কলিকাতা ঃ গত ১৪ই সেপ্টেম্বর প্রভাত সঙ্গীত সৃষ্টির ৩৬বর্ষ পূর্ত্তি উপলক্ষ্যে দেশে বিদেশে সর্বত্র মহাসমারোহে ‘প্রভাত সঙ্গীত’ দিবস পালিত হয়৷ এদিন কলকাতায় আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় আশ্রমে এই উপলক্ষ্যে বিকেলে অখন্ড কীর্ত্তন ও মিলিত সাধনার পর প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে এক মনোরম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়৷ এই অনুষ্ঠানে আচার্য দীপাঞ্জনানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ মালিকা আচার্যা ও অন্যান্য অনেক রাওয়া শিল্পী বিভিন্ন আঙ্গিকের প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন করেন৷ নরেন্দ্রপুর আনন্দমার্গ চিল্ড্রেন্স্ হোমের ছোট ছোট মেয়েরা প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য প্রদর্শন করে সবাইকে মোহিত করে দেয়৷
আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত প্রভাত সঙ্গীতের ভাব-ভাষা-সুর ও ছন্দের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন৷
তিনি বলেন, প্রভাত সঙ্গীত প্রকৃতপক্ষে সুপ্ত মানবতার ঘুম ভাঙ্গানোর সঙ্গীত, নবজাগরণের সঙ্গীত, অন্ধকার থেকে আলোকে উত্তরণের সঙ্গীত৷ প্রভাত সঙ্গীতের প্রথম সঙ্গীতটিতে সেই বার্র্ত রয়েছে৷ প্রথম সঙ্গীতটিতেই আছে---
বন্ধু হে, নিয়ে চলো৷
আলোর ওই ঝর্ণাধারার পানে৷৷
আঁধারের ব্যথা আর সয়না প্রাণে৷৷
ঘুমের ঘোর ভাঙ্গানোর গানে গানে৷৷
প্রভাত সঙ্গীতে যেমন রয়েছে ভক্তিমূলক সঙ্গীত, তেমনি রয়েছে আদর্শ সমাজ-সংরচনার সঙ্গীত, অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সঙ্গীত৷ রয়েছে বিভিন্ন ঋতুর সঙ্গীত, জন্মদিন থেকে শুরু করে অন্নপ্রাশন, বিবাহ, শ্রাদ্ধ প্রভৃতি অনুষ্ঠানের সঙ্গীত, প্রাউটের সঙ্গীত, সুরের দিক থেকে ঝুমুর, কীর্ত্তন ও বাউলাঙ্গের সঙ্গীত , ধ্রুপদী সঙ্গীত, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সুরের মিশ্রণে তৈরী অনেক সুরবৈচিত্র্য রয়েছে প্রভাত সঙ্গীতে৷
৮ বৎসর ১মাস ৫ দিনে এহেন উচ্চমার্গের ৫০১৮টি প্রভাত সঙ্গীত রচনা ও তাতে নিজেই সুর দেওয়া--- বিশ্বের ইতিহাসে এর কোনো তুলনা নেই৷ এখন আমাদের সংকল্প নিতে হবে, আমরা নিজেরা প্রভাত সঙ্গীত গেয়ে প্রভাত সঙ্গীত ভাবতরঙ্গের সঙ্গে নিজেদের মনকে যেমন মিলিয়ে দেওয়ার অহরহ চেষ্টা করব, তেমনি জগৎকল্যাণে প্রভাত সঙ্গীতের ব্যাপক প্রচার করে’ এই সঙ্গীতকে মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তুলবো৷