সম্পাদকীয়

কদর্য রাজনীতি ছেড়ে অপরাধের উৎসে আঘাত হানতে হবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মানুষের সাংস্কৃতিক জীবনও রয়েছে৷ সকল মানুষের জীবনেই রয়েছে কতকগুলি সাধারণ ও সহজাত বৃত্তি৷ স্বভাবগত ভাবে তাদের কেউ কেউ হয়তো মানুষকে বিকাশের পথে নিয়ে যায়, কেউ বা নিয়ে যায় অবনতির দিকে৷ যে বৃত্তি মানুষকে বিকাশের পথে নিয়ে যায় তাকে আমাদের উৎসাহ প্রদান করা উচিত৷ আর যে বৃত্তি মানুষকে অবনতির পথে নিয়ে যায় তাকে নিরুৎসাহিত করা উচিত৷ এই পৃথিবীর কোথাও কোথাও মানুষকে ব্যাপক নগ্ণচিত্র ও অশ্লীল সাহিত্যের মাধ্যমে নৈতিক অধোগতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ সাধারণ প্রতিবাদের মাধ্যমে একে প্রতিহত করা যাবে না যদি না পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের জন্যে আমরা সক্রিয়ভাবে কিছু করি৷ যদি বাস্তবোচিত আমরা কিছু করি তবে তা মানুষের মনে এক নূত

মাতৃভাষার অধিকার

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় পশ্চিমবঙ্গে ডব্ল বিএসসি পরীক্ষায় বাংলাভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে৷ কিন্তু নবান্ন থেকে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়৷ বাংলা ভাষা নিয়ে রাজ্য সরকারের এক পা এগোনো দু-পা পিছানো এই প্রথম নয়, এর আগেও সিদ্ধান্ত নিয়ে পিছিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার৷ কারণ এইরাজ্যে অনেক অ-বাংলা ভাষী আছে৷

প্রধান বিচারপতির উপলব্ধি ভারতীয় গণতন্ত্রের শেষ ভরসা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

দেশে বিদেশে ভারতীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরূপ সমালোচনা হচ্ছে৷ সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ভারতীয় গণতন্ত্রকে স্বৈরাচারী গণতন্ত্র আখ্যায় ভূষিত করেছে৷ দেশেও বিরোধী কন্ঠস্বরকে স্তব্ধ করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করছে সরকার৷ বিচার বিভাগেও হস্তক্ষেপ করছে সরকার৷ বার বার বিরোধীদের কন্ঠে এই অভিযোগ উঠে আসছে৷ সরকার বিরোধী প্রচারের দায় বেশ কিছু সাংবাদিকও গ্রেপ্তার হয়৷ এককথায় গণমাধ্যমের এক অংশ আতঙ্কিত আর এক অংশ সরকারের অনুগত হয় কাজ করছে৷ বিচারমাধ্যম সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়৷ তবু উভয়ক্ষেত্রেই সৎ সাহসী ও নির্ভীক ব্যষ্টি এখনও আছেন যাঁরা সত্যকে আঁকড়ে ধরে চলছেন৷

বিপজ্জনক প্রবণতা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে আমরা গর্ব করি৷ তবে ভারত শুধু বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই নয়৷ নানা ভাষাভাষী, পোষাক–পরিচ্ছদ, আচার–আচরণ, আহার––বিহার ও সাংস্কৃতিক অভিপ্রকাশের বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর দেশ ভারত একটি যুক্তরাষ্ট্র৷ বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে মজবুত করতে ও জনগোষ্ঠীগুলির তথা রাষ্ট্রীয় সংহতি দৃঢ় করতে হলে কেন্দ্রীয় শাসককে প্রতিটি রাজ্যের প্রতি সমান নজর দিতে হবে৷ কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকেই কেন্দ্রের শাসক দল পক্ষপাত মূলক আচরণ করে আসছে৷ নরেন মোদি ক্ষমতায় আসার পর সেই প্রবণতা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে চলেছে৷ সম্প্রতি শির্ষ আদালত কেন্দ্রীয় এজেন্সীর ব্যবহার নিয়ে কেন্দ্রীয়

বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

ভাগ করো ভোগ করো--- সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসকের এই কৌশল স্বাধীনতা পরবর্ত্তী ভারতের দিল্লির শাসকের মগজেও রয়ে গেছে উত্তরাধিকার সূত্রে--- বিশেষ করে বাঙলার ক্ষেত্রে৷ পরাধীন ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনে যে রাজ্যটির অবদান সব থেকে বেশী, স্বাধীনতার মূল্য তাকেই দিতে হয়েছে সবথেকে বেশী, দেশভাগের বলি সেই বাঙালী স্বাধীনতার জন্মলগ্ণ থেকেই দিল্লির শাসকদের কাছে উপেক্ষিত৷ সে উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধানে হোক, আর্থিক উন্নয়ণের ক্ষেত্রে হোক, শিক্ষা সাহিত্য, সংস্কৃতির ক্ষেত্রেই হোক দিল্লির কাছ থেকে বঞ্চনা উপেক্ষা ছাড়া বাঙলা কিছু পায়নে৷ ন্যায্য পাওনাটুকুও বাঙলাকে দেওয়া হয়নে৷ এরজন্যে দিল্লির শাসকদের বিমাতৃসুলভ বৈষম্যমূলক

আক্রান্ত বাঙালী

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

রাজ্যে রাজ্যে আক্রান্ত বাঙালীরা৷ স্বাধীন ভারতে বাঙালীর ওপর আঘাত এই প্রথম নয়, বরং বলা যায় স্বাধীন ভারতের জন্মলগ্ণ থেকেই ভারতে বাঙালীদের প্রতি দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মতো  আচরণ করা হচ্ছে৷ নেহেরু আমলে অসম ব্যতীত অন্য কোথাও দৈহিক আক্রমন না হলেও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাঙালীকে পঙ্গু করার চক্রান্ত ১৯৪৭ সালের মধ্যরাত থেকেই শুরু হয়েছে নেহেরুর হাত ধরেই৷ পরিতাপের বিষয় নেহেরুর বিশেষ বন্ধু বিধানচন্দ্র রায় মুখ্যমন্ত্রী থেকেও বাঙলার প্রতি দিল্লির বৈষম্যমূলক আচরণের কোন প্রতিবাদ করেননি তৎকালীন খ্যাতনামা সাংবাদিক রঞ্জিত রায় লিখলেন--- বিধান রায়ের আমল থেকেই বাঙলার অধঃপতনের শুরু৷ রঞ্জিত রায় সম্ভবত প্রথম সাংবাদিক

ধর্ম্মেন হীনাঃ পশুভিঃ সমানাঃ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

ধর্ম---এই শব্দটা পৃথিবীতে যত রক্তপাত ঘটিয়েছে দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধেও সম্ববতঃ এত রক্তপাত হয়নি৷ বিজ্ঞান ও যুক্তি বিবর্জিত ধর্মান্ধদের সংঘাত মানুষকে পশুর চেয়ে নীচে নামিয়ে দেয়৷ অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কারের আচ্ছন্ন ধর্মের নামাবলি ভারতীয় উপমহাদেশের খণ্ডিত তিন রাষ্ট্রের দুর্গতির কারণ৷

ধর্ম নয়, ধর্মের বিকৃতরূপ যে সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দেয়, সেই সাম্প্রদায়িকতাই মানুষকে সংকীর্ণ গণ্ডীবদ্ধ দ্বিপদ জীবে পরিণত করেছে৷ মানুষ মনুষ্য ধর্ম ভুলে অন্ধবিশ্বাস ও কু-সংস্কারে আচ্ছন্ন ধর্মমতকে ধর্মের তকমা লাগিয়ে আঁকড়ে ধরেছে৷

জনগণের আর্থিক মুক্তির কথাও ভাবতে হবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

পুলওয়ামার পর পহেলগাঁও, আরও একবার জঙ্গী হামলার শিকার ভারত৷ পুলওয়ামার হামলার পিছনে কারা, আজও স্পষ্ট হয়নি, এরই মধ্যে পহেলগাঁও হামলা৷ প্রথমবার লক্ষ্য ছিল সেনাবাহিনী, এবার কিন্তু আক্রান্ত সাধারণ মানুষ, নিরীহ পর্যটক৷ দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, ক্ষুব্ধ মানুষ যে যার মত করে ক্ষোভ ব্যক্ত করছে৷ শাসক বিরোধী সবপক্ষই চাইছে জঙ্গীদের কঠোর সাজা দিতে৷ জঙ্গীরা কঠোর সাজা পাক এবিষয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথাও নয়৷

গণতন্ত্রের বেদীতে ফ্যাসিষ্ট হুংকার আক্রান্ত শীর্ষ আদালত

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

দলীয় স্বার্থে ও বিরোধী পক্ষকে হেনস্থা করতে সরকারী এজেন্সীর অপব্যবহার পূর্বতন সরকারও করেছে৷ কিন্তু বর্তমান সরকার দলীয় ক্যাডারে পরিণত করেছে সরকারী এজেন্সীকে৷ বিচার বিভাগকেও কব্জা করতে উঠে পড়ে লেগেছে৷ এই কাজে শাসক দল বিক্ষিপ্তভাবে সফল হলেও এখনও শীর্ষ আদালত বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা বজায় রেখে নির্ভীকভাবে চলছে অন্তত চলতে চাইছে৷ শাসক দলের সেটাই নাপসন্দ্‌৷

বিদ্বেষ বিষে জর্জরিত রাজনীতি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

একজন প্রাক্তন আর এস এস নেতা বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন আর এস এস ও বিজেপি দলটা চরম বাঙালী বিদ্বেষী৷ দিল্লির ক্ষমতায় মোদি বসার পর থেকে বিজেপির বাঙালী বিদ্বেষী চরিত্রে আর কোন রাখ-ঢাক নেই, দিন দিন নগ্ণ হয়ে পড়ছে৷ এমন কি যদি কোন দিন বিজেপির স্বপ্ণের হিন্দু রাষ্ট্র গঠিত হয়, সে রাষ্ট্রে হিন্দু বাঙালীরও স্থান হবে না৷