ছোট ছোট রাষ্ট্রগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াবার সময় এসেছে

লেখক
প্রভাত খাঁ

আমরা বিশ্বযুদ্ধ ভয়াবহতার কথা শুনেছি কিন্তু বর্তমানে একটি ছোটস্বাধীন দেশ ইউক্রেনের উপর প্রাক্তন কমিউনিষ্ট দেশ রাশিয়ার যে কতোখানি নিষ্ঠুরতা তা টিভির মাধ্যমে চোখে  দেখছি তা সহ্য করা যায় ন! লক্ষ লক্ষ সৈন্য নামিয়ে আকাশ পথে অভিযান চালিয়ে আর স্থল এলাকায় কামান দিয়ে যেভাবে  প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে নিষ্ঠুরভাবে ধবংস করে চলেছে সেটা সারা পৃথিবী দেখে স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছে৷ একদিন যে ছোট দেশটি  সোভিয়েত ইয়ূনিয়নকে খাদ্য ও সম্পদ যোগান দিয়ে শেষ হয়ে গেছে সেই দেশ পরবর্তীকালে ইউক্রেন৷ ইউ.এস.এস আর বাধ্য হয়ে তাঁদের স্বাধীনতা দিয়েছে আজ বিচ্ছিন্নতবাদ দল প্রবশে করিয়ে রাশিয়া তাকে কব্জায় আনতে ও চরমভাবে শোষণ করতেই রাষ্ট্র সংঘের নির্দেশ অমান্য করে আক্রমন চালাচ্ছে৷ মনে পড়ে সেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানীকে ধবংস করে যুদ্ধ শেষ হলে বিজয়ী রাষ্ট্রগুলি পৃথিবীর শান্তি স্থাপনে লীগ অফ নেশনস নামে  সংস্থা ঘটন করে৷ সেটা ধবংস হয় বিশ্বযুদ্ধে দ্বিতীয় বারে৷ এবার কি পৃথিবী থেকে রাষ্ট্র সংঘ ধবংস হবে? রাশিয়া শক্তিধর রাষ্ট্র, তার নিষ্ঠুর আক্রমনে? আমেরিকা ও অন্যান্য রাষ্ট্র ইউক্রেনে রাশিয়া আক্রমনের তীব্রভাবেই বিরোধিতা করছে কিন্তু কে কার কথা শোনে!

এই প্রাক্তন কমিউনিষ্ট শাসন যে কতোবড়ো নিষ্ঠুর ও শোষক সেটার অভিজ্ঞতা এই গণতান্ত্রিক ভারতে দেখেছি কম্যুনিষ্ট  শাসনে এই পশ্চিমবাঙলায়! এই কলকাতার রাজপথে ১৯৮২ সালে ৩০শে এপ্রিল নির্মমভাবে ১৭জন আনন্দমার্গের স্বেচ্ছাসেবী যাঁরা দেশের জনগণকে সেবাদান করতেন ও জনহিতকর কর্মে নিযুক্ত ছিলেন নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়! আর অহিংসার প্রতীক কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার  একটি কথাও বলেননি৷ কারণ এই কমিউনিষ্ট দল পশ্চিম বাংলায় শাসন করতো আর কেন্দ্রের দুর্বল কংগ্রেস সরকারকে বাহির থেকে সমর্থন করতো বলে৷ তাই এই দলের চরিত্র বিশ্ববাসীর জানা৷ এরা নিজেদের স্বার্থে কারোর কথাই মানে না৷ রাশিয়া ইউক্রেনকে নিষ্ঠুর আক্রমনে দেশটিকে একেবারে ধবংস করে দিয়েছে৷ তারা বেশ কিছু এলাকাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী রুশদের স্বার্থে অর্থাৎ রাশিয়ার স্বার্থে কব্জা করেছে৷ রাজধানী কিয়েভ ও আরো কটি শহরকে ধবংসস্তুপে পরিণত করেছে৷ হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে চলেছে৷ সারা পৃথিবী আজ চরমভাবে ক্ষুব্ধ৷  আশার কথা খোদ রাশিয়াতে নারী পুরুষ নির্বিশেষে রাস্তায় নেবে তীব্র প্রতিবাদ করে চলেছে--- যুদ্ধ নয় শান্তি চাই বলে৷ রাশিয়ার পুতিন সরকার কয়েক হাজার  নরনারীকে আট করেছে৷ এই হলো শ্রমিক, গরীব দরদী রাশিয়ার কুৎসীত চেহারা!

এই ভয়ংকর অমানবিক পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের  অসহায় সরকারের পাশে দাঁড়ানোটা অতীব প্রয়োজন ইউরোপের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের৷ ইউক্রেনের নাগরিকগণ খাদ্য, পানীয়, ওষুধ ও অন্যান্য অনেক কিছু হতে বঞ্চিত আছে৷ তাদের পাশে দাঁড়ানোটা মানবতার ধর্ম৷ আজ  বিশ্ব নাকি সভ্য কিন্তু দেখে মনে হয় এ কেমন সভ্য!

চরম অত্যাচারী নিষ্ঠুর দেশ চীন তো ধরি মাছ না ছুঁই পানী নীতি  নিয়েছে৷  এই কঠিন পরিস্থিতিতে নিষ্ঠুরভাবে ক্ষুদ্র দুর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে ধবংস না করে দুই দেশ আলোচনায় বসুক আর নিজেদের মধ্যে মিটমাট করে নিক৷ পৃথিবী এই যুদ্ধ যুদ্ধ ধবংসাত্মক খেলায় শেষ হয়ে যাবে কারণ বর্তমানে সারা পৃথিবী এক সূত্রে বাঁধা৷ চরম দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হবে, পরিবেশ দুষিত হবে তাতে পৃথিবীর গরিব দেশগুলির অসহায় জনগনই মারা পড়ছেন ও মারা যাবেন৷ রাষ্ট্র সংঘকে মান্যতা দিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়া আলোচনায় বসুক৷

রাশিয়া তো খাদ্য, তেল অন্যান্য বিষয়ে দারুণ সংকটে আছে৷ সব কিছু যাতে মিটে যায় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়াটা আজ জরুরী বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ বিশ্বাস ভঙ্গ হচ্ছে মারাত্মকভাবে রাষ্ট্র নেতৃত্বগুলির প্রতি সারা পৃথিবীর শান্তিকামী জনগণের৷ তাই রাশিয়া যেন সংযত হয়৷ আমেরিকা ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি মিঃজেলেনিস্ত্রীকে আশ্রয় দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তিনি প্রত্যাখান করে স্বদেশেই থাকবেন বলে ঘোষণা করেছেন সারা রাষ্ট্রের জনগণকে মাতৃভূমি স্বাধীনতা রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়তে আহ্বান দেন৷ সেই কারণেই সে দেশের মহিলা বাহিনীও নাগরিকগণ রাস্তায় নেমে মরণপণ করে লড়াই করে যাচ্ছেন৷

এই পরিস্থিতিতে সমগ্র ইউরোপ যেন ইউক্রেনকে রক্ষায় এককাট্টা হয়ে সর্বপ্রকার সাহায্য করে বাহিরের আক্রমনকারী রাশিয়ানদের বিতাড়িত করেন৷ আজ সকলকে এক হয়ে বিশ্বৈকতাবোধকে জাগ্রত করে সার্বিক শোষন মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হয় সংগ্রাম চালিয়ে যেতেই হবে৷ এই মহান সংগ্রামে দুর্বলকে রক্ষা আর নিষ্ঠুর আগ্রাসী শক্তিকে কঠোর ভাবে প্রতিহত করে বিশ্বেরবুকে মানবতাকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবেই হবে৷