January 2019

বাংলা বানান প্রসঙ্গে

ইতোপূর্বে, ইতোমধ্যে :   ইতিপূর্বে, ইতিমধ্যে–‘ইতিপূবে’, ‘ইতিমধ্যে’ দুটো শব্দই অশুদ্ধ৷ কারণ, শুদ্ধ শব্দগুলি হচ্ছে ‘ইতঃপূর্বে’, ‘ইতঃমধ্যে’৷ তবে ইচ্ছে গেলে বিসর্গের ব্যবহার না করেও ‘ও’–কার দিয়ে কাজ চালাতে পারি৷ লিখতে পারি ‘ইতোপূর্বে’, ‘ইতোমধ্যে’৷

ওই : ‘ও–ই’ শব্দটি বাংলা ‘ও’ শব্দটি থেকে এসেছে৷ তাই তার বানান ‘ও–ই’ হতেই হবে–‘অ–ই’ অথবা ‘ঐ’ দিয়ে লিখলে চলবে না৷

উচিত: বচ + ণচ + ক্ত = উচিত৷ মনে রাখা দরকার, ‘ক্ত’ প্রত্যয়ান্ত শব্দে খণ্ড ‘ত’ (ৎ) বা হসন্তযুক্ত ব্যঞ্জন হয় না৷ তাই ‘উচিত’ বানান পুরো ‘ত’ দিয়ে লিখতে হবে, খণ্ড ‘ত’ (ৎ) দিলে চলবে না৷

সমস্ত বাধা ডিঙ্গিয়ে শবরীমালা মন্দিরে দুই মহিলার প্রবেশ

কেরলের  শবরীমালা  মন্দিরে ১০ থেকে  ৫০ বছরের ঋতুমতী মহিলাদের মন্দিরে  প্রবেশের অনুমতি  নেই৷  মন্দিরের  এই ট্র্যাডিসন ভেঙ্গে  সুপ্রিম কোর্ট সব বয়সের  মহিলাদের  মন্দিরে  প্রবেশের অধিকার দান করলেও গোঁড়া ভক্তরা ও তাদের সঙ্গে  বিজেপি ও কংগ্রেসও ডগমার প্রাচীর ভেঙ্গে মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে থাকে৷ আয়াপ্পা ভক্তদের ব্যাপক বিক্ষোভ অবরোধের কারণে মহিলারা মন্দিরে  প্রবেশ করতে পারে নি৷  পুলিশও শত চেষ্টা করে  গোঁড়া ভক্তদের অবরোধ ভাঙ্গতে  পারেনি৷

পালং শাক

শাক বা পত্রশাকেদের মধ্যে পালং একটি উত্তম মানের শাক৷ অতি মাত্রায় ভক্ষণ করলে শ্লেষ্মাবৃদ্ধি ঘটে৷ অন্যথায় এই শাক গুণেরই আকর৷ শাকটি খেতে মিষ্টি মিষ্টি, সুস্বাদু, শরীরের পক্ষে হিতকর প্রভাব–সম্পন্ন, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হৃদ্রোগের ঔষধ (পালং শাকের ক্কাথ), শ্বাসরোগের ঔষধ (পালং শাকের রস), লিবারের ক্ষতের ঔষধ ও বিষক্রিয়া–নাশক৷ বিটামিনে পরিপূর্ণ এই শাকটি গুণের তুলনায় খুবই সস্তা৷ ভাজা না করে ঘন্ট বা চচ্চড়িতে ব্যবহার করাই বেশী ভাল৷ ভাজা খেতে গেলে কম তেলে ভাজতে হবে৷

টমেটো

লৌকিক সংসৃক্তে ‘কৃমীলক’ মানে টমেটো৷ এই মৌলিক আমেরিকাজাত সব্জি বা ফলটি সেখানকার আদি বাসিন্দারা এর বুনো গন্ধের জন্যে নিজেরা খেতেন না–গৃহপালিত পশুকে খাওয়াতেন৷ এতে পশুও হৃষ্ট–পুষ্ট হত, দুধ দিত বেশী৷ ইউরোপীয়রা আমেরিকায় গিয়ে এই সব্জিটির সংস্পর্শে এসে একে মনুষ্য খাদ্যরূপে গ্রহণ করলেন৷ খেতে শুরু করলেন লবণ সহযোগে ফল হিসেবে৷ এর থেকে তৈরি হল সস্, মার্মালেড, জেলি প্রভৃতি৷ এর রস থেকে তৈরি করলেন কয়েকটি ঔষধও৷ তাঁরা জেনে ফেললেন, এতে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ লবণ ও মূল্যবান বিটামিন৷ টমাটো কাঁচা স্যালাড হিসেবে বা স্যুপ হিসেবে অথবা টমাটোর রস নিয়মিত ভাবে খাওয়া উচিত, কেননা এটি লিবার ও প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের

কাঁটাল

কাঁটাল ভারত ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার একটি নামকরা ফল৷ শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত ‘কন্টকীফলম্’ থেকে অর্থাৎ যে ফলের গায়ে কাঁটা আছে৷ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রায় ৪৭ প্রজাতির কাঁটাল পাওয়া যায়৷ কাঁটাল একটি পুষ্টিকর খাদ্য, তবে কিছুটা দুষ্পাচ্য৷ কাঁচা কাঁটাল (যাকে বাংলায় এঁচোড় বলা হয়) গুণগত বিচারে মাংসের সমান, অথচ মাংসের তামসিক দোষ এতে নেই৷ বাংলায় কাঁচা কাঁটালকে অনেকে ‘‘গাছপাঁঠা’’ বলে থাকেন৷ কাঁটালের বীজ আলুর চেয়েও অনেক বেশী পুষ্টিকর ও সুস্বাদু৷ ভারতে আলু আসবার আগে পর্যন্ত ভারতের মানুষ কাঁটাল বীজই মুখ্য তরকারী রূপে ব্যবহার করত৷ এখনও খাদ্য হিসেবে কাঁটাল বীজের ব্যবহার আছে৷ কাঁটালের একটি ভিন্ন প্রজাতি–রুটিফল

কলা

যদিও সাধারণ অর্থে ‘কদলী’ বলতে সব কলাকেই বোঝায়, তবু বিশেষ অর্থে ‘কদলী’ অর্থে কাঁচকলা আর ‘রম্ভা’ মানে পাকা কলা৷ এখানে কাঁচকলা বলতে আমরা সেই কলাকে বোঝাচ্ছি যা কাঁচা অবস্থায় তরকারী রেঁধে খাওয়া হয়, আর পাকা অবস্থায় সাধারণতঃ খাওয়া হয় না৷ কলা সমস্ত গ্রীষ্মপ্রধান দেশেই জন্মায়৷ তবে কলার আদি নিবাস পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ– East Indies Archipellagoঅর্থাৎ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স প্রভৃতি দেশ৷ ভারতও অন্যতম কলা–উৎপাদনকারী দেশ৷ কেবল ভারতেই শতাধিক প্রজাতির গাছ রয়েছে৷ ভারত ও বহির্ভারত নিয়ে সমগ্র বিশ্বে কলার প্রজাতির সংখ্যা দেড় হাজারের মত৷ ভারতের কেরলেই সবচেয়ে বেশী প্রজাতির কলা পাওয়া যায়৷ বাংলায় সবচেয়

নয়াবসানের কথা

কোন জায়গায় নোতুন প্রজা বন্দোবস্ত হলে অর্থাৎ নোতুনভাবে প্রজা বসানো হলে সেই জায়গাগুলোর নামের শেষে ‘বসান’ যুক্ত হয়৷ যেমন–রাজাবসান, নবাববসান, মুকুন্দবসান, নুয়াবসান (অনেকে ভুল করে ‘নয়াবসান’ বলে থাকেন–সেটা ঠিক নয়৷ দক্ষিণী রাঢ়ী ও উত্তরী ওড়িয়ায় নোতুনকে ‘নুয়া’ বা ‘নোয়া’ বলা হয়৷ ‘নয়া’ হচ্ছে হিন্দী শব্দ৷ বিহারের ভাষায় ‘নয়া’র পর্যায়বাচক শব্দ হচ্ছে ‘নয়্কা’ বা ‘নব্কা’৷ মেদিনীপুর জেলার নোয়াগ্রাম শহরটিকে আজকাল অনেকে ভুল করে নয়াগ্রাম বলে থাকে)৷

আমি বেঁচে থাকবো

প্রভাত খাঁ

আকাশের দিকে তাকালে

মনটা কেমন বড়সড়ো হয়ে যায়৷

মাটির দিকে তাকালে বেড়া ও

পাঁচিলের ধাক্কায় মনটা ছট্ফট্ করে৷

আকাশ ও মাটির সাথে কোনো

মিল খুঁজে পাওয়া দায়৷

এমনটা কবে হবে যখন

মানুষ মনের পাঁচিল ভেঙে

সকলের সাথে মিশে যাবে৷

সেই শুভদিনটুকু আসবেই আসবে,

তারই ভাবনা নিয়ে বেঁচে থাকবো৷

সাত্ত্বিক আহার, নেই তুলনা তার

শিবরাম চক্রবর্তী


সাত্ত্বিক আহার দেহ মন আত্মার

    শ্রীবৃদ্ধি ঘটায়

তাই সে সদাই গুণীজনে

    উচ্চ আসন পায়৷

সাত্ত্বিক আহার দেখি তাহার

    দেহে পুষ্টি ভরা

অন্যের সাথে লড়ে জিতে

    হয় সে আত্মহারা৷

সাত্ত্বিক আহার নির্বিকার

    ভাবে খাওয়া যায়

স্বাদে-গন্ধে মহানন্দে

    আপন ছন্দে ধায়৷

সাত্ত্বিক আহার করবে সবার

    রোগমুক্ত শরীর

এই আহারই উপযুক্ত তাই

    সমস্ত রোগীর৷

সাত্ত্বিক আহার বয়সের ভার

    কমাতে জুড়ি নাই

দীর্ঘ জীবন সজীব মন

    পাবেরে সবাই৷

পাঁচু ডায়াস

সে অনেকদিন আগেকার কথা৷ স্র্যামপুরের পাঁচু দাস অভাবে পড়ে কিরিস্তান হয়েছিল৷ সেবার বাঙলায় ধান ভাল হয়নি৷ বেশ অভাব–নটন চলছিল৷ পাঁচু দাস গীর্র্জেয়১ (১এটি একটি আইবেরিয়ান শব্দ) গিয়ে পাদরী২ (২এটিও একটি আইবেরিয়ান শব্দ) সাহেবের কাছে কিছু ভিক্ষে চেয়েছিল৷ পাদরী সাহেব তাকে আদর–যত্ন করে পেট ভরে খাইয়ে দিয়েছিলেন আর স্র্যামপুর শহরবাসীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে পাঁচুর জাত গেছে৷