সময়োচিত কিছু কথা

লেখক
বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়

বাঙালীর ‘‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’’ নিয়ে অনেকেই মজা করে বলে থাকেন এখন তোরো নয় পার্বণ আরও অনেক বেড়ে গেছে৷ এসব শুণে বাঙালী রুষ্ট হয় না৷ বরং এইসব পার্বণের মধ্য দিয়ে বাঙালীরা আনন্দ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করে৷ আর এতে অন্যায় কিছু আছে বলে বাঙালী মনে করে না৷ নানান ধরনের পার্বণকে কেন্দ্র করে বিভিন্নস্থানে মেলাও বসে৷ মেলা মানেই দেদার আনন্দ৷ বাংলার কিছু কিছু মেলা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ও  আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও এইসব মোলর সুনাম আছে৷ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি রাজ্যের বাইরে থেকেও অনেক মানুষ এসব মেলায় উপস্থিত হন৷ দেশের বাইরে থেকেও অনেক মানুষ বাঙলার কিছু কিছু মেলায় অংশ নেন৷ এতে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারী উভয়েই উপকৃত হন৷ মেলায় বহু মানুষের সমাগম হয়৷  তবে করোনার  সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালে ও এই বছরের প্রথম দিকে সেভাবে  অনেক মেলার আয়োজন করার অনুমতি মিলছে না৷

পৌষমেলা, বই মেলা,স্বাস্থ্যমেলা, হস্তশিল্প মেলা, সঙ্গীত মেলা, রথের মেলা,  কৃষি মেলা, সবলা মেলা, উরুষমেলা ইত্যাদি মেলাগুলির সাথে বাংলার মানুষ পরিচিত৷ এসব মেলায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ও বেশ ভালো৷ কিন্তু সম্প্রতি বাংলায় চালু হয়েছে ‘‘যোগদান মেলা’’৷ সর্বভারতীয় এক রাজনৈতিক  দল এই মেলা চালু করেছে, যার সাথে বঙ্গবাসী ততটা পরিচিত নয়৷ এই মেলার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব  কতখানি তা বঙ্গবাসী বিচার করবেন৷ তবে এ মেলা আর পাঁচটি মেলার মত নয়৷ এখানে শুধুই ভিন্ন রাজনৈতিক মত ও পথের লোককে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পুতাকা ধরিয়ে সেই দলে যোগদান করানো হয়৷ এটাই এখন বাংলার নতুন ‘‘যোগদান মেলা’’৷ অন্যান্য মেলায় কেনা বেচা হয়ে থাকে, মজা হয় দেদার৷ নিন্দুকেরা বলেন এই যোগদানকে কেন্দ্র করে নাকি বড়ো বড়ো ‘‘ডিল’’ হয়! কী সেই ডিল বা কেমন ধরনের ডিল তা প্রকাশ্যে না এলেও জনগণ  নাকি কিছু কিছু অনুমান করতে পারছেন! যাঁরা যোগদান মেলায়  হাজির হয়ে এভাবে .............. হচ্ছেন তাঁদের সাধারণ বঙ্গবাসী কি চোখে দেখছেন সে ব্যাপারে কারও খেয়াল নেই৷ না থাকারই কথা৷ নতুনরূপে, নতুন শ্লোগানে, নতুন ভূমিকায় নামতে হচ্ছে তাদের৷ ফলে  কে কী ভাবছে ওসবে নজর দেওয়ার সময় কোথায়? অনেক কিছু মানিয়ে নিতে হচ্ছে ৷ বাঙালী অনেক মেলা-পার্বণ দেখেছে, এখন দু’চোখ ভরে দেখুক ‘‘যোগদান মেলা’’৷