কোটশিলায় বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ২৬শে সেপ্ঢেম্বর কোটশিলায় স্থানীয় ‘বিদ্যাসাগর জন্মোৎসব উদ্যাপন কমিটি’র উদ্যোগে জিউদারু উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান ভবনে সারাদিন ব্যাপী এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়৷ কোটশিলা জিউদারু উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গুরুকুল বিদ্যাপীঠের ছাত্র-ছাত্রারা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে কোটশিলা বাজারে ও সংলগ্ণ পথ পরিক্রমা করে৷ এই উপলক্ষ্যে জিউদারি সুকল মোড়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্ত্তির আবরণ উন্মোচন করে আবক্ষ মূর্ত্তিতে মাল্যদান করেন প্রধান অতিথি আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের প্রবীণ সন্ন্যাসী আচার্য প্রসুনানন্দ অবধূত৷ প্রবীণ প্রাক্তন শিক্ষক শ্রী জ্যোতিলাল মাহাত ও অন্যান্যরা৷

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট প্রাক্তন শিক্ষক শ্রী জ্যোতিলাল মাহাত৷ প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত৷ বিশিষ্ট অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়া জেলার প্রজেক্ট অফিসার (ডি.পি.ও) শ্রী বিকাশ মজুমদার, সুরেন্দ্র মাহাত, কোটশিলা বিদ্যাসাগর দ্বিশত বর্ষ জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটির সভাপতি সুরেন্দ্র মাহাত ও সম্পাদক শ্রী সদানন্দ মণ্ডল প্রমুখ৷ বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে মাল্যার্পণ ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন প্রধান অতিথি আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত, বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দও বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ এরপর অতিথিদের চন্দনের ফোঁটা দিয়ে ও ব্যাজ পরিয়ে বরণ করে নেয় স্থানীয় হাইসুকলের ছাত্রাবৃন্দ৷ সমবেত সঙ্গীতের পর শুরু হয় আলোচনা সভা৷ বিভিন্ন বক্তারা বিদ্যাসাগরের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন৷ প্রধান বক্তা বলেন বিদ্যাসাগর ছিলেন বাঙলার নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ৷ তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষা, সেবা ও সমাজ সংস্কারের ত্রিবেণী সঙ্গম৷ তাঁর অন্যতম অবদান ছিল নারী শিক্ষার প্রসার ও বিধবা বিবাহ প্রচলন৷ বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার  অবক্ষয়ের চিত্রটি তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন বর্তমান শিক্ষার মূল সমস্যা কে শেখাবেন, আর কি শিখবেন? স্বাধীনতার ৭২ বছর পরেও দেশের সরকার এ বিষয়ে কোন স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি৷ যে যখন শাসন ক্ষমতায় আসে সে তখন তার দলীয় ছাঁচে শিক্ষা ব্যবস্থাকে গড়ে তোলে৷ ফলে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য থেকে দেশের শিক্ষানীতি অনেক দূরে৷ এখানে ছাত্রকে আদর্শ মানুষ অপেক্ষা দলীয় ক্যাডার ও কর্মী করে গড়ে তোলার মুখ্য উদ্দেশ্য৷ তারই ফলে শিক্ষার অঙ্গনে আজ এত উচ্ছৃঙ্খলতার প্রকোপ৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী প্রবর্ত্তিত নব্যমানবতাবাদী শিক্ষাদর্শের রূপায়নই মুক্তির একমাত্র পথ বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ তাঁর আলোচনা উপস্থিত অতিথিবৃন্দকে মুগ্ধ করে৷