নবান্নে অশ্বডিম্ব প্রসব

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে গোর্র্খ জনমুক্তির মোর্র্চর প্রধান বিমল গুরুং দার্জিলিংয়ে নিজের আধিপত্য বজার রাখার স্বার্থে কিছুতেই বনধ্ তুলে নিতে চাইছে না৷ যদিও আড়াই মাসের বেশি বন্ধ চালিয়ে যাওয়ায় পাহাড়বাসী অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে৷ রুজি-রোজগার বন্ধ , খাবার ঠিকভাবে মিলছে না৷ ছেলেমেয়েদের শিক্ষাও লাটে উঠেছে৷ কোটি কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি ধবংস হয়েছে, উন্নয়নমূলক কাজকর্ম বন্ধ৷  এতে যা কিছু ক্ষতি মূলতঃ পাহাড়ের জনসাধারণের৷ পাহাড়ের সাধারণ মানুষ বলতে শুরু করেছে , নেতারা তো অন্যত্র তাদের ছেলেমেয়েদের পড়াচ্ছে৷ তাই তাদের তো কোনো চিন্তাই নেই৷

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী ২৯ শে আগষ্ট পাহাড়ের সর্বদলীয় মিটিং ডাকলেন ৷ এই মিটিংয়ে বিমল গুরুং যোগ দেয় নি ৷ যোগ দিয়েছিলেন গোর্র্খজনমুক্তি মোর্র্চর পক্ষে বিনয় তামাং, গোর্র্খ ন্যাশন্যাল লিবারেশন ফ্রন্ট (জি.এন.এল.এফ) এর নেতা মহেন্দ্র ছেত্রী, জনআন্দোলন পার্টির নেতা হরকা বাহাদূর ছেত্রী প্রমুখ তাঁরা বারে বারে গোর্র্খল্যান্ড ইস্যু তুলতে চেষ্টা করেন৷  কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জায়গা থেকে রাজ্য সরকার পৃথক গোর্র্খল্যান্ড ব্যাপারে আলোচনা করতে পারেনা৷

আসলে বিমল গুরুং দেখছে পৃথক গোর্র্খল্যান্ডের দাবী তুলেই  সুবাস ঘিসিংকে  হটিয়ে পাহাড়ের কর্তৃত্ত্ব করায়ত্ত করেছিল৷ এখন পাহাড়ের নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে মরিয়া গুরুং৷ তাই পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা নয়, দার্জিলিংয়ের উন্নতিও নয়, স্রেফ নিজের আধিপত্য কায়েম রাখা ৷  জিটিএর আমলেও পাহাড়ের উন্নয়নে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে গুরুং৷ পাহাড়ের আদৌ উন্নতি করে নি৷ এখন সেই টাকা দিয়ে ছলে বলে কৌশলে তার নিজ আধিপত্য রাখতে চায়৷  তাই এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকের কিছু আগে আবার মিরিকে পুরসভাকে লক্ষ্য করে বড়ধরণের বোমা ছোঁড়া হয়েছিল৷ কিন্তু  আধাসামরিক বাহিনীর তৎপরতার জন্যে বড় ধরণের বিপদ এড়িয়ে যাওয়া গেছে৷ এই বোমা বিস্ফোরণ যে মোর্র্চর তরফ থেকে ঘটানো  হয়েছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷

যাই হোক, নবান্নের বৈঠকে দুই পক্ষ অনড় থাকায় আলোচনা এগোয়নি, আগামী ১২ই সেপ্ঢেম্বর শিলিগুড়ির উত্তর কন্যায় আরেক দফা বৈঠক হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এর মধ্যে মোর্র্চসহ  পাহাড়ের নেতারা বৈঠক করে ঠিক করবেন, গোর্র্খল্যান্ড ইস্যুকে বাদ দিয়ে আলোচনা চলতে পারে কিনা৷

তবে এদিনের মিটিংয়ে এটা বোঝা গেছে, মোর্র্চ প্রতিনিধি বিনয় তামাংয়ের পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর ইচ্ছা থাকলেও  বিমল গুরুংয়ের চাপে কিছু করতে পারছে না৷ বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয় তামাংয়ের  দুরত্বও বাড়ছে৷ বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে অন্যান্যদেরও দুরত্ব বাড়ছে৷