সম্পাদকীয়

২০২৫ আন্তর্জাতিক নববর্ষের শপথ বিশ্বৈকতাবাদের প্রতিষ্ঠা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

কালের মানসিক পরিমাপে যুগের হিসেবে আরও একটা বছর যোগ হল৷ দুর্লভ মানব জীবন থেকে চলে গেল মূল্যবান ৩৬৫টা দিন৷ যা আর ফিরে পাওয়া যাবে না৷ পৃথিবী আজ বড় অশান্ত৷ মানুষের সীমাহীন চাহিদা, স্বার্থলোভ, ক্ষমতার আস্ফালন বিত্তশালীর প্রতাপে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ৷ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যুদ্ধ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে, গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে, দলে উপদলে সংঘাত বার বার রক্তাক্ত করছে পৃথিবীকে৷ ধর্মের নামাবলী গায়ে মানবতাহীন, বিবেকহীন, ভাবজড়তায় আচ্ছন্ন অধার্মিকদের ব্যভিচার অনাচারে জর্জরিত মানব সমাজ৷

অনেক হয়েছে  আর নয়

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

শেষের পরেও শুরু আছে৷ আজকের সূর্যাস্তের ও কালপ্রাতের সূর্যদয়ের মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই৷ প্রকৃতির  নিয়মের কোন হেরফের নেই৷ আর পাঁচটা দিনের মতই সূর্যটা অস্ত যায়, নববর্ষের প্রথম সূর্র্যেদয় ঠিক আগের দিনের মতই হবে৷ এইভাবেই ৩৬৫ দিন পার করে আর একটা নববর্ষের নবপ্রভাতের অরুণ আলো দুয়ারে এসে পড়বে৷ প্রকৃতির এই নিত্যদিনের আসা-যাওয়ায় কালের মানসিক পরিমানে শুধু সংখ্যার হেরফের হয়৷

চাই প্রকৃত আধ্যাত্মিক শিক্ষা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আর.জি.কর ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিল চরম দণ্ড তথা অপরাধীর প্রাণদণ্ড দিলেও সমাজ অপরাধ মুক্ত হয় না৷ তবু অর্বচীনের মানুষ আবারও পথে নামে অপরাধীর চরম দণ্ডের দাবীতে৷ আশ্চর্যের বিষয় অর্বাচীনের মধ্যে  অনেক তথাকথিত সুশীল সমাজের কেউ–কেটারাও আছেন৷ অপরাধের উৎস মূখ বন্ধ করার দায় কিন্তু ওই তথাকথিত  সমাজের৷

দুঃসাধ্য---অসাধ্য নয়

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মানুষের সমাজে সব থেকে ভয়াবহ হলো ধর্মকে হাতিয়ার করে মানুষে মানুষে, ভায়ে-ভায়ে বিভেদ সৃষ্টি৷ ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে বেশী রক্তক্ষরণ হয়েছে উপধর্ম আশ্রিত দুই সম্প্রদায়ের সংঘাতে৷ পরাধীন ভারতে বিভেদ সৃষ্টি কর---শাসন করো তত্ত্বের প্রয়োগ করেছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ, শুধু সম্প্রদায়গত নয়, সম্প্রদায়ের ভিতর জাতি-উপজাতি তপশীলী নানাভাবে বিভাজন সৃষ্টি করে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকে হীনবল করাই ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের উদ্দেশ্য৷ ব্রিটিশ দেশ ছাড়লেও বিভাজনের তত্ত্বকে তারা চিরস্থায়ী ব্যবস্থা করে দিয়ে গেছে৷

আত্মপরিচয়ে জেগে উঠুক বাঙালী

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

এই ধর্মান্ধতা, অসার ধর্মীয় মতবাদের দোহাই দিয়ে এই উন্মত্ততা আর যাই হোক কোনো পক্ষেরই কোন কল্যাণ করবে না৷ শুধুমাত্র ক্ষমতালোভি লুম্পেন পলিটিশিয়ান ও আত্ম সর্বস্ব ফ্যাসিস্ট শোষক ধনুকুবেরদের স্বার্থসিদ্ধি করবে৷

‘কেউ শেখে ঠেকে কেউ শেখে দেখে৷’ তথাকথিত ধর্মীয় মতবাদে উন্মত্ত বাঙালী দেখেও শেখেনা ঠেকেও শেখেনা৷ ৪৬ এর ক্ষত সাতাত্তর বছর ধরে বহে বেড়াচ্ছে লক্ষ লক্ষ ছিন্নমূল বাঙালী৷ তবু তার বোধোদয় হলো না৷ দাঙ্গা করে মরেছে বাঙালী, স্বার্থসিদ্ধি করেছে কিছু পশ্চিমি ধান্দাবাজ পলিটিশিয়ান, দাঙ্গাবাজ ধর্মব্যবসায়ী ও ফ্যাসিস্ট শোষক দেশীয় পুঁজিপতি৷

ভারতবর্ষ---সংহতি কোন পথে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

দেশটার নাম ভারতবর্ষ৷ ভারত শব্দটার উৎপত্তি নিয়ে বিতর্ক আছে৷ কেউ কেউ বলেন ভরত নামে এক রাজার নাম থেকে ভারত নামটা এসেছে৷ তবে অনেকে এটা মানতে চান না৷ তাদের যুক্তি ভরত নামের রাজা তো ভারতের রাজা ছিলেন, অর্থাৎ ভরত রাজা হওয়ার আগে থেকে দেশটার নাম ভারতবর্ষ৷ তাই ভরত নামের রাজার নাম থেকে ভারতবর্ষ নাম হয়েছে এটা যুক্তিযুক্ত নয়৷ এই মতের পক্ষে যারা তাঁরা কোন ঐতিহাসিক তথ্য প্রমাণ তুলে ধরতে পারেনি৷

শিক্ষার সংকট

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মানব সমাজের সঙ্গে শিক্ষার গভীর সম্পর্ক৷ শিক্ষককে বলা হয় জাতির মেরুদণ্ড৷ পক্ষান্তরে বলা যায় শিক্ষাই সমাজের মেরুদণ্ড৷ মানুষকে মানুষ করে গড়তে হলে উপযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন৷ প্রশ্ণ উঠতে পারে মানব শরীর নিয়ে যে জন্মায় সে তো মানুষই৷ মানুষকে আবার মানুষ হতে হবে কেন?

বাংলা শিক্ষা ও বাংলা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে অনিহা কেন?

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

 সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিউইয়র্ক শহরের ৬০টি নির্বাচন কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে বাংলা স্থান পেয়েছে৷ নিউইয়র্ক শহরে প্রায় ২০০-এর মত ভাষার মানুষ বাস করেন৷ বাংলাভাষী মানুষের সংখ্যা ১লাখেরও বেশী৷ নিউইয়র্কের বোর্ড অব ইলেকশনের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর জে. রায়ান জানান আইন মেনেই বাংলা ভাষাকে ব্যালটে স্থান দেওয়া হয়েছে৷ এশিয়ার চারটে ভাষা ব্যালটে স্থান পেয়েছে৷ সেই চারটে ভাষার একটি বাংলা৷

সামাজিক অবক্ষয় ঃ সমাধানের পথ কী

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

সম্প্রতি আর.জি.করের মর্মান্তিক ঘটনা সমাজে একটা নাড়া দিয়ে ছিল৷ মানুষ হয়তো সজাগ সচেতন হচ্ছে৷  কিন্তু  পেছন থেকে ক্ষমতা হারানো একটি রাজনৈতিক দল দলীয় স্বার্থ সিদ্ধি করতে গিয়ে সেই আন্দোলনকে বিপথে চালিত করে৷

বঞ্চিত বাঙলা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বাঙলার প্রতি বঞ্চনার বহর দিন দিন বাড়ছে৷ দিল্লির মসনদে শাসক পরিবর্তন হলেও বাঙলার প্রতি দিল্লির বৈষম্যমূলক আচরণের কোন পরিবর্তন হয়নে৷ বাম আমলেও এই একই অভিযোগে সংসদে সরব হতো বাম সাংসদরা৷ নরেন মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার ঘটিত হওয়ার পর অনেকে ভেবে ছিল এবার বুঝি বাঙলার প্রতি দিল্লির দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে৷ কিন্তু এই জায়গায় নেহেরু থেকে নরেন্দ্রমোদি সরকারী নীতির কোন পরিবর্তন হয়নি৷ ১০০দিনের কাজ, গ্রামীন আবাস যোজনা, গ্রামীন সড়ক যোজনা–বঞ্চনার তালিকা আর দীর্ঘ না করেও বলা যায় পূর্বতন সব সরকারের পরিসংখ্যানকে ছাড়িয়ে গেছে গত ১২ বছরে মোদি জমানার বঞ্চনা৷