পুঁজিবাদী আগ্রাসন থেকে বাঁচার পথ প্রাউট

দেশ এগিয়ে চলেছে অন্ধকারের দিকে৷ সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক, শিল্প, শিক্ষা, সংসৃকতি জীবনের সর্বক্ষেত্রেই চরম অবক্ষয়, অরাজগতা, পুঁজিবাদ নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীত অর্থনীতি  ও দুর্নীতিপরায়ন রাজনীতি এই দূরাবস্থার জন্যে দায়ী৷

এমনটাই মনে করেন প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের কেন্দ্রীয় সংঘটক সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত৷ তিনি বলেন, স্বাধীনতার জন্মলগ্ণ থেকেই পুঁজিবাদ স্বার্থ নির্ভর মিশ্র অর্থনীতির যাঁতাকলে পিষ্ট হতে থাকে মানুষ৷ শোষণের রথ চালিয়ে যেতে স্বাধীনতার আগে থেকেই দেশীয় পুঁজিপতিরা রাজনৈতিক দলগুলোকে কব্জা করে নিয়েছে৷ অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কথা বলে সুভাষচন্দ্রকে দল ও দেশ ত্যাগ করতে হয়েছিল৷ আনন্দমূর্ত্তিজীকে জেলে  পুরে বিষ প্রয়োগে হত্যার ষড়যন্ত্র একই কারণে৷ সুভাষচন্দ্র স্বপ্ণ দেখেছিলেন অর্থনৈতিক স্বাধীনতার৷ আনন্দমূর্ত্তিজী তাঁর দর্শনের সামাজিক-অর্থনৈতিক তত্ত্বে যুক্তি ও বিজ্ঞানসম্মত সুস্পষ্ট পথ নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের ও প্রতিটি মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার নূ্যনতম চাহিদা (অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান) পূরণের৷ তাই সামাজিক-অর্থনৈতিক তত্ত্ব তথা প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব যা সংক্ষেপে প্রাউট---এই প্রাউটের পথেই আর্থিক শোষণমুক্ত সুসন্নিবদ্ধ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে৷

প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের কেন্দ্রীয় সচিব আচার্য রবীশানন্দ অবধূত বলেন ছাত্র-যুব সমাজকে অধঃপতে পাঠানোর জন্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা, শিল্প, সাহিত্য, সংসৃকতির মাধ্যমে অশ্লীলতার প্রকাশ, ধর্মের নামে কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েচে৷ সমাজে যে সব নক্কারজনক ঘটনা ঘটছে তা সবই পুঁজিবাদী শোষণের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ৷ যতদিন পুঁজিবাদী শোষণ বজায় থাকবে ততদিন নক্কারজনক ঘটনাও সমাজে ঘটবে৷

তিনি আরও বলেন, সমাজকে এইসব জঞ্জাল থেকে মুক্ত করে একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রথমেই প্রয়োজন আধ্যাত্মিক নীতিবাদে প্রতিষ্ঠিত বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দৃঢ়চেতা কর্মী বাহিনী৷ প্রাউট-প্রবক্তা তাঁর সামাজিক-অর্থনৈতিক তত্ত্বের মধ্যেই সেই নেতৃত্ব  ও কর্মী বাহিনী গড়ে তোলার পথ নিদেলশনা দিয়েছেন৷ তিনি নাম দিয়েছেন সদ্বিপ্র৷ এই সদ্বিপ্ররা হবেন উচ্চ-আধ্যাত্মিক চেতনা সম্পন্ন, মানসিকভাবে দৃঢ়চেতা ও শারীরিকভাবে সবম৷ এরা সবরকম জাতপাত, বর্ণ সম্প্রদায়ের ঊধের্ব থাকবে৷ মানুষে মানুষে কোনরকম বিভাজন তৈরী করবে না৷ সবরকম শোষণ অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে এরা নিলস সংগ্রাম করে যাবে, সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণের জন্যে কাজ করে যাবে৷ আর শুধু মানুষই  নয়, পশু-পাখী, তরুলতা সবার মঙ্গলের কথাই চিন্তা করবে সদ্বিপ্ররা৷ কারণ এরাও সমাজের বাইরে নয়৷ এদের অবজ্ঞা অবহেলার পরিণতিতে আজ পরিবেশ দূষিত হয়েছে৷ প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মহা বিশ্বে বিপর্যয় ডেকে আনছে৷ তাই প্রাউটের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় এদেরও সংরক্ষণ, সংবর্দ্ধনের ব্যবস্থা আছে৷ তাই বর্তমান অধঃপাতিত সমাজকে বাঁচাবার একমাত্র পথ প্রাউট৷