আমার সন্তান যেন থাকে  দুধে ভাতে

লেখক
একর্ষি

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

৫. এখন এইসব ব্যাপারগুলো থেকে একটা প্রশ্ণ অনিবার্য এসে যাচ্ছে যে বিশ্বসৃষ্টির মূল কারণ কী? প্রাণ বা প্রাণীনতার আদি বিন্দুটিই বা কী? অধ্যাত্মবিজ্ঞান অনুসারে ‘মাইক্রোমাইবাইটামই বিশ্বসৃষ্টির মূল কারণ ও প্রাণশক্তির উৎস৷ কিন্তু এ যাবৎ বৈজ্ঞানিকদের ধারণা ছিল যে অঙ্গরাণু বা অঙ্গার-পরমাণুকে মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহার না করলে কোন সত্তা সংরচনা তৈরি হতে পারেনা, অঙ্গারাণুর সাহায্য ছাড়া কোন সৃষ্টি অস্তিত্ব সংখ্যাবৃদ্ধি বা অবক্ষয় আদৌ সম্ভব নয়৷  কিন্তু প্রাকৃত সত্যটা হল--- প্রাকৃত সত্যটা হল---যা অঙ্গারাণুর সাহায্য ছাড়া কোন সৃষ্টির অস্তিত্ব নয় (নন্‌-কার্বনিক) এমন সব কিছুই মাক্রোবাইটাম থেকেই তারা তাদের নিজের নিজের পারমাণবিক সংরচনা পেয়ে থাকে৷ আর পারমাণবিক সংরচনার তাত্ত্বিক বা বাস্তব উভয় দিক দিয়েই স্থানিক আধারের (স্পেস্‌) প্রয়োজন আছে৷ কিন্তু ম্যাক্রোবাইটামের ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্থানিক আধারের (স্পেসের) প্রয়োজন থাকলেও বাস্তবে তার দরকার নেই৷ কেননা মাইক্রোবাইটাম দিয়ে অঙ্গারাণু তৈরী হয় না৷ কোটি কোটি মাক্রোবাইটাম মিলিতভাবে একটা অঙ্গারাণু সৃষ্টি করে৷ কাজেই কোনভাবেই বলা যায় না যে সবকিছুই অঙ্গারাণুজাত, বরং এই কথা বলাই সঙ্গত যে কেবল অঙ্গারাণুগুলিই নয়, অন্যান্য সমস্ত অণুকণাও অর্থাৎ সব কিছুই এসেছে মাইক্রোবাইটাম থেকে৷

অধ্যাত্মবিজ্ঞানীর কথায়---মাইক্রোবাইটাম হচ্ছে ভূমাচৈত্তিক ধাতুর এক রহস্যজনক উৎসাগর৷ এ এর সূক্ষ্মতম রহস্যাবৃত অভিব্যক্তি---যা অতি অতি সূক্ষ্ম প্রাণীন সত্তাও বটে৷ আসলে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে জৈব-অজৈব নির্বিশেষে প্রতিটি সংরচনারই মন আছে---কোথাও তা ব্যক্তরূপে, কোথাও বা অব্যক্তরূপে? সে যাই হোক--- এসব তত্ত্বের কচ্‌কচি অন্নহীন,গৃহহীন, বস্ত্রহীন, আশ্রয়হীন, হতদরিদ্র বেকার মানুষের কাছে মূল্যই বা কী? রহস্যটা এখানেই মন থাকলেই তার অঙ্গরাত্মক (কার্বনিক) ও নন্‌-কার্বনিক আভোগ (উপভোগ, বিস্তার বা প্রয়াস) থাকতেই হবে৷ মানসিক আভোগ যেখানে অঙ্গারাত্মক সেখানে মনের গতি স্থূলত্বের দিকে অর্থাৎ জড়াভিমুখী৷ আর মনের আভোগ যেখানে নন-কার্বনিক ধরণের মনের গতি সেখানে সূক্ষ্মত্বের দিকে৷ নন-কার্বনিক মানস আভোগ মানুষের মনকে অতিমানস ও আধ্যাত্মিক জগতের দিকে টেনে নিয়া যায়৷ মানবজীবনে এর প্রতিফল বা প্রতিক্রিয়াটা ভাববার কথা৷ কেননা মানুষ নন-কার্বনিক মানস আভোগ থেকে যত দূরে যায় ও উত্তরোত্তর যত জড় আভোগ বা অঙ্গারাত্মক আভোগে ডুবে থাকে, তাতে দুটো কুফল দেখা যাবে৷ (১) মানুষের জড় আভোগের আধারটা বেড়ে যাবে, আর মন ক্রমশঃ ধীরে ধীরে নিশ্চিতভাবে স্থূল জড়ের দিকে ছুটে যাবে৷ (২) জড়ের দিকে ধাবিত মানুষের ওই মন অন্যের অঙ্গারাত্মক আভোগ গ্রাস করতে চাইবে৷ এর জন্যই মানুষের মধ্যে জন্ম নেয় সাম্রাজ্যবাদী মন৷ অর্থাৎ সাম্রাজ্যবাদের উদ্ভব মানুষের মনে আর তা মানুষের মানস জগতেই কাজ করে যায়৷ কিন্তু বাইরের জগতে যখন এই মানসিকতা প্রকাশ হতে থাকে তখন তার রূপ হয় বিচিত্র৷ যেমন ধনতন্ত্র, রাষ্ট্রীয় ধনতন্ত্র, অর্থনৈতিক সাম্যবাদ, প্রাদেশিকতা, সংকীর্ণতাবাদ, সমাজতন্ত্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতাবাদ, জাতি প্রাধান্যবাদ, ভাষাগত সাম্রাজ্যবাদ ইত্যাদি৷ সাম্রাজ্যবাদের উৎপত্তির এটাই মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা৷ কার্যতঃ এটা একধরনের মানসিক ব্যাধি৷ আর উপর্যুক্ত উদাহরণগুলো সাম্রাজ্যবাদীরূপী মানসব্যাধির আকৃতি প্রকৃতিগত পার্থক্য মাত্র৷ বলা বাহুল্য, এই সাম্রাজ্যবাদ থেকেই জন্ম নেয় বড় বড় বিশ্বযুদ্ধ, নানান ধরণের ভেদমূলক ধবংসাত্মক শক্তি তথা ঋণাত্মক শক্তি৷ এই ধবংসাত্মক-ঋণাত্মক শক্তি সমাজে বৈয়ষ্টিক ও সামূহিক জীবনে অন্যায় অবিচার ও শোষণের পরিবেশ গড়ে তোলে, আর নেগেটিভ (অরাতিসুলভ---যেমন করোনা বাইরাস একটা নেগেটিভ মাইক্রোবাইটা) মাক্রোবাইটাম এর প্রাদুর্ভাব ঘটে৷ এরা পরিবেশে আরো সুসংহত ও সুসংবদ্ধ হয়ে মানব সমাজের দানবীয় কার্যকলাপের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়৷ ফলে চারুকলা, সাহিত্য, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, শিল্প, নৈতিকতা ও সামাজিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিকে তাদের অশুভ শক্তির প্রতিফলন দানা বাঁধে, অসংস্কৃতি ও মানস-অর্থনৈতিক শোষণের পথ প্রশস্ত করে৷  এই সর্বগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদীরূপী ব্যাধিটা দূর করতে কেবল কঠোর আইন-অনুশাসনে কাজ হবে না৷ সঙ্গে চাই সমাজে আধ্যাত্মিকতার প্রসার ও তার নিত্য প্রয়াস (কাল্ট)৷ (বৈবহারিক পরিভাষায়---এক্সটারনাল প্রেসার ও ইন্টারনাল আর্জের সন্তুলন)৷ অধ্যাত্মবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে নব্যনীতিচেতসা (নিউ-এথিক্‌স্‌) ---যার মানে বা স্বরূপটা হল ---একদিকে এক পরম সার্বভৌম সত্তাকে জীবনের চরম ও পরম লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা, আর সঙ্গে অঙ্গারাত্মক বা জড় আভোগের সঙ্গে নন কার্বনিক আভোগের একটা সুন্দর সামঞ্জস্য ও সন্তুলিত সামঞ্জস্য বজায় রাখা৷ এটা করতে পারলেই সমাজ থেকে অপসারিত হবে অর্থনৈতিক শোষণ, রাজনৈতিক নির্যাতন, উপধর্মীয় নির্যাতন, কুশিক্ষা, সাংস্কৃতিক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা তথা সামাজিক প্রভুত্ব স্থাপনের অপপ্রয়াস৷ অথচ অর্থনীতির কারিগরেরা এই নীতিচেতসার কোন সন্ধানই রাখেন না৷ সোজা কথাটা হল আধ্যাত্মিকতার ছত্রছায়া ভিন্ন অর্থনীতি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারিনি, পারছেনা ও ভবিষ্যতেও পারবে না৷ তথ্যসূত্র---কণিকায় মাইক্রোবাইটাম---শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার৷ এখন খোলা চোখের আসল কথাটা হচ্ছে---’’ আজ পৃথিবীতে দারিদ্র্যই প্রধান সমস্যা...৷’’ অর্থনৈতিক উন্নয়নই দারিদ্র্য মোচনের একমাত্র পথ৷ এ নিয়ে কিছু বলতে গেলে প্রথমেই দারিদ্র্য কী ও কেন তা জানা ও প্রকৃত উন্নয়নই বা কী তা বোঝা? তবে ‘দারিদ্র’ ব্যাপারটা নিয়ে হেঁয়ালি কম নেই৷ অনেকে সচ্ছলতা ও দারিদ্র্যের মধ্যে এমন কি দারিদ্র্য ও অতি দারিদ্রের (দারিদ্র সীমার নীচের) মধ্যেও ‘দারিদ্র্য-সীমারেখা’ টানার কথা বলেছেন৷ নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদদের থেকে শুরু করে অর্থনীতির অন্যান্য পণ্ডিতেরা কেউই যুক্তিসংগত সর্বজনমান্য সিদ্ধান্তে আসেননি৷ তাঁদের সিদ্ধান্তের পিছনে স্থান ও কালের প্রভাবটা স্পষ্ট৷ ধনী দেশের দরিদ্র, উন্নয়নশীল দেশের দরিদ্র আর গরিব দেশের দরিদ্রের জীবনযাত্রার মান এক নয়৷ তাই দারিদ্র্যের শতাংশ হার দেশে দেশে ভিন্ন ভিন্ন৷ তাই বিচারটা যুক্তিসংগত হওয়া দরকার৷ সবচেয়ে বড়কথা হচ্ছে--- মানুষের বেঁচে থাকার বা জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্যে যুগ ও স্থানভিত্তিক নূ্যনতম প্রয়োজন পূর্তির উপকরণগুলো অর্থাৎ খাদ্য, বস্ত্র,বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা পাওয়াটাই বড় কথা৷ এগুলো নিশ্চিতিত হলে তবেই আসে এসবের পরিমাণগত ও গুণগত মান বৃদ্ধির কথা৷ এই পাঁচটি মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে কেউ হয়তো একটা বা দুটো বা তিনটে বা চারটে যোগাড় করতে পারছে, কিন্তু সবগুলো সংগ্রহ করতে পারছে না, বা পারলেও প্রয়োজনের তুলনা নিতান্তই সামান্য, নগন্য---তা দিয়ে জীবনে বেঁচে থাকা যায় না৷ আবার এমন মানুষও আছে যারা আক্ষরিক অর্থে নিঃস্ব৷ বেঁচে থাকাটাই তাদের কাছে সবচেয়ে বড় অভিশাপ৷ অর্থনীতির পণ্ডিতেরা এদেরকেই দারিদ্রসীমার নীচের স্তরের মানুষ বলে বোঝাতে চেয়েছেন৷ তবে গরিবদের মধ্যে গরিবত্বের ভাগাভাগী করে পাণ্ডিত্য ফলানো যায় বটে---তাতে গরিব মানুষের পেট ভরে না৷ এসব এক ধরণের  ধোঁকাবাজি, দায় এড়াবার অপকৌশল৷ ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে এইরকম-যেন ঝড়ে গাছচাপা পড়েছে মানুষ--- সেনারী না শিশু, জোয়ান না বৃদ্ধ, হিন্দু না মুসলমান, গরিব না বড়লোক, কোন গ্রামের বা পঞ্চায়েতের লোক, কোতোয়ালি নাকি অস্থায়ী থানার লোক---এসব বিচার্য্য নয়৷ আশু প্রয়োজন---লোকটিকে গাছের নীচে থেকে বের করে হাসপাতালে পাঠানো৷ তাই স্ব-ক্রয়ক্ষমতায় গরিবদের নূ্যনতম প্রয়োজন পূরণের গ্যারান্টি দেওয়াটা আশু প্রয়োজন, পণ্ডিতদের রচিত ‘পুওর ইকোনমিক্স’-এর গরিবদের ‘বারোমাস্যার’ শাঁসাল গ্রন্থায়ন, বা ভাষণ দেওয়া নয়৷ সোজা কথাটা হল ---সর্বাধিক সুখ-সুবিধা তো অতি দূরের কথা, বেঁচে থাকার পাঁচটি মৌলিক চাহিদা-ই যে পূরণ করতে পারছে না--- সেই গরিব মানুষ, সেই দরিদ্র মানুষ আর প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি নারী পুরুষ এর আওতায় আসবে --- একথাটা মনে রাখাটা দরকার৷ তবে আরো মনে রাখা দরকার

১) প্রাপ্ত বয়স্ক বিচারটা এখানে কোন দেশের সরকারের দেয়া নিয়মে ভোটাধিকার বা বিবাহের বয়স অনুসারে বিচার্য নয়৷ দৈহিক-মানসিক শ্রমদানের ক্ষমতা হওয়ার গড় বয়স, প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুযায়ী দেহের (নারী ও পুরুষের) প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, গ্রন্থি-উপগ্রন্থি, স্নায়ুকেন্দ্র ঘটন সম্পূর্ণ হওয়ার গড়বয়স ও সেই অনুযায়ী নারী পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি বয়ঃপ্রাপ্ত মানুষের গড়ে ক্যালোরির বা নূ্যনতম প্রয়োজন পূর্ত্তির চাহিদা মেটানোর বিজ্ঞানসম্মত মাত্রা অনুসারে প্রাপ্তবয়স্ক নির্ণয়টা বিচার্য হওয়া উচিত৷ ২) দ্বিতীয় কথাটা হল আমাদের দেশে গরিব বলতে একজন মাত্র রোজগেরে পরিবারের গরিব পরিবার প্রধান ও তার পরিবারের সকল সদস্যকে একসংগে বোঝায়, আর পরিবার প্রধানের আয়কেই পরিবারের মোট আয় ধরা হয় ও সংশ্লিষ্ট পরিবারের গড় আয় (মানে একমাত্র রোজগেরে পরিবারের পরিবার প্রধানের আয়কে পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়) হিসাব করলে পরিবারের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা বা দারিদ্র কতটা উৎকট তা বোঝা যায়৷ এই পরিবারের স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, বাবা-মা, ভাই বোন, আশ্রিত মাসি-পিসি, নাবালক-নাবালিকা, শিশু সবাই পরিবার প্রধানের দারিদ্র্যে জন্যে এককভাবে প্রত্যেকে গরিব বলেই গন্য হয়৷ আবার একই পরিবারে পরিবার প্রধান ছাড়াও একাধিক রোজগেরে থাকলেও তার আয়কে হিসাবের মধ্যে আনা হয়না৷ ফলে পরিবারের সঠিক আয়চিত্রও তৈরী হয় না৷ অথচ যৌথ পরিবারে (যে পরিবারে একাধিক দম্পত্তি ও প্রাপ্তবয়স্ক বা পোষ্য আজীবন একান্নে প্রতিপালিত হয়, একসঙ্গে বসবাস করে সেই পরিবারই যৌথ পরিবার) এই চিত্রটা আলাদা৷ তাই দারিদ্র বিচারে পরিবারের সমষ্টিগত আয় ও প্রয়োজন সামনে আসা দরকার৷ ৩) তৃতীয় কথাটা হল---গরিব কথাটার ব্যাপ্তিচিত্র তৈরী করতে নারী পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কথা মাথায় রেখে, দেশে দেশে সমাজ ব্যবস্থা অনুসারে (যতদিন না অখণ্ড মানবসমাজ তৈরী হচ্ছে) পরিবারতন্ত্রকে মান্যতা দিয়ে এবং  নূ্যনতম প্রয়োজন ও সুখ-সুবিধা বিচারটা পরিবার প্রধান কেন্দ্রিক ব্যষ্টিগতভাবে না করে প্রতি পরিবার ভিত্তিক সমষ্টিগত সামূহিক প্রয়োজনকে মান্যতা দিয়ে করা দরকার৷ কেননা পরিবারে শিশু, ছাত্র-ছাত্রা শিক্ষানবিশ উপার্জন হীন আশ্রিতা নারী, বেকার যুবক ও আশ্রয় সম্বল হীন পোষ্যও অনেক পরিবারে আজীবন থাকে৷ ভারতীয় সমাজব্যবস্থা দাঁড়িয়ে গরিব বিচার করতে গেলে এসব বাদ দিলে চলবে কেন? সামগ্রিক চালচিত্রই চাই কিনা? স্মরণীয়, নূ্যনতম প্রয়োজন ও সুখ-সুবিধা শিশু নারী-আবালবৃদ্ধবনিতা সকলের প্রকৃতিদত্ত মৌলিক অধিকার, পৈতৃক অধিকার৷ তাই গরিব গৃহকর্তাকে কেবল নিজের মধ্যে থাকলে চলে না, পরিবারের সবার কথাই ভাবতে হয়৷ কিন্তু কেন্দ্রিত অর্থনৈতিক চিন্তা কর্র্পেরেট সমাজের এসব না পছন্দ ---পরিবারের সবার কথা ভাবতে গেলে তো নিজের সুখের ভাগ কমে যায়--- সামাজিক সামূহিক কল্যাণ করতে গেলে তো আর পূঁজির পাহাড়ের চূড়োয় চড়া যায় না---বরং এসব গ্রোথ বা প্রবৃদ্ধির পথে বড় বাধা,আনপ্রোডাক্টিভ্‌--- কাজেই সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলা নয় একলা চলরে৷ বাস্তবে তাই গরিবী হটাও শ্লোগান্টা নেহাতই পুঁজিবাদী ভাবনার তল্পীবাহক অর্থনীতিবিদের তৈরী ইন্দ্রজাল মাত্রং--- যেখানে গরিব আরো গরিব হয়, ধনী করপোরেট গোষ্ঠী ফুলে ফেঁপে ওঠে৷ মানুষ গরিব হয়‘‘শুধুমাত্র এইজন্য যে তাদের আর্থিক অবস্থা উন্নত করার জন্য কোনও অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর অস্তিত্ব নেই৷ এটা একটা সাংঘটনিক সমস্যা৷ কোন ব্যক্তিগত সমস্যা নয়৷ আসলে ‘‘অর্থনীতি জাতীয় সম্পদের পরিমাণ তার বৃদ্ধি ও কারণের দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখে৷ অর্থনীতি সর্বদা এই একই নিশানায় অনুসন্ধান চালিয়ে যায়৷ কিন্তু একজন মানুষ গরিব হয় কেন? এই সহজ প্রশ্ণটি এড়িয়ে৷ দারিদ্র্য গরিবদের নিজস্ব সৃষ্টি নয়৷ সমাজের অনুসৃত নীতি এর জন্য দায়ী৷  (ক্রমশঃ)