সম্পাদকীয়

বাংলা ভাষাকে স্ব– মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার শপথ নিন

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বাঙালী জনগোষ্ঠীর কাছে এক গর্বের দিন হ’ল ২১শে ফেব্রুয়ারী৷ ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারী পূর্ব বাঙলার অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢ়াকায় উর্দু ভাষার পরিবর্তে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তীব্র প্রতিবাদ করেছিল৷ কিন্তু পাকিস্তানের উর্দু সাম্রাজ্যবাদীদের প্রতিভূ ঢ়াকার শাসক গোষ্ঠী ছাত্রদের সেই আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে নির্মমভাবে গোলাগুলি চালিয়ে বহু ছাত্রকে মারাত্মকভাবে আহত করে ও বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে৷ নিহতদের মধ্যে জব্বর, সালেম, রফিক, বরকত ও শফীউর ছাড়া আরো অনেকেই ছিলেন৷ এই ভাষা আন্দোলন বহু বছর ধরে চলে৷ শেষে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ নামে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধ

অমর ২১শের শপথ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী বাঙলার ইতিহাসে–এখন আর শুধু বাঙলার ইতিহাসে নয় পৃথিবীর ইতিহাসেই এক স্মরণীয় দিন৷

পাপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে শপথ নেওয়ার দিন নীলকন্ঠ দিব

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

১২ই ফেব্রুয়ারী ‘নীলকণ্ঠ’ দিবস৷ আনন্দমার্গের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন৷ আজ থেকে ৪৪ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ঘটনা৷ পটনার বাঁকিপুর সেন্ড্রাল জেলে মিথ্যা অভিযোগে বন্দী মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূত্তিজীক্ হত্যার উদ্দেশ্যে ওষুধের নামে প্রাণঘাতী মারাত্মক বিষ প্রয়োগ করা হয়৷ কিন্তু মার্গগুরুদেব সেই বিষকে আত্মস্থ করে তাঁর প্রতিক্রিয়া নষ্ট করে দেন৷

মার্গগুরুদেব এই বিষ প্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী করেন৷ সরকার তাঁর দাবীতে কর্ণপাত করেনি৷ এরপর ১লা এপ্রিল (১৯৭৩) তিনি এই দাবীতে অমরণ অনশন শুরু করেন৷ এই ঐতিহাসিক অনশন চলেছিল পাঁচ বছর চার মাস দুই দিন৷

মোদীর বাজেটের লক্ষ্য কর্র্পেরেট উন্নয়ন

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

গত বুধবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সংসদে যে বাজেট পেশ করেছেন তাতে আখেরে  লাভ হবে কর্র্পেরেট জগতের লোকেদের৷ অর্থাৎ বড় লোকেদের৷ তাদের মুনাফার পরিমান লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে মোদী জমানায়৷ এই বাজেটে আমজনতা তথা গরীব মধ্যবিত্তদের স্বস্তি দেওয়ার জন্য কিছুই নেই৷ শিল্পক্ষেত্রেও  আশা যোগাতে ব্যর্থ এই বাজেট৷ সরকারী কোষাগারের ঋণ কমিয়ে সরকারের নিজের আয় বাড়ানোর ও ঘাটতি কমানোর কোন বাস্তবসম্মত দিশা নেই বাজেটে৷  মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, মূল্যবৃদ্ধি কমানোও আর্থিক মন্দা থেকে উত্তরন ও বেকারত্ব দূরীকরণে বাজেটে কোন উচ্চবাচ্য নেই৷ অর্থমন্ত্রীর মুখ থেকে কোন আশাব্যঞ্জক কথাও শোণা যায়নি৷ সরকারী সম্পত্তি না বিক

নেতাজীর চিন্তাধারার প্রাসঙ্গিকতা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আমাদের ছেলেবেলায় নেতাজীর কয়েকটি বাণী মহত্তর জীবনাদর্শের পথে এগিয়ে চলবার ক্ষেত্রে অফুরন্ত প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করত৷ নেতাজী জয়ন্তীর এটাই ছিল সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি৷ বর্তমানেও নেতাজী জয়ন্তী পালন করা হয়, এমনি বিভিন্ন মহাপুরুষের  জন্মজয়ন্তী ঘটা করে’ পালন করা হয়, নাচ-গান-বত্তৃণতা-মিছিলের  আয়োজন করা হয়, কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় তাঁদের জীবন ও বাণীকে অন্তর দিয়ে উপলদ্ধি করার চেষ্টা করা হয় না৷ কে বা কারা কত বড় করে’ কত জাঁকজমক করে অনুষ্ঠান করল, তারই প্রতিযোগিতাটাই এখন মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কাদের মিছিল কত বড় হয়েছে এখন সেটা নিয়েই সবাই মাথা ঘামায়৷ তোতাপাখির মত বত্তৃণতা দিয়ে বক্তারা শেষে একটা আত্মতৃপ্তি অনুভব

বর্তমান সমাজের এক সর্বনাশা ব্যাধি----ধন-বৈষম্য

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

কয়েক বছর আগে বিশ্ব ব্যাঙ্কের এক সমীক্ষায় বলা হয়, পৃথিবীতে আয় বৈষম্য ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ আরও বলা হয়েছে বিশ্বে দারিদ্র্য সীমারেখার নিম্নে রয়েছে ৭৬ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ৷ আজ পৃথিবীর প্রায় এক শতাংশ মানুষের হাতে কুক্ষিগত পৃথিবীর ৫০ শতাংশের বেশী সম্পদ৷ সমাজে দারিদ্র্য সীমারেখার নিম্নে যারা বসবাস করছে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি না হলেও গত দশ বছরে ভারতে কোটিপতিদের সম্পদ বেড়েছে দশ গুণ৷ এক বছরে ভারতের শীর্ষস্থানীয় পুঁজিপতিদের সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ ৫০,৪০০ কোটি টাকা৷ আর প্রতিদিনই এক-এক জনের গড়ে সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৩৮ কোটি টাকা৷ তাই দেখা যাচ্ছে পুঁজিপতিদের সম্পদ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, অথচ কোটি কোটি ম

সমাজ ও আধ্যাত্মিকতা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আজকের সমাজের বুদ্ধি -জীবীদের  মধ্যে যাঁরা  নিজেদের প্রগতিশীল  বলে জাহির করেন, তাঁরা আদর্শ সমাজ সংরচনায় আধ্যাত্মিকতার যে একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, তা সাধারণতঃ স্বীকার করতে চান না৷ তাঁরা আধ্যাত্মিকতাকে মনে করেন একটা অন্ধবিশ্বাস  বা কুসংস্কার৷ আসলে ‘আধ্যাত্মিকতা’  সম্পর্কে তাঁদের ধারণাটাই পুরোপুরি ত্রুটিপূর্ণ৷

ধর্মমতের বিভেদ ভুলে মানুষ মানবধর্মে প্রতিষ্ঠিত হোক

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বর্তমানে ধর্মের নামে নানান ধরণের গোঁড়ামী, জাত–পাতের ভেদ ও সাম্প্রদায়িক বিভেদ ও বিদ্বেষ চলছে৷ অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারের জালে জড়িয়ে আঁতুড় ঘর থেকে শশ্মানঘাট পর্যন্ত শোষনের জাল বোনা হয়েছে৷ অপ্রয়োজনীয় সামাজিক আচরণের বোঝাকে ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে বলা হচ্ছে৷ তা কিন্তু  মোটেই ঠিক নয়৷

পুঁজিবাদের করালগ্রাসে মানব সমাজ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আজ থেকে দশ লক্ষ বছর পূর্বে মানুষের আবির্ভাব৷ মানুষ যখন আসে বন্যপ্রাণীদের মত মানুষেরও প্রধান কাজ ছিল আহারান্বেষণে ঘুরে বেড়ানো৷ আর সেদিন অন্যান্য প্রাণীদের তুলনায় সে ছিল অসহায়৷ তার চারদিকে ঘুরে বেড়াত নানান হিংস্র ও ভয়ঙ্কর পশুর দল৷ তাদের কাছ থেকে আত্মরক্ষা করাটাই তখন তাদের কাছে প্রধান সমস্যা ছিল৷ আর সেই আদিম মানুষ তখন ভয় করত অন্যান্য মানুষদেরও৷ কখন তার আহূত খাদ্য অন্যেরা ছিনিয়ে নেয়৷ সব নিয়ে লড়াইটাই ছিল তার কাছে একমাত্র বাঁচার উপায়৷ আর তার জন্যে দরকার ছিল দৈহিক শক্তি৷ এইভাবে লড়াই করতে করতে যাদের দৈহিক শক্তি ছিল বেশী, সাহসী, লড়াইয়ে পটু মানুষের মধ্যে প্রাধান্য বাড়াল তাদের৷ আর তার ওপর মানুষ ছিল যূ

ধূলুন্ঠিত মনুষ্য মর্যাদাগর্ব

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

ভয়ঙ্কর মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত সমাজ৷ উত্তর প্রদেশের হাথরাস থেকে দিল্লীর শ্রদ্ধা ওয়াকার মনুষ্য মর্যাদাগর্ব বার বার ধূলুন্ঠিত৷ দ্বি–পদ জীবের এই নির্মম নিষ্ঠুর আচরণকে পাশবিক বললেও পশুর প্রতি অবিচার করা হবে৷ কিন্তু আর কত দিন?