আন্দামানেও বাঙালী বিতাড়নের চক্রান্ত

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

অসমের পর এবার গোটা আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেও সুপরিকল্পিতভাবে বাঙালী বিতাড়নের চক্রান্ত শুরু হয়েছে৷ যত্রতত্র একদল স্বঘোষিত উগ্র জাতীয়তাবাদী বাঙালীদের কাছে তাদের নাগরিকত্বের নানান নথিপত্র দাবী করছে ও নানান অজুহাতে তাদের গালিগালাজ, হয়রানি ও নির্যাতন চালাচ্ছে৷ পুলিশও তাদের সহযোগিতা করছে ও বাঙালীদের নানা ভাবে হয়রানি করছে, এমনকি নানান অজুহাতে বাঙালীদের হাজতে ভরে দিচ্ছে৷

সম্প্রতি আন্দামানের সাংসদ বিষ্ণুপদ রায় যেহেতু বাঙালী তাই তাঁর ওপরও অকথ্য অত্যাচার চলছে৷ ‘বাঙলাদেশী’ তক্মা লাগিয়ে তাঁকে নানান অশ্লীল ও নোংরা ভাষায় গালাগালি করা হয়৷ তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করা হয়৷

কয়েকদিন আগে একটি কম বয়েসী বাঙালী মেয়ের মৃতদেহ রাস্তায় পাওয়া গেছে৷ খুনীর কোনও হদিশ নেই৷ দিন পনেরো আগে অন্য একজন মধ্যবয়সী বাঙালী মেয়েরও মৃতদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ এক্ষেত্রেও পুলিশ খুনীকে খুঁজে বের করার কোনও চেষ্টা করছে না৷ বাঙালী হকাররা হকারি করে কোনওরকম রুজিরোজগার করত, এখন তাদের হকারি করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ ফলে অর্থনৈতিকভাবে বাঙালীরা ভেঙ্গে পড়েছে৷ বাঙালীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে৷

আন্দামানে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বাঙালী৷ কিন্তু বিদ্যালয়গুলিতে বাংলা পড়া বা বাংলা মাধ্যমে পড়াশুণার সুযোগ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে৷ বিদ্যালয়গুলিতে বাঙালী শিক্ষক দেওয়া হচ্ছে না, সমস্তই অবাঙালী শিক্ষক৷ এমনকি বাঙালী হ’লে স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রেও নানানভাবে হয়রাণি করা হচ্ছে৷ এসব কারণে সারা আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বাঙালীরা আতঙ্কিত৷

স্বাধীনতার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নেহেরু সহ তাঁর মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন, ওপার বাঙলা থেকে আগত উদ্বাস্তুদের আন্দামানে পুনর্বাসন করা যেতে পারে৷ এখন তাহলে আন্দামানে বাঙালী উদ্বাস্তুরা স্থান পাবে না কেন?

স্বাধীনতার জন্যে যে বাঙালীরা সবচেয়ে বেশী বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে, সেই বাঙালীদেরই আজ অসম, ত্রিপুরা, আন্দামান সর্বত্রই বিদেশী তকমা দিয়ে নানান ভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে৷ এর প্রতিবাদে সমস্ত বাঙালীদের ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে৷