পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে৷ তার মধ্যে একটু হলেও আশার আলো দেখলেন বিজ্ঞানীরা৷ সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মহাসাগরের নোনা জলের নীচে রয়েছে মিষ্টি জল৷ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে এই জল তেষ্টা মেটাতে পারে বহু মানুষের৷ আমেরিকার উত্তর-পূর্বে অতলান্তিক সাগরের নীচে রয়েছে সেই পানীয় জলের ভান্ডার৷ এই নিয়ে বিজ্ঞানীদের মনে একটা সন্দেহ ছিল৷ এখন তাঁরা সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন৷
আমেরিকা-সহ প্রায় ১২টি দেশ গবেষণা শুরু করেছিল৷ উপকূলের কাছে সমুদ্রে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গভীর পর্যন্ত খনন করেছিলেন বিজ্ঞানীরা৷ খরচ পড়েছিল প্রায় ২ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার৷ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২২০ কোটি টাকা৷ সেই খনন করেই সমুদ্রের নীচে মিলেছে মিষ্টি জলের হদিস৷ বিজ্ঞানীদের অনুমান, আমেরিকার নিউ জার্সি থেকে মেইন পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে এই ভূগর্ভস্থ মিষ্টি জলের স্তর৷
কেন খনন করা হল?
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সমুদ্রের নীচে পানীয় জলের স্তর থাকার সম্ভাবনা বিস্তর৷ কিন্তু পাশাপাশি তাঁরা এ-ও জানিয়েছেন যে, সেই জল উত্তোলন করা কঠিন৷ কিন্তু ধীরে ধীরে যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, যে ভাবে পানীয় জলের অভাব দেখা দিচ্ছে, তাতে ওই জল তুলে এনে ব্যবহার করা জরুরি হয়ে পড়ছে৷
রাষ্ট্রপুঞ্জ বলছে, আগামী পাঁচ বছরে পানীয় জলের চাহিদা জোগানের তুলনায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে৷ দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ইতিমধ্যে পানীয় জল কমতির দিকে৷ সমুদ্রের নীচে পানীয় জলের ভান্ডার খুঁজতে তারাও উঠেপড়ে লেগেছে৷
কী ভাবে শুরু গবেষণা?
প্রায় ৫০ বছর আগে খনিজের খোঁজে আমেরিকার সরকারি জাহাজ পূর্ব উপকূলের কাছে সমুদ্রে খননকাজ শুরু করে৷ গভীর কুয়ো খননের পরে গবেষকেরা পানীয় জল পেয়েছিলেন৷ ২০১৫ সালে আবার গবেষকদের একটি দল সমুদ্রের গভীরে খনন কাজ চালিয়ে মিঠে জলের সন্ধান পায়৷ তাঁরা গবেষণা করে দেখেছেন, আমেরিকার পূর্ব উপকূলের কাছে সমুদ্রের নীচে যে পরিমাণ পানীয় জল রয়েছে, তা নিউ ইয়র্কের মতো শহরের বাসিন্দাদের ৮০০ বছরের চাহিদা মেটাতে পারে৷ গবেষকদের একাংশ মনে করছেন, বাস্তবে সমুদ্রের নীচে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ রয়েছে জল৷
এর পরে গবেষকেরা ওই জল পরীক্ষা করে দেখেন যে, তা আদৌ পানযোগ্য কি না৷ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তা পানীয় জল হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে৷ এ বার বিজ্ঞানীরা দেখছেন যে, ওই জলের উৎস কী৷ তার বয়স কত৷ তার পরেই বোঝা যাবে, এই জল জোগান অবিরত (রিনিউয়েবল) কি না৷