কৈবর্ত বিদ্রোহ ঃ পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম সুসংগঠিত গণবিদ্রোহ

লেখক
সুকুমার সরকার

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

৬) দ্বিতীয় প্রশ্ণ বা অসঙ্গতির অবতারণা ঐতিহাসিকদের আর একটি বক্তব্য নিয়ে৷ ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার লিখেছেন, ‘‘রামচরিতে ইহাও উল্লিখিত হইয়াছে যে দিব্য মহীপালকে পরাজিত ও সম্ভবত হত্যা করিয়া বরেন্দ্রভূমি অধিকার করিয়াছিলেন৷ সুতরাং প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে  যে দিব্য এই বিদ্রোহের সহিত সংশ্লিষ্ট ছিলেন ইহা অনুমান  করা স্বাভাবিক৷ কিন্তু দিব্যের সহিত বিদ্রোহীদের কোনপ্রকার  যোগাযোগ ছিল কিনা, রামচরিতে তাহার উল্লেখ নাই৷ সুতরাং অসম্ভব নহে যে, দিব্য প্রথমে  মহীপালের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে যোগদান করেন নাই, কিন্তু বিদ্রোহীদের হস্তে পরাজয়ের পর মহীপালকে হত্যা করিয়া তিনি বরেন্দ্র অধিকার করিয়াছিলেন৷’’ ৭) রমেশচন্দ্র মজুমদারের এই প্রশ্ণটিও অমূলক নয়৷ বরং এই প্রশ্ণের উত্তর খুঁজলেই দিবেবাক ভীম রহস্যের ধুম্রজাল যেমন অনেকটা উন্মোচন  হবে, তেমনই কৈবর্ত বিদ্রোহের ইতিহাস সম্পর্কে স্পষ্ট একটি ধারণা উঠে আসবে৷ দিবেবাক-ভীম প্রসঙ্গ রামচরিতমানসে ও ঐতিহাসিকদের ব্যাখ্যায় সুস্পষ্ট কিছু উল্লেখ না থাকায় ইতিহাসের এই অসঙ্গতি৷ ঐতিহাসিকভাবে পালযুগকে মোটামুটিভাবে বঙ্গ-মগধের স্বর্ণযুগ বলা হয়৷ পাল রাজাদের বেশিরভাগ রাজাই ছিলেন প্রজাবৎসল৷ তার মধ্যে দুই একজন যে অত্যাচারী রাজা ছিলেন না, তা নয়৷ এমনই একজন অত্যাচারী পালরাজা ছিলেন দ্বিতীয় দেবপাল৷ আগেই বলেছি, এই দ্বিতীয় দেবপালের নাম প্রাপ্ত ইতিহাসে কোথাও উল্লেখ নেই৷ পাল রাজাদের  সকল রাজার নামই যে পাওয়া গেছে তা অবশ্য জোর দিয়ে কেউ বলেননি৷ বরং ঐতিহাসিকরা এটা বলেছেন, যে বিশাল পাল সাম্রাজ্যে অনেক রাজার নাম এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি৷ যেমন ঐতিহাসিক নামা তারকনাথ যে বাণপালের উল্লেখ করেছেন পাল রাজবংশের  প্রচলিত বংশ তালিকায় সেই বাণপালেরও নামোল্লেখ দেখতে পাওয়া যায় না৷ এই রকম অনেক রাজার নামই পাওয়া যায়নি৷ কারণ সে যুগে ধারাবাহিক ভাবে ইতিহাস বা ইতিকথা লেখার চল ছিল না৷ পরবর্তীকালে ঐতিহাসিকরা  বিভিন্ন শিলালেখ থেকে, বিভিন্ন কাব্য-পুরাণ গ্রন্থাদি থেকে ইতিহাসের উপাদান সংগ্রহ করেছেন৷ সেই সংগ্রহে শংসয়িত ভাবে অত্যাচারী যে দ্বিতীয় মহিপালের নাম উঠে  আসছে, তিনি দ্বিতীয় মহিপাল না হয়ে দ্বিতীয় দেবপাল হবেন৷ কারণ পাল রাজবংশের অন্যপাল রাজাদের সেই অর্থে  প্রজাবিদ্বেষী হিসেবে পাওয়া যায় না, যেভাবে দ্বিতীয় দেবপালকে পাওয়া যাচ্ছে৷ তবে পালরাজ প্রশস্তি গথায় সেই অত্যাচারী দেবপালকে আবার পাওয়া যাচ্ছে না৷ এক্ষেত্রে প্রশস্তি রচয়িতারা সুকৌশলে দেবপালের নাম বাদ দিয়ে গেছেন৷ ইতিহাস বিকৃতির ঘটনা আজকের যুগেও যেখানে আকছার ঘটে চলেছে, সেখানে সেই যুগে ঘটাটা বিচিত্র কিছু নয়৷ সুতরাং প্রাপ্ত তাম্রশাসন বা মুদ্রাই শেষ কথা নয়৷ এর বাইরেও ইতিহাসের ঝলক লুকিয়ে থাকতে পারে৷ হয়তো সেই ইতিহাস বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছে৷ সেই বিস্মৃত ইতিহাস তুলে ধরার মতো প্রজ্ঞা সকল ঐতিহাসিকের ছিল না৷ কৈবর্ত বিদ্রোহের সত্য ইতিহাসের অনেকাংশই আজ বিস্মৃত৷ আর বিস্মৃত হবার সবচেয়ে বড় কারণ ঐতিহাসিকদের কাছে এই কৈবর্ত বিদ্রোহের ইতিহাসের মূল সূত্র একটি মাত্র রাজপ্রশস্তি মূলক কাব্য রামচরিতমানস৷ আর কাব্য মানেই কল্পনার স্বর্গরাজ্য৷ কবি সেখানে ইতিহাসের কাছে দায়বদ্ধ নন৷ রাজপ্রশস্তি তুলে ধরাই তাঁর কাছে বড় কথা৷ সেই কথা কাহিনিতে ইতিহাসের অনেক কিছুই অনুল্লেখ থেকে যেতে পারে৷ অত্যাচারী দ্বিতীয় দেবপালও রাজপ্রশস্তি গাথায় তাই অনুল্লেখিত বিস্মৃত৷ দুর্ভাগ্য জনকভাবে ইতিহাসের সেই বিস্মৃত অংশের সঙ্গেই আবার জড়িয়ে আছে দ্বিতীয় দেবপালের নাম৷ অত্যাচারী ও  প্রজাবিদ্বেষী ছিলেন বলে দ্বিতীয় দেবপাল দেবপাল প্রজাদের  কল্যার্ণার্থে এমন কিছুই করেননি যা প্রশস্তিগাথা হিসেবে কিংবা দানপত্রের শিলিালিপি বা তাম্র শাসন হিসেবে থেকে যাবে৷ তাঁর ইতিহাস মাটির বুকে নীরব কান্না হয়েই থেকে গেছে৷ পুরা-প্রত্ন ইতিহাসে মাটির বুকে কান পেতে আমরা কেউ মাটির কান্না শুনি না৷ মাটির  বুকে কান পেতে তুলে আনার চেষ্টা করি না বিস্মৃত ইতিহাসের মর্মকথা৷ ফলে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতেও পারি না৷ আমরা  ইতিকথার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে কড়া নাড়ি শুধু৷ তাতে ভেতর থেকে কেউ সারা না দিলে ফিরে আসি৷ উঁকি মেরে দেখি না, বা কান পেতে শুনি না ভেতরে ইতিহাসের কী ফিস ফিস আওয়াজ বা কান্নার শব্দ উত্থিত হচ্ছে৷ তাছাড়া আমরা এটাও জানি না যে, ‘ইতিকথা’ আর ‘ইতিহাস’ হুবুহু এক বিষয় নয়৷ ‘ইতিকথা’ হচ্ছে ঘটনার পরম্পরা৷ সন তারিখের হিসেব নিকেষ৷ সেখানে কোনো একটি সংখ্যা মিসিং হয়ে গেলে আর সূত্র খুঁজে পাই না৷ কিন্তু ‘ইতিহাস’ শুধু ঘটনার পরম্পরা নয়৷ ‘ইতি হসতি ইতোর্থে ইতিহাস৷ ‘হস’ ধাতুর অর্থ ‘হাসা’ বা ঔজ্জ্বল্য দান করা’৷ অর্থাৎ ইতিহাস হলো ইতিকথারও অধিক, স্থান কাল পাত্র থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসা সেই উজ্জ্বল আলোর রেখা যা সামনে চলার  পথ দেখায়৷ ইতিকথার নিরস সংখ্যা তত্ত্বের মতো ইতিহাসের পথ শুষ্ক নয়৷ সুতরাং বিস্মৃত ইতিহাস খুঁজতে গেলে আমাদেরকে সমাজ-সংস্কৃতির গভীরে কান পাততে হবে৷ আর সেখানেই খুঁজে পাওয়া যাবে ইতিহাসের উজ্জ্বল আলোর রেখা৷ হ্যাঁ, কৈবর্ত বিদ্রোহের বিস্মৃত ইতিহাসটুকুও আমাদের খুঁজতে হবে সেই পথ ধরে৷ কিন্তু আমাদের জ্ঞানের পরিধি তো সীমিত৷ তাছাড়া আমরা সেই প্রজ্ঞা ঘন গভীর মানসিকতা নিয়ে কোনো কিছু চর্চাও করি না৷ আমরা চর্চা করি প্রাশ্চাত্য জড়বাদী মানসিকতা নিয়ে৷ ফলে জ্ঞানের গভীরতম প্রদেশে  প্রবেশ করে অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার বলে আমরা তুলে পারি না কোনো বিস্মৃত ইতিহাসকে৷ ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে আমাদের এই দীনতার কথা উল্লেখ করে অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার অধিকারী শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তি তথা শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার আমাদের জন্য কিছু সূত্রের উল্লেখ যেমন করে গেছেন, তেমনি বহু বিস্মৃত ইতিহাস বিধৃতও করে গেছেন৷ কৈবর্ত বিদ্রোহের এই বিস্মৃত অংশটুকু তাঁর সেই ঐতিহাসিক বিধৃতি৷ যেখানে তিনি স্পষ্টত বলেছেন, ‘বৌদ্ধ’ যুগের শেষ চরণে বৌদ্ধ রাজা  দ্বিতীয় দেবপালের সময় উত্তর বাঙলায় এসেছিল এক বিরাট কৈবর্ত বিদ্রোহ৷

(৮) ইতিহাসের এই মহান কৈবর্ত বিদ্রোহের নায়কের নাম দিবেবাক৷ কিন্তু ঐতিহাসিকরা যে রামচরিতমানস কাব্যগ্রন্থ ধরে এই বিদ্রোহের ইতিহাস রচনায় প্রবৃত্ত হয়েছেন সেই রামচরিত মানসে দিবেবাকে দেখানো হয়েছে কুৎসিত, দস্যু হিসেবে৷ আর্য জাত্যাভিমানীদের কাছে অবশ্য জলজীবী জালিক কৈবর্ত ও হলজীবী হালিক কৈবর্ত উভয়ই ছিলেন কুৎসিত, অনার্য, অবজ্ঞেয়৷ তাঁদের অধিকার আদায়ের লড়াইকে দস্যুর সঙ্গে তুলনা করা তো স্বাভাবিক৷ যেখানে এই আজকের যুগেও ছাত্র-ছাত্রীদের দাবী আদায়ের প্রশ্ণ উঠলে নেতা মন্ত্রীরা নিষিদ্ধ মাওবাদী বলে দাগিয়ে দেন৷

যাইহোক, সন্ধ্যাকর নন্দী দিবেবাককে দস্যু, কুৎসিত, নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করলেও তাঁর বিদ্রোহকে কিন্তু অস্বীকার করতেপারেননি৷ অর্থাৎ গৌরাবান্বীত পাল সাম্রাজ্যের যুগের কোনো এক সময় ভীষণভাবে প্রজা-অসন্তোষ দানা বেঁধেছিল ও একটি বিদ্রোহ হবার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল৷ এখন দেখতে হবে পাল সাম্রাজ্যে এমন কোন্‌ অত্যাচারী রাজা ছিলেন যাঁর বিরুদ্ধে সেই প্রাচীন যুগে গণ বিদ্রোহ হবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল? শিলালেখ, দানপত্র কিংবা প্রশস্তিগাথা তো সেই রাজাদের থাকে যাঁরা  প্রজাবৎসল৷ যিনি অত্যাচারী, দুর্বিনীত তিনি তো এসবের প্রতি ধ্যান দেবেন না৷

হ্যাঁ, এই উত্তরের জন্য আমাদের শিলালেখ, দানপত্র কিংবা প্রশস্তিগাথার বাইরে ইতিহাস খোঁজার অন্য উপাদানের প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে৷ মাটির বুকে কান পেতে সমাজ-সংস্কৃতির গভীর থেকে তুলে আনতে হবে ইতিহাস৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তি তথা শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার কৈবর্ত বিদ্রোহের ইতিহাসের এই বিস্মৃত অংশটুকু সেই সমাজ-সংস্কৃতির পাঠ থেকে তুলে এনেছেন৷ কৈবর্ত বিদ্রোহে সঙ্গে দ্বিতীয় দেবপালের সম্পর্ক যুক্ত হয়েছে সেই সূত্র থেকেই৷ এ নিতান্তই ছিল বিস্মত ইতিহাস৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী এই কৈবর্ত বিদ্রোহের বিস্মৃত ইতিহাসের আলোচনার পূর্বে আরেক বিস্মৃত ইতিহাসের কথা তুলে ধরতেই হচ্ছে৷ নইলে বিস্মৃত ইতিহাস তুলে ধরার ঐতিহাসিক সূত্র অনুধাবনে অনুপপত্তি দূর হবে না৷ বিস্মৃত ইতিহাসের এই আখ্যানে তিনি তুলে এনেছেন প্রাচীন ভূরিশুট পরগণার বীরাঙ্গনা নারী রাণী ভবসুন্দরীর কথা৷ ভুরিশুট পরগণার রাজধানী মন্দারণের পাশে শক্তিগড়ে আকবরের সেনাপতি মানসিংহের সঙ্গে ভূরিশুট পরগণার দুর্বল রাজা জগৎনারায়ণের পক্ষে রাণী ভবসুন্দরী যুদ্ধ করে বাঙলার মান বাঁচিয়েছিলেন ও আকবর কর্তৃক রায়বাঘিনী উপাধিও পেয়েছিলেন৷ রাণীর এই কীর্তিগাথার কথা ইতিহাসে কেউ তুলে ধরেননি৷ প্রথমত, প্রাচীন মধ্যযুগে একে তো ইতিহাস ঠিক মতো লেখাই হয়নি তার ওপর অহংকারী পুরুষ শাসিত সমাজে নারীর কীর্তিগাথার কথা লেখা হবে এমন কল্পনা করাও দুরাশা! ফলে গৌরাবান্বিত এই ইতিহাস বিস্মৃতই ছিল৷ কিন্তু স্থান নামের ইতিহাসের মধ্যে, প্রবাদ-প্রবচনের মধ্যে বাঙলার আকাশে বাতাসে কিছু কিছু সূত্র ঘুরপাক খাচ্ছিল৷ সেই সূত্রগুলি ছিল ‘‘রায়বাঘিনী, ‘‘ভবসুন্দরী’’, ‘‘ভবী ভুলবার নয়’’ ‘‘শক্তিগড়’’ ‘‘পিচকারীর ঢাল’’, ‘‘নোয়াদার ঢাল’’ ইত্যাদি৷ কিন্তু এতদিন আমরা কান পেতে তা শুনার বা বোঝার চেষ্টা করিনি যে, এই শব্দ বা প্রবাদ-প্রবচনগুলি কোন্‌ ইতিহাস বহন করে চলেছে৷ কখনো প্রশ্ণ করে উত্তর খুঁজে দেখার চেষ্টা করিনি, কে ছিলেন এই ‘‘রায়বাঘিনী’’? কিংবা কান পেতে শোনার চেষ্টা করেনি৷ ‘‘যতই তেল দাও সিঁদুর দাও ভবী ভুলবার নয়’’, এই ভবী কে? কেন তাকে ভোলানো যায়নি৷ এইসব প্রবাদের অর্থ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল, এই ‘ভবী’ আসলে সেই ভবসুন্দরী রাণী৷ ইতিহাসটী ছিল এই রকম, ‘‘বাঙলার শস্যভাণ্ডার বর্ধমান দখলের জন্য আকবর মানসিংহকে দূত করে সসৈন্য ভুরিশুট পরগণায় পাঠালেন৷  ভূরিশুট পরগণার দুর্বল রাজা জগৎনারায়ণ বিনাযুদ্ধে আকবরের বশতা স্বীকারের জন্য শ্বেত পতাকা হাতে এগিয়ে যাবার মনস্থির করলেন৷ কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন অন্তপুরবাসিণী রাণী ভবসুন্দরী৷ তিনি অত সহজে বাঙলার মান বিকিয়ে দিতে রাজি নন৷ তিনি গোপনে আমর্ত্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে রাজাকে বন্দি করে কারাগারে নিক্ষেপ করে মানসিংহের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন৷ তিনি দ্রুত বাগদী বাহিনী ঘটন করে যুদ্ধের জন্য পা বাড়ালেন৷ রাজা জগৎনারায়ণ কারাগার থেকে চীৎকার করে বলতে লাগলেন ‘‘ভবী তুই যাসনে৷ তুই সামান্য নারী, আকবরের সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধে তুই  পারবিনে৷’’