অমিত শাহের ‘হিম্মত’ দেখে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর মনোবল বৃদ্ধি

লেখক
মনোতোষ কুমার মণ্ডল

বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় খবরে প্রকাশ বিগত ৩১শে অগাষ্ট রাজ্যসভায় অমিত শাহ বুক ফুলিয়ে ঘোষণা করলেন---‘‘আপকে পাস হিম্মত নহী থা--- হামারা হেয়....’’ (তোমাদের সাহস ছিল না --- আমাদের আছে)৷ বক্তব্যটি প্রাক্তন কংগ্রেস সরকারের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে৷ গত ৩০শে জুলাই দ্বিতীয় এন.আর.সি ড্রাফট্ প্রকাশ করা হয়েছে৷ এতে চল্লিশ লক্ষ জনগণের নাম বাদ গেছে৷ এই খুশীতে আমাদের মহামান্য অমিত মহাশয় অত্যধিক আত্মহারা৷ তিনি খুশী চেপে রাখতে পারেন নি৷ তাই আনন্দ প্রকাশার্থে তিনি খুশীতে আমাদের মহামান্য অমিত মহাশয় অত্যধিক আত্মহারা৷ তিনি খুশী চেপে রাখতে পারেন নি৷ তাই আনন্দ প্রকাশনার্থে তিনি মিডিয়ার সম্মুখে নিজের হাতে মিষ্টি খাওয়ালেন ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী মহাশয়কে৷ উনিও হা মিষ্টি খাচ্ছেন দেখে মনে হলো, উনিও আনন্দে আটখানা৷ হায়,রে পোড়া কপাল ! যে দেশের প্রধানমন্ত্রী চল্লিশ লক্ষাধিক মানুষকে নিরাশ্রিত ঘোষণা করে আনন্দে মাতামাতি করেন সে দেশের মঙ্গল কোথায় ? যিনি বিগত লোকসভা নির্র্বচনের পূর্বে অচ্ছে দিন আশ্বাস দিয়েছিলেন তাঁর মধ্যে মানবীয় মূল্যবোধ আছে কিনা--- তাতে সন্দেহ হয়৷ আমার মনে হয় মানব-জাতির প্রতি সামান্যতম দরদ বোধ থাকলেও মানুষ মানুষের দুঃখে উৎসাহ প্রকাশ করতে পারে না৷ দেখা যায় বিভিন্ন দেব-দেবীস্থানে পূজারীবর্গ পাঁঠাবলি দিয়ে, পাঁঠার রক্ত কপালে ঠেকিয়ে নৃত্য করেন৷ এটাও সেই রকমেরই ঘটনা৷

যাই হউক, এই ঘটনারই পরিপ্রেক্ষিতে ঝাড়খণ্ডের কথায় আসা থাকে৷ ঝাড়খণ্ডের মূখ্যমন্ত্রী মাননীয় শ্রী রঘুবর দাস মহাশয় শুরু করছেন ‘‘বাঙালী খেদাও’’ নামক মহা যজ্ঞানুষ্ঠান৷ এতদর্থে উনি ইতোপূর্বেই কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট অনুমতি প্রাপ্তির আশায় বাঞ্ছাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ এটা হলো এই অনুষ্ঠানের প্রথম পদক্ষেপ৷

দ্বিতীয় পদক্ষেপ হচ্ছে--- এন.আর.সি কার্যাবলী সম্বন্ধে যথাযথ জ্ঞান প্রাপ্ত্যর্থে অসম রাজ্যের এন.আর.সি কার্যালয়ে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন৷ ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বিশিষ্ট শাখার এস.পি. শ্রী ধনঞ্জয় সিংহ এতদ বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান অর্জন করে ফিরেও এসেছেন৷

জ্ঞানলব্ধ প্রতিনিধির প্রত্যাবর্তনে খুশী হয়ে মূখ্যমন্ত্রী মহাশয় ঘোষণা করলেন, ‘‘যথাশীঘ্র ‘বাঙালী খেদাও’ মহান যজ্ঞানুষ্টান শুরু করা হবে৷ প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ নিরাশ্রিত হবেন৷ এদের অধিকাংশই সাহেবগঞ্জ, গোড্ডা, পাকুড় ও জামতুড়া জেলার অধিবাসী৷ এ সম্বন্ধে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন অনন্ত কুমার ওঝা নামক জনৈক ভাজপা-বিধায়ক৷ তিনি মাঝে মধ্যে রাঁচীতে এসে মূখ্যমন্ত্রী মহাশয়কে উস্কানি দিচ্ছেন৷

এই পত্রিকার মাধ্যমে ভারতবর্ষের বাঙালী জনগোষ্ঠীকে সতর্কবার্র্ত পৌঁছে দেবার চেষ্টা করছি --- ‘‘বাঙালী তুমি ঘুমিয়ে থেকো না, জাগো, ওঠো, দলবল নিয়ে এগিয়ে আসুন৷ ‘বাঙালী খেদাও যজ্ঞের প্রতিবাদ করে সরকারকে এন.আর.সি কার্যক্রম বাতিল করতে বাধ্য করুণ৷

এন.আর.সি কাযক্রম বন্ধ করতেই হবে? নইলে যে অগ্ণিশিখার দাপটে অসম জ্বলছে, এবার ঝাড়খণ্ডও জ্বলবে৷ অদূর ভবিষ্যতে এই আগুনের জ্বলন্ত শিখা পশ্চিমবঙ্গেও পৌঁছাবে--- এতে কোন সন্দেহ নাই৷ অতএব সাধু, সাধারণ! সময় থাকতে প্রস্তুত হউন৷ ‘বাঙালী খেদাও’ যজ্ঞের রথচক্র থামিয়ে দিন! দিন থাকতেই সলতে পাকাতে হয়৷ নইলে অসুবিধায় পড়তে হয়৷