আকাশ ও মন

লেখক
জিজ্ঞাসু

আকাশ কত বড়! মন বিজ্ঞানীদের গবেষণায় ধরা পড়েছে , সাধারণভাবে মানুষের চেতন মনের পরিসর যত বড়, তার তুলনায় অনেক অনেক গুণ বড় হল অবচেতন মনের সীমানা!! শিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীত, বিজ্ঞান জগতে যা কিছু নোতুন আবিষ্কার তার উৎস স্থল, মানবের অবচেতন মন! চেতন মনকে দেখা যায় না কিন্তু মন খারাপ বা ভয় পাওয়া বা রেগে যাওয়া বা খুশীর মুড---এই অবস্থা অনুভব করার পর মানুষ মনকে স্বীকার করে নেয়৷ পরের প্রশ্ণ, দেহের মধ্যে মন থাকে কোথায় কিভাবে? মনের নেটওয়ার্ক দেহের ভিতর প্রতি পরমাণু অতিপরমাণুতে পরিব্যপ্ত৷ রক্তমাংস, হাড় চামড়া থেকে শ্বাসক্রিয়া, প্রতি প্রতঙ্গে থাকা জীবন্ত দেহকোষে ‘মন’ থাকে , যেভাবে জলের মধ্যে বাতাস থাকে, ইথার থাকে৷ যেখানে দেহের কাজ চলছে মানে মন আছে ৷ চুল বা নখের বেড়ে ওঠা থেকে হজম বা বর্জন প্রণালী বা শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস, গন্ধের কারবার বা চিন্তার জগৎ সর্বত্র সবকিছু জুড়ে আছে মন৷ গভীর প্রশান্তির অবস্থায় ‘‘মন’’ থাকে না থাকার মতোই৷ তখন বলি মগ্ণ বা তন্ময় হয়ে থাকা৷ আবার অত্যন্ত অশান্তি র অবস্থায়, ক্রোধ, লোভ, প্রতিহিংসা পরায়ণতা ,ঝগড়া তর্কের অবস্থা ভয় বা গভীর কামাবেগে দেহের মধ্যেকার রসায়ণে নেগেটিভ পরিবর্তন আসে, হার্টবিট্ পালস্ বিট এ দ্রুতি আসে, ক্লান্তি আসে, বিষাদ আসে, হতাশা আসে যা প্রশান্তির অবস্থায় থাকে না৷ অতএব দেহের ওপর মনের প্রভাব অপরিসীম৷ পরের প্রশ্ণ মন কত সূক্ষ্ম? ওই যে শব্দ বহন করে যে আকাশ, সেই আকাশ বা শূন্য স্থান থেকেও অধিকতর সূক্ষ্ম অবস্থা হল মানবমন৷ এর অর্থ যেখানেই আকাশ আছে তার ভেতরে মনও আছে৷ এখন বিজ্ঞানের যন্ত্রে ধরা পড়েছে শুধু শ্বাস প্রশ্বাস নয়, প্লাজমা, রক্ত,হরমোন, ভিটামিন, প্রোটিন থেকে চামড়া, চুল,চোখ, দাঁত, হাড় সর্বত্র আকাশই আকাশ! দেহের মধ্যে থাকা আকাশেক ক্ষেত্রগুলিকে মিলিয়ে নিলে, জানা যাচ্ছে, মানবদেহের ৯৯.৯৯ অংশই মহাকাশে পূর্ণ৷ তাহলে মন আমাদের আরো কত বড়!