মাইক্রোবাইটা সম্পর্কে বিশেষ কয়েকটি কথা

লেখক
সমরেন্দ্রনাথ  ভৌমিক

‘মাইক্রোবাইটা-তত্ত্ব’ অনুযায়ী বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কথা

১) মাইক্রোবাইটাম বিশ্বসৃষ্টির মূল কারণ অর্থাৎ প্রাণীনতার মূল উৎস হ’ল এই মাইক্রোবাইটাম৷ Microvitam is the source of life)

২) এই মাইক্রোবাইটামরা সর্বক্ষণ আমাদের মনকে ও শরীরকে প্রভাবিত করে চলেছে৷

৩) পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম আমাদের শুভপথে চালিত করে৷ উদার মনোবৃত্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে৷ জ্ঞান, বিবেক, বৈরাগ্য এনে দেয় মানুষের মনে৷

৪) নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম নানান ধরণের রোগ সৃষ্টি করে, আর মানুষকে অসৎ পথে পরিচালিত করে৷

৫) যখন শরীরে কোটী কোটী নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম প্রবেশ করে তখন মানুষ রোগাক্রান্ত হয়, আর এই রোগ হ’তে মুক্তি পাওয়ার জন্য এই নেগেটিভ মাইক্রোবাইটামকে প্রতিহত ক’রে রোগীকে রোগমুক্ত করতে পারে একমাত্র পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম৷ পরমপুরুষের কৃপা যদি হয় তবে ঐ রোগীর শরীরে কোটি কোটি মাইক্রোবাইটাম প্রবেশ করবে৷ সদ্‌গুরুকে সন্তুষ্ট করতে পারলে সদ্‌গুরু কৃপাপরবশ হ’য়ে রোগীকে পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম দিয়ে রোগমুক্ত করেন৷ এর জন্য ‘ৰাৰা’ (শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী, দুটি উপায়ে কথা বলেছেন---

(এক) ঃ একটি হ’ল গুরুধ্যান ও (দুই) ঃ কীর্ত্তন

৬)‘মাইক্রোবাইটা তত্ত্ব’ দেশ ও কালের সঙ্গে বিজ্ঞানের সামঞ্জস্য এনে দেবে৷

৭) মাইক্রোবাইটাম একটি একক সত্তা, তাই এর কোন সংরচনা Structure) নেই৷ স্বভাবগতভাবে এই মাইক্রোবাইটাম্‌কে জড়াত্মক না বলে বলা উচিত শক্তিরই সূক্ষ্ম রূপান্তর মাত্র more energy than matter), তাই এরা তন্মাত্রের মাধ্যমে স্থান হ’তে স্থানান্তরে অবাধে বিচরণ করতে পারে যা অন্যান্য সত্তা করতে পারে না৷

৮) মানুষের শরীরে পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম প্রয়োগের জন্য এক অপরিহার্য্য সর্ত হ’ল সংশ্লিষ্ট মানুষটিকে নিরামিষাশী হতেই হবে৷ এ ব্যাপারে আমিষ আহার একেবারে বর্জনীয়৷ আমিষভোজী দেহ পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম প্রয়োগের পক্ষে সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত৷

৯) মাইক্রোবাইটা জড়ের প্রারম্ভিক পর্যায়৷ মাইক্রোবাইটা জড় কিন্তু অত্যন্ত সূক্ষ্ম৷ মাইক্রোবাইটা হঠাৎ জড়ে রূপান্তরিত হয়, আবার জড়তত্ত্ব মাইক্রোবাইটাতে রূপান্তরিত হয়৷ জড়ের প্রারম্ভিক অবস্থা সম্বন্ধে অনুসন্ধান করতে হ’লে ভৌতিক গবেষণাগারে সেটা সম্ভব নয়৷ মানব মন ও আত্মার গভীরে গবেষণা ক’রে এটা সম্ভব হবে৷ কারণ, মাইক্রোবাইটা জড়ের চাইতে ভাব জগতের অধিকতর নিকটবর্তী৷

১০) সৎসঙ্গ, সদগ্রন্থপাঠ, সাহিত্য, ভাল সঙ্গীত, কীর্ত্তন মনকে উন্নত করে, এতে করে মন পবিত্রীকৃত হয়ে ওঠে৷ এই কারণে নেগেটিভ মাইক্রোবাইটা সেই সংরচনার রজোগুণী ও সত্ত্বগুণী অংশ সমূহকে স্পর্শ করার বিশেষ সুযোগ পায় না৷

১১) পজিটিভ মাইক্রোবাইটা দেহ ও মনকে পবিত্র করে ও আধ্যাত্মিক প্রগতিতে সাহায্য করে, শুধু তাই নয়, মনুষ্য দেহ ছাড়া যে কোন জীবদেহকেও পবিত্র করে৷ তারা এইভাবে পরমপুরুষের চিন্তা-প্রবাহকে সাহায্য করে, তারা পরমপুরুষের চিন্তা-প্রবাহের প্রতিসঞ্চর অংশের বিবর্তন ধারাকে অথবা পরমপুরুষের সংকল্প conation)কে সাহায্য করে, যাতে একটি উন্নততর জগৎ তৈরী হয়৷ সার্বিক আর সম্পূর্ণ উন্নতির স্বার্থে আমাদের সবসময় ধনাত্মক মাইক্রোবাইটামকে বরণ করে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে, আর তা কেবল কোন নির্দিষ্ট মনুষ্যদেহ বা অন্যান্য জীবদেহের ক্ষেত্রেই নয়, সৃষ্টির প্রতিটি অস্তিত্বের জন্যে আমাদের এই প্রয়াস করা উচিত৷ প্রতিটি আস্তিত্বিক সত্তা পজিটিভ মাইক্রোবাইটা দ্বারা উপকৃত হয়৷ এই ভাবে অচেতন জড়দেহে যে কার্বন পরমানুগুলি সুপ্ত অবস্থায় ছিল তা প্রাণচঞ্চল হ’য়ে উঠবে, তারা প্রাণীনতায় ভরে উঠবে৷ বিশাল জীবন্ত সংরচনায় পরিবর্তিত হবে৷

১২) পজিটিভ মাইক্রোবাইটার সাহায্যে মনের বিস্তার ঘটানো সম্ভব৷ মনের এই বিস্তৃতি সাধন করাকে বলা হয় ‘মহিমা’৷ ‘মহিমা’ হল অষ্ট ঐশ্বর্য-এর মধ্যে একটি৷ এমনি করে বাকী ঐশ্বর্যগুলিকেও এই পজিটিভ মাইক্রোবাইটার সাহায্যে পেয়ে থাকে৷

তাই মাইক্রোবাইটার গতি-প্রকৃতি নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার পৃথিবীর বুদ্ধিজীবিদের আহ্বান জানিয়েছেন৷

১৩) গুরুধ্যানে অসংখ্য পজিটিভ মাইক্রোবাইটার সমাবেশ হয়, আর এই পজিটিভ মাইক্রোবাইটার স্পর্শে রোগীর দেহে আক্রান্ত ক্যান্‌সারের মত দূরহ রোগও সেরে যায়৷

এছাড়া কীর্ত্তনের সময়ে যে মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয় তাতেও প্রচুর পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম-এর সমাবেশ ঘটে৷ আর এই সব মাইক্রোবাইটারা ঐ পরিবেশে তীব্রভাবে স্পন্দিত হয়৷ এরফলে ঐ পরিবেশে উপস্থিত মানুষ তথা অন্যান্য জীবকূলের ও গাছপালারও কল্যাণ হয়৷