সংক্ষেপে প্রাউটের অর্থনৈতিক তত্ত্বের মূল কথা

লেখক
সত্যসন্ধ দেব

প্রাউটের অর্থনৈতিক তত্ত্বের মূল কথা হ’ল প্রথমতঃ সমাজের প্রতিটি মানুষের যুগানুসারে জীবনের নূ্যনতম চাহিদা পূরণের গ্যারাণ্ঢী দেওয়া৷ দ্বিতীয়তঃ সকলের নূ্যনতম চাহিদা মেটানোর পর গুণীদের মধ্যে গুণানুপাতে বণ্ঢন৷ তৃতীয়তঃ, নিম্নতম মানের ক্রমবৃদ্ধি সমাজের অর্থনৈতিক উন্নতির প্রকৃত সূচক৷ আর এর মধ্য দিয়ে সর্বনিম্নমান সর্বোচ্চ মানের ব্যবধান হ্রাস করার প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে৷

     প্রাউট–প্রবক্তা মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকারের ভাষায় ‘‘এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি সম্পদ প্রতিটি মানুষের সাধারণ সম্পত্তি৷ কিন্তু বিশ্বের কোনো কিছুই ষোল আনা সমান হতে পারে না৷ তাই মানুষের যা সর্বনিম্ন প্রয়োজন তার ব্যবস্থা সবাইকার জন্যে করতে হবে অর্থাৎ অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসগৃহ, শিক্ষা এগুলির ব্যবস্থা সবাইকার জন্যেই করা অবশ্যই কর্তব্য৷ মানুষের এই সর্বনিম্ন প্রয়োজন আবার যুগে যুগে পাল্টে যায়৷ যানবাহন হিসেবে কোনো যুগে সর্বনিম্ন প্রয়োজন হয়তো একটা বাইসাইকেল আর কোন যুগে হয়ে দাঁড়াবে একটা এরোপ্লেন৷ যে যুগের মানুষের যেটা সর্বনিম্ন প্রয়োজন, সেটার ব্যবস্থা অবশ্যই করতেই হবে৷’’

     ‘‘যুগের সর্বনিম্ন প্রয়োজন মিটিয়ে যে সম্পদ অতিরিক্ত থাকবে তা’ বিশেষ গুণসম্পন্ন ব্যষ্টিদের মধ্যে গুণানুপাতে বণ্ঢন করে দিতে হবে৷ যে যুগে একটি সাধারণ মানুষের প্রয়োজন একটি বাইসাইকেল সে যুগে একজন চিকিৎসকের প্রয়োজন একটি মোটর গাড়ী৷ গুণকে সমাদর দেবার জন্যে তথা গুণীকে সমাজসেবায় অধিকতর সুযোগ দেবার জন্যে তাকে মোটরগাড়ী দিতে হবে৷ ‘Serve according to your capacity and earn according to your necessity’– একথাটা শুণতে ভাল কিন্তু পৃথিবীর কঠোর মৃত্তিকায় এর কোনো ফসল ফলবে না৷’’

‘‘মানুষের সর্বনিম্ন প্রয়োজনের স্থিরীকৃত যে মান তার তুলনায় গুণীরা কিছু অধিক সুযোগ পাবেই কিন্তু এই সর্বনিম্ন মানটিকেও ওপরে তোলার চেষ্টা সীমাহীন চালিয়ে যেতে হবে৷ ...এই চেষ্টার ওপরই নির্ভর করবে মানুষের জাগতিক ঋদ্ধি৷’’