
এখানে কানাডার মত দ্বৈত কর ব্যবস্থা অর্র্থৎCGST যা কেন্দ্রীয় সরকার গ্রহণ করবে ওSGST যা রাজ্য সরকার গ্রহণ করবে৷ এছাড়াওIGST যা প্রযোজ্য হবে আন্তঃ রাজ্য পণ্য বিক্রয়ের জন্য৷
ফলে কেন্দ্র-রাজ্য পণ্য হস্তান্তর ব্যবস্থাকে মসৃণ করবে৷
জিএসটি র করের হার কত হবে?
জিএসটি র করের হার এখনও লোকসভায় অনুমোদিত হয় নি যদিও এর প্রস্তাবিত হার (শতাংশে) হলঃ

স্তর       জিএসটি বর্তমান পণ্য
 ৯-১৫ পর্যন্ত ভোজ্য তেল, মশলা, চা, কফি
১২ ১৫-২১ কম্প্যুটার, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য
১৮ ১৫-২১ বিলাস সামগ্রী
২৮  ২১ বিলাসবহুল কার, তামাক, গ্যাস মেশানো পানীয়
 


জনসাধারনের সুবিধার কথা ভেবে খাদ্য দ্রব্যের ওপর কোনও কর ধার্য হবে না৷
জিএসটি র অসুবিধার দিকগুলো কী?
কোনও পরিবর্তনই সহজে হয় নি৷ যে সব দেশে ভারতের আগে জিএসটি  লাগু হয়েছে, সেই সব দেশে এই পরিবর্তন চলাকালীন  মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হয়েছে৷
যাইহোক জিএসটি তে মুনাফা-বিরোধী ব্যবস্থা থাকায় আশা করা যায় মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকে আটকে রাখা সম্ভব হবে৷
একবার জিএসটি পুরোদমে চালু হয়ে গেলে বর্তমানের অ-প্রত্যক্ষ করের যে অ-ব্যবস্থা, তা থাকবে না৷ তখন ভারতই হবে একমাত্র দেশ, যেখানে একমাত্র একটিই বাজার ও যেখানে দেশের এক প্রান্ত থেকে পণ্যের যাতায়াত করমুক্ত হবে৷