নিরপেক্ষভাবে অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন কমিশন

লেখক
প্রভাত খাঁ

পদে পদে সংবিধানকে ক্ষুদ্র স্বার্থে অস্বীকার করে যদি জনপ্রতিনিধিরা ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে সংখ্যা গরিষ্টার অধিকার ফলিয়ে দেশ শাসন করার মিথ্যা অহংকার দেখায় সেটা জনগণ কি  মানতে পারেন আর সহ্য করতে পারেন? তাই এককালে জাতীয় দলগুলি ধীরে ধীরে বিস্মৃতির অতল তলে বিলীন হয়েই চলেছে৷ আর নোতুন শূন্যস্থানপূরণ করছে ধান্দাবাজরা৷ সেটা যে উন্নতর হবে সেটা বলা চলে না৷ সেটা ধান্দাবাজদের সঙ্কীর্ণতায় খারাপ হতেই পারে৷ তখন জনগণকেই সেই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে হবে৷ তাতে তাদেরই কষ্টটা বেশী৷ আজ এদেশে যাঁরা শাসনে অধিষ্ঠিত তারা তো সেই নোতুন বোতলে পুরাতন বস্তু বিশেষ৷ হয়ত সেটা আরও দূষিত! কারণ প্রকৃতি শূন্যস্থান পূরণ করে যেকেনো বস্তু দিয়ে৷ গুণগত মান ধরে রাখার তার কোনো লক্ষ নেই৷ এটা প্রাকৃতিক নিয়ম, আপেক্ষিক জগতে যেটা সদা পরিবর্তনশীল৷ কথায় আছে--- ‘একে মরি টকের জ্বালায় তেঁতুল তলায় বান’৷ পুরাতন নাগরিকগণ নির্বাচন দেখে আসছেন সেই  ১৯৫২ সাল থেকে৷ নির্বাচন পদ্ধতিটা খুবই নিষ্ঠা ও সততার ওপর প্রতিষ্ঠিত৷ যা গণতন্ত্রকে বিকশিত করে৷ জনগণের ন্যায্য অধিকারকে সফল করে৷ কিন্তু যতদিন যাচ্ছে একদল ধান্দাবাজ রাজনৈতিক নেতা ও নেত্রী ছল-বল-কৌশল করে শাসনের গদীতে বসে দেশটাকে লুটে পুটে খেতে চায় কিছু লোভী স্বার্থন্বেষীদের পৃষ্ঠপোষকতায়৷ যারা সংখ্যায় অতি নগণ্য৷ তাদের বুলিটা কিন্তু সেই পদে পদে---‘গণতন্ত্রের স্বার্থেই তারা আত্মনিবেদিত ৷ এটা তাদের নিছক মিথ্যাচারিতা৷ লোক ঠকানোরই ফন্দি ও ফিকির৷

কংগ্রেস দল নেহেরু পরিবার স্বাধীনতার প্রথম দিন থেকেই  বিদেশী ইংরেজ শাসকদেরই বিশ্বস্ত হয়ে লুটেপুটে খেয়ে চলেছে দেশটাকে পরে দলছুটরা এসেছে গদীতে৷ তারা একদিকে একাধিক দল মিলে শাসনের নামে কেন্দ্র ও রাজ্যে আইনসভাগুলিকে  মেছ হাট করে হৈ হট্টগোল করে চালিয়ে যাচ্ছে বার বারই সংবিধানকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে৷ এরা আলাপ আলোচনা না করে  বিরোধীদের পাশে ফেলে রেখে দেশ শাসনের প্রহসন করে৷ সেই গণতন্ত্রের শ্লোগান দিয়েই চলেছে৷ চরম দুর্নীতিতে, ভ্রষ্টাচারিতায়, দেশ ডুবেছে৷ শাসন বলে কিছুই নেই৷ ছোটলাটদের  নিয়োগে বর্তমানে কেন্দ্রের শাসকদল রাজ্যগুলিকে রাজ্যসরকারকে না জানিয়ে দলীয় ক্যাডার নিয়োগ করে যায়৷ আগে তা ছিল না৷ কেন্দ্র রাজ্যসরকারকে জানিয়ে ছোটোলাট নিয়োগ করতো৷ এখন দেখা যাচ্ছে যাঁর নামেই রাজ্য শাসন হয় সেই লাট সাহেব রাজ্য সরকারের সঙ্গে  আলোচনা না করেই সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য সরকারের কুৎসা করে চলেন৷ আইন শৃঙ্খলার নামে নানা কল্পিত অভিযোগ করে   থাকেন কিন্তু তিনি ভুলে যান যে সেটা তারই অপদার্থতা ছাড়া আর কিছুই হয়৷ ছোটো লাটের অনেক দায়িত্ব রাজ্যে অভাব অভিযোগটা কেন্দ্রকে জানানো যাতে সমস্যার সমাধান হয়৷ ছোটলাট সাহেব যেন রাজ্যসরকারকে অপদার্থ প্রমাণ করতে মরিয়া৷

তিনি যেন কেন্দ্র সরকারের নিযুক্ত একজন বিশ্বস্ত বড়ো কর্র্ত্ত বিশেষ! প্রবীন নাগরিকগণ বিরোধী প্রধান দলনেতা ও নেত্রীগণ তাঁর কাজে বিরক্ত বোধই করেন কারণ তাঁরাই হলেন বুঝদার নাগরিক৷ এটাকে অস্বীকার যাঁরা করেন৷ এইসব কাজকে প্রশ্রয় দিয়ে থাকেন তাঁরা কি ধরণের দেশনেতা ও শাসক! যেখানে বিরোধীদের সংবিধানকে মান্যতা দেওয়াটা কর্ত্তব্য৷ আলাপ আলোচনা না করে আইন পালটানো আর শাসনে  একগুঁয়েমীটাকে গণতন্ত্র বলে কেউই মানতে পারে কি? নির্বাচন ঘোষণার পর শান্তিতে যাতে বোট পর্ব শেষ হয় সেটা দেখার দায় নির্বাচন কমিশনের৷ এবারে কি সব কাণ্ড হচ্ছে দেশে! বোটের  দিন ঘোষণা হল না করোনায় আক্রান্ত রাজ্য এই পশ্চিমবাঙলার বোটের নামে রাজ্যসরকার পরিবর্ত্তনে বাহির হতে ঘন ঘন বিজেপি নেতা  ও কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীগণ আসছেন৷ বড়ো বড়ো মাঠ ভরাট করে বড়ো বড়ো রাস্তায় মিছিল করে যা কাণ্ড করা হচ্চে তাতে করোনার প্রাবল্যতো বাড়বে বই কমবে না৷ তাছাড়া তার প্রত্ত্যুত্তর দিচ্ছে দলছুটরাও লাফালাফি করছে আর রাজ্য সরকারের দল সহ্য করতে না পেরে  রাস্তায় নেমেছে৷ এটা তর্জা করার সময় কি? নির্বাচন ঘোষণার পর আইন শৃঙ্খলা মেনে রাজনৈতিক দলগুলো বক্তব্য রাখবে তারা কি করতে চায়, তাদের কি কি লক্ষ্য সেই ব্যাপারে৷ রামনা জন্মাতে রামায়ণ গাওয়ার মতো গণতন্ত্রে সরকারগুলো কি কাণ্ড করছেন? নাগরিকগণ অত্যন্ত বিরক্ত ও লজ্জিত  রাজনৈতিক দলগুলোর কাণ্ডকারখানা দেখে৷

বাঙলার মানুষ যারা সংখ্যায় কোটি কোটি৷ সেই গরিবরাতো চরম বেকার সমস্যা ও দুর্মূল্যের বাজারে দিশেহারা কি করে পরিবার এর সদস্যরা মুখে অন্ন যোগাবে৷ কিন্তু দলগুলো কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাস্তায় নেমেছে বোটের দিন ক্ষণ ঘোষনার আেেগই৷ আবার একদল লোভ দেখাচ্ছে সোনার বাঙলা গড়ার৷

আজ ধবংসে পরিণত শোষিত লাঞ্চিত পশ্চিম বাঙলা৷ যাকে সেই স্বাধীনতার প্রথম থেকেই কেন্দ্রে আসীন সরকারগুলো একনাগাড়ে বঞ্চিত করে চলেছে রাজ্যের আইনসম্মত আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির  অধিকার থেকেই৷ এরাজ্য কিন্তু সচেতন৷ তাই  কেন্দ্র বিরোধী সরকার বহু বছর এরাজ্যে৷ একে ধবংস করতে আর একে টুকরো টুকরো  করে শেষ করে দিতেই সাম্প্রদায়িক কোন ধান্দায় পুষ্ঠ কেন্দ্র সরকার‘‘সোনার বাঙলা গড়ার’’ স্বপ্ণ দেখাচ্ছেন! বাংলা ও বাঙালীরা এতই বোকা তাদের প্রলোভনে গলা দিয়ে সোনার বাংলার নামে তাঁদের বিচার বিবেচনাকে জলে ফেলে সর্বনাশের পথে পা বাড়াবে! তাই নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করে জনগণকে তাঁদের স্বাধীন মতামত দানের দিকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার নজর দিন৷ গণতন্ত্র মানে স্বৈরাচারিতাকে প্রশ্রয় দেওয়া নয়৷ গণতন্ত্র মানে বিরোধী শূন্য করে  একদলীয় শাসনের সুযোগ করে দেওয়া নয়৷ গণতন্ত্র মানে মিলেমিশে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করা৷ গণতন্ত্রে প্রত্যেক নাগরিককে স্বনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা ৷ নোংরা দলবাজিকে দূরে ফেলে দিয়ে পবিত্র গণতন্ত্রকে রক্ষা করা৷ ধনীদের তোষণ করতে গরিবদের শোসণ করার অদ্যাবধি মেকী গণতন্ত্র চলছে তার খোলনলচে পাল্টানোটাই হোক নির্বাচন এর সার্থকতা৷ আর জনসেবক চাই, দলবাজি নয়৷