আমতা আনন্দমার্গস্কুলে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

হাওড়া জেলার অন্তর্গত আমতা আনন্দমার্গ স্কুলে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব (৫০বর্ষ পূর্ত্তি) গত ১২ই জানুয়ারী হতে ১৪জানুয়ারী  ৩দিন ব্যাপী সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হলো৷

অনুষ্ঠানের প্রথম দিন  ১২ই জানুয়ারী  সকাল ১০টায় শিক্ষাগুরু ও ধর্মগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর পুস্পশোভিত সিংহাসনে স্থাপিত  প্রতিকৃতিসহ বিদ্যালয়ের  বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রা,অভিভাবক-অভিভাবিকা, শিক্ষকমণ্ডলী, বহু শুভানুধ্যায়ী ও আনন্দমার্গীরা প্রভাত সঙ্গীত ও শঙ্খধবনি সহ আমতা শহরের বিভিন্ন অঞ্চল পরিক্রমা করে৷ 

এই পথযাত্রায় পা মেলান আচার্য পূর্ণব্রতানন্দ অবধূত, আচার্য কাশীশ্বরানন্দ অবধূত, আচার্য সুবিকাশারানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ চিরমধুরা আচার্যা, ভুক্তিপ্রধান সুব্রত সাহা, বকুলচন্দ্র রায় প্রমুখ৷ শোভাযাত্রার পর  শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী প্রতিকৃতিতে  মাল্যদান করে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী রতন কুমার বিশ্বাস মহাশয়৷ এরপর ৫০ জন দুঃস্থ ব্যষ্টির হাতে কম্বল তুলে দেওয়া হয় ও দুঃস্থ দরিদ্র ছাত্রদের মধ্যে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়৷  এই অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন ডায়োসিস সচিব আচার্য সুবিকাশানন্দ অবধূত৷ সন্ধ্যায় অয়োজিত সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা  প্রভাত সঙ্গীত ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য পরিবেশন করেন৷

অনুষ্ঠানে ‘মানসিক একাগ্রতা, স্মৃতি ও যোগ’ এ বিষয়ে আলোচনা করেন আচার্য কাশীশ্বরানন্দ অবধূত৷ বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা  যোগাসন প্রদর্শন করে৷  আমতা আনন্দমার্গ স্কুলের ক্রমবিকাশ, বৈশিষ্ট্য ও আদর্শ শিক্ষা বিস্তারে  এর কৃতিত্ব নিয়ে মনোজ্ঞ বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের  উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি শ্রী বরুণ ব্যানার্জী মহাশয়, যিনি বর্তমানে রামচন্দ্রপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক৷

১৩ই জানুয়ারী সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের ২য়দিনে অনুষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান৷ এই  অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন  পশ্চিমবঙ্গ সরকারের  প্রাক্তন পঞ্চায়েত সেক্রেটারী শ্রী প্রদীপ চক্রবর্তী মহাশয়৷ প্রধান অতিথি ছিলেন  আচার্য কাশীশ্বরানন্দ অবধূত ও বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আমতা উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শ্রীমতী সান্ত্বনা রায়৷ সভাপতি ও অতিথিবৃন্দ বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন শিক্ষকদের ত্যাগ ও নিষ্ঠার  ভূয়সী প্রশংসা করেন৷ বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী লক্ষীকান্ত হাজরা মহাশয় আমতা আনন্দর্র্ম স্কুলের আদর্শ ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে হৃদয়গ্রাহী বক্তব্য রাখেন৷  তিনি স্পষ্ট করে বলেন আনন্দমার্গ স্কুলের যা কিছু সুনাম,  প্রশংসা ও শিক্ষকদের দক্ষতা ত্যাগ ও আদর্শ-নিষ্ঠা  সবকিছুর প্রেরণার উৎস হলেন শিক্ষাগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী৷ তাঁর আশীষ সর্বদা এই বিদ্যালয়ের সকলের প্রেরণা৷

১৪ই জানুয়ারী  সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের সমাপ্তি  দিনে  বিদ্যালয়ের বহু প্রাক্তন ও বহু বর্তমান ছাত্র-ছাত্রাবৃন্দ ও তাদের অভিভাবক  ও অভিভাবিকা প্রীতিভোজে যোগ দেন৷

 বিদ্যালয়ের নবীন-প্রবীণ ছাত্র-ছাত্রাদের  উপস্থিতিতে আমতা আনন্দমার্গ বিদ্যালয় মিলন মেলায় রূপ নেয়৷ সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে  প্রতিষ্ঠিত প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রাগণ তাদের শৈশবের বিদ্যালয় ও প্রিয় শিক্ষকদের  কথা আবেগপ্রবন ভাবে প্রকাশ করেন৷ তাঁরা অনেকেই প্রভাত সঙ্গীত ও নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন৷ প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে  আচার্য তন্ময়ানন্দ অবধূতের সংযোজনায় ‘মুক্তভূমির মেয়ে’ নৃত্যনাট্য উপস্থিত সকলকে মুগ্দ করে৷ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রতন কুমার বিশ্বাস, প্রথম শিক্ষক সুশান্ত জানা, প্রথম প্রিন্সিপ্যাল আচার্য কাশীশ্বরানন্দ , প্রথম ছাত্র  শিবুরাম দেওয়াশিকে প্রমুখকে মানপত্র ও পুস্পস্তবকসহ উত্তরীয় দিয়ে  সংবর্ধিত করা হয়৷

তিন দিন ব্যাপী সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব যাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দক্ষতায় সাফল্যমন্ডিত হয়েছিল  তাঁরা হলেন  বিদ্যালয়ের সভাপতি শ্রী বরুণ ব্যানার্জী , ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক  লক্ষীকান্ত হাজরা, সুদাম মৃধা, সুশান্ত চোঙদার ও অন্যান্যসহ শিক্ষকবৃন্দ৷