নারী নির্যাতন ও একটি বিজ্ঞানসম্মত সমীক্ষা
দেশে মহিলাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার কেন বাড়ছে? কেন মেয়েদের ওপর বলাৎকার করে নৃশংস খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে?
- Read more about নারী নির্যাতন ও একটি বিজ্ঞানসম্মত সমীক্ষা
- Log in to post comments
দেশে মহিলাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার কেন বাড়ছে? কেন মেয়েদের ওপর বলাৎকার করে নৃশংস খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে?
ছোটবেলায় মুখে মুখে শুনতাম ‘বর্গী এলো দেশে’৷ এই বর্গীরা কারা ও তাদের বাঙলায় আসার কারণটি কী? সে প্রায় ২৮০ বছর আগের কথা৷ এই বর্গীরা ছিল পশ্চিম ভারতীয়, তৎকালীন মারাঠা রাজ্যের৷ এই বর্গীদের সর্দার মারাঠা দস্যু ভাস্কর পণ্ডিত নামে পরিচিত৷ মূলত তাঁরা সম্পদ ও নারী লুট করতো, এক কথায় তাদের আমরা লুটেরা বলতাম৷ এদেরকে সাহায্য করতেন একশ্রেণীর অর্থ পিশাচ মীরজাফর অথবা রাজাকার বাঙালী, যারা জাতির কলঙ্ক--- বাঙালী জাতির বিশ্বাসঘাতকের দল৷ বাঙালীস্থান অতীতে ছিলো এখনো আছে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলার দেশ৷ তাই কবি বলেছিলেন---
‘এমন দেশটি কোথায় খুঁজে পাবে নাকো তুমি,
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডিজিটাল ইন্ডিয়া গড়তে চান৷ তিনি তাঁর এই সংকল্পের কথা দেশে বিদেশে সর্বত্র ব্যক্ত করেছেন ও বিদেশী কোম্পানীগুলিকে এদেশে ঢালাও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁর এই সংকল্প পূরণ করতে৷ তিনি বলেছেন, ইন্টারনেটের সুবিধা আমজনতাকে পাইয়ে দেওয়া হবে৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরকারী পরিষেবাকে জনসাধারণের হাতের মুঠোয় আনবেন তিনি৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে উন্নত শিক্ষণ ও উন্নত চিকিৎসাকে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেবার সুভাষিত বাণী তিনি সবাইকে শুনিয়েছেন৷ বিদেশী ইলেক্ট্রনিক কোম্পানীগুলি তাঁর এই মহৎ সংকল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন৷
মানুষ সাধারণতঃ চলে আত্মসুখকেন্দ্রিক দর্শন বা জীবন সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গী, জড়কেন্দ্রিক দর্শন বা দৃষ্টিভঙ্গী কিংবা ভাবজড়তা কেন্দ্রিক দর্শন বা দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে৷ আত্মসুখকেন্দ্রিক দর্শনের অনুগামী বলতে বোঝায় যারা নিজের সুখ, নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কিছু বুঝতে চায় না৷ তারা যা করে, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে নিজেদের সুখের জন্যে করে৷ তারা বলে ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম’৷ তাদের সমস্ত কার্যকলাপের পেছনে আছে এই আত্মসুখের বাসনা৷ পুঁজিবাদী দর্শন এই পর্যায়ে পড়ে৷
মানবতা যখন এক অত্যন্ত বেদনাদায়ক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে, ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা, বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতি অর্থনীতি রাষ্ট্রনীতি-সমাজ জীবনের সর্বস্তরে যখন গ্লানি দেখা দেয়, সর্বস্তরেই অধর্মের প্রার্দুভাব দেখা দেয়, সেই অধর্মের হাত থেকে গ্লানির হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া মানুষের সাধ্যের বাইরে, তখনই পরমপুরুষকে অবতীর্ণ হতে হয় ধরাধামে অধর্মের হাত থেকে অশুভ শক্তির হাত থেকে সমাজকে পরিত্রাণ করতে৷
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি থেকে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি, সংবাদ মাধ্যম থেকে মন্ত্রী আমলা–দেশের ন্যায় নীতি শৃঙ্খলা রক্ষার দায়ীত্ব যাদের কাঁধে–তারাই আজ দুর্নীতির জ্বালে জড়িত৷ বহু দলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শাসকের মাথার ওপর নৈবিদ্যের মণ্ডা হয়ে যারা বসে থাকেন সেই নেতা মন্ত্রীরা দলীয় গণ্ডীর বাইরে আসতে পারে না৷ কিন্তু আমলা আদালত৷ সংবাদ মাধ্যম গণতন্ত্র রক্ষার মূল স্তম্ভগুলিই আজ দলদাসে পরিণত হচ্ছে৷ শাসকের রক্ত চক্ষুর সামনে তারা অসহায়৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও হতাশ হয়ে বলতে হয়–এখন টাকা দিয়ে আদালতের রায় কেনা বেচা যায়৷
নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা, নীচে ধরনীর কোলে শিউলি কাশের মেলা নিয়ে আসে শরতের আগমন বার্র্ত৷ এই শরতেই বাঙালীর প্রিয় উৎসব---দূর্র্গপূজা,এই পূজাকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার কোটি টাকা বাজারে ছড়িয়ে পড়ে৷ কুমোর পাড়া, আলো,মাইক, প্যাণ্ডেল বহু মানুষের সাময়িক কিছু উপার্জনের পথ করে দেয়৷
১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী দেশ শাসনের জন্যে ভারতের নিজস্ব সংবিধান প্রবর্ত্তিত হয়৷ তারপর ৭২ বছর অতিবাহিত হয়েছে৷ আজ দেশের নাগরিককে নাগরিকত্বের প্রমাণের জন্যে লাইনে দাঁড়াতে হবে, চৌদ্দপুরুষের নথি খুঁজে বার করতে হবে৷ সীমাহীন অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক বিভাজন ও রাজনৈতিক সংঘাতে প্রতিনিয়ত পদদলিত হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার৷ পরিতাপের বিষয় এই যে শাসক দলের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদতে এগুলি হয়ে চলেছে৷ অথচ শাসক দলেরই প্রধান দায়িত্ব সংবিধানের অঙ্গীকারগুলি পালন করা৷ মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করা৷
রবীন্দ্রনাথ বলেছেন --- ‘‘মানুস পিতামাতার মধ্য থেকে যে অমৃতের ধারা লাভ করেছে সেইটিকে অনুসরণ করতে গিয়ে দেখেছে কোথাও তার সীমা নেই৷’’ পিতামাতার সঙ্গে সন্তানের যে অবিচ্ছেদ্য স্নেহের সম্পর্ক তা অন্তহীন, তা চিরন্তন৷ তাই পিতা মাতা যেমন তাঁদের অন্তরের সমস্ত স্নেহ ভালবাসা, সম্পদ দিয়ে সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালন করেন, সন্তানকে উপযুক্ত করে গড়ে তোলেন, উপযুক্ত সন্তানও তেমনি পিতামাতার বয়সকালে তার দায়িত্ব পালন করে, পিতামাতার সব ভার সন্তানের ওপর বর্র্তয়৷ আমাদের সমাজে এটাই ছিল সংসারের স্বাভাবিক ধর্ম৷ এ নিয়ে কোন গোল ছিল না৷ কিন্তু আজ জড়বিজ্ঞানের নিত্যনূতন আবিষ্কার যেমন মানুষকে অঞ্জলি ভরে দিয়েছে, তেমনি
প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই বিভিন্ন ভাবে কি কেন্দ্রীয় সরকার কি রাজ্য সরকার দরিদ্র্য জনসাধারণের সমস্যা সমাধানের নামে নানান পাঁয়তারা কষছেন, নানা ধরণের চমক দিয়ে চলেছেন৷ কিন্তু স্বাধীনতার পর ৭০ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল আজও গরীব জনসাধারণের দুর্দশার অন্ত নেই৷ আসলে পুঁজিবাদ বা মার্কসবাদ–এদের কোনটাই দরিদ্র মানুষের যথাযথ কল্যাণ করতে পারবে না৷ প্রাউটের অর্থনৈতিক গণতন্ত্রই একমাত্র বিকল্প৷