শিলিগুড়ি, ১৫ই জুন ঃ দার্জিলিংয়ে নিজের শক্তি প্রদর্শন করতে মরিয়া গোর্র্খমুক্তি মোর্র্চর প্রধান বিমল গুরুং৷ সরকারী অফিসে ধর্মঘট ডেকে গুরুংরা বিভিন্ন সরকারী অফিসে আগুন লাগিয়েছে ও সরকারী সম্পত্তি ভাঙচুর চালিয়েছে৷ তা সত্ত্বেও সরকারী অফিসের হাজিরা মোটামুটি ভালই ছিল৷ পুলিশের হস্তক্ষেপে মোর্চা সমর্থকরা খুব বেশি গোলমাল পাকাতে পারেনি৷ এ অবস্থায় বিমল গুরুং যুব মোর্র্চকে সামনে রেখে নূতন করে পাহাড়ে গোলমাল পাকানোর ছক কষে৷ ১৪ই জুন যুব মোর্র্চর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রকাশ গুরুং বলেছে, পুলিশী অত্যাচারের বিরুদ্ধে তারা সর্বত্র প্রতিবাদ মিছিল বের করবে৷ তারপর প্রয়োজনে অনির্দিষ্টকাল বনধ্ ডাকবে৷ সমগ্র ডুয়ার্স এলাকায় তাঁরা আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেবে৷ ১৫ই জুন পুলিশ বিমল গুরুংয়ের অফিসে তল্লাসি চালিয়ে প্রচুর আগ্ণেয়াস্ত্র উদ্ধার করে৷ এরপর মোর্চা সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের আবার তুমুল সংঘর্ষ বাধে৷ মোর্চা সমর্থকরা পুলিশের দিকে ইঁট-পাথর ছোঁড়ে৷ সাংবাদিকদের গাড়িতে আগুন ধরায়৷
আসলে সুভাষ ঘিসিংএর মতো বিমল গুরুং ও তার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে জিটিএ-র বিপুল টাকা নয়-ছয়ের অভিযোগ উঠেছে৷ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই সবের অডিট শুরু হয়েছে৷
তাছাড়া এমনিতেই বিমল গুরুংদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে শুরু করেছে৷ এই অবস্থায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে পাহাড়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখার অভিপ্রায়ই নূতন করে গোর্খাল্যাণ্ড র্র্খল্যান্ড রাজ্যের দাবীকে সামনে রেখে পাহাড়ে আগুন জ্বালানো হচ্ছে৷
উত্তরবঙ্গ জুড়ে আমরা বাঙালী সহ আরও কিছু বাঙালী সংঘটন দার্জিলিং-এ আবার গোর্খাল্যাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু করেছে৷ আমরা বাঙালীর দার্জিলিংয়ের জেলা সচিব বাসুদেব সাহা জানান, বাঙলা ভাগ করে গোর্খাল্যাণ্ড হতে আমরা কিছুতেই দেব না৷ তাঁরা এ ব্যাপারে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির ভূমিকার তীব্র প্রতিবাদ জানান৷ তাঁরা আরও বলেন,দার্জিলিং-এর বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়ার উস্কানিতেই বিমল গুরুংরা এতটা বাড়াবাড়ি করছে ৷ তিনি বলেন, দার্জিলিং প:বঙ্গের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ৷ গোর্খারা নেপাল থেকে এসে এখানে জীবিকা নির্র্বহ করছে মাত্র৷ এখানকার আদি বাসিন্দা তার নয়, বরং এখানকার আদি বাসিন্দা লেপচা ও ভুটিয়া--- যাঁরা আদি বাঙালী জাতিভুক্ত কোচ সম্প্রদায়েরই শাখা বিশেষ৷ প্রধানমন্ত্রী মোরারজী দেশাইও দার্জিলিংএ এসে গোর্খাল্যাণ্ড আন্দোলনকারীদের সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিলেন, যারা গোর্খাল্যাণ্ড আন্দোলন করতে চায় তারা তাদের দেশ নেপালে গিয়ে আন্দোলন করুক৷ এখানে নয়৷
উত্তর বাংলার আমরা বাঙালীর সংঘটনিক সাচিব খুশী মন্ডল বলেন---বাঙলায় থাকবে, বাংলা অন্নে পুষ্ট হবে, অথচ বাংলা ভাষাকে, বাংলা সংসৃকতিকে মান্যতা দেবে না, বাংলার সঙ্গে একাত্মতা বোধ করবে না ---তাহলে তাদের বাংলায় থাকার কোন অধিকার নেই৷
তিনি বলেন, অবিলম্বে অসাংবিধানিক বিছিন্নতাবাদী আন্দোলন করার জন্যে, সরকারী সম্পত্তি নষ্ট করার জন্যে ও মদন তামাং হত্যায় জড়িত থাকার জন্যে, বিমল গুরুং, রোশন গিরি ও তার সহকর্মীদের গ্রেফ্তার করতে হবে৷