এখন থেকে কমবেশি ২২৫ বছর আগে পৃথিবীতে এলো ধনতন্ত্র৷ একসময় তাদের শত বছরে ধরা পড়ল শোষণের চেহারা৷ প্রতিক্রিয়া স্বরূপ এখন থেকে কমবেশি ১৩৫ বছর আগে পৃথিবীতে এলো কম্যুনিজম৷ মজার কথা এই দুই অর্থনৈতিক সামাজিক দর্শন এর জন্ম ইউরোপের মাটিতে৷ দুটোই সংকীর্ণ জড়ভোগবাদে বিশ্বাসী৷ প্রথমটি কূয়োর ব্যাঙ ধরে নিলে , দ্বিতীয়টি হবে পুকুরের৷ এই দুটি অসম্পূর্ণ দর্শনে পৃথিবী যখন শোষিত, লাঞ্ছিত, অপমানিত, হতাশাগ্রস্ত সেই সময় এখন থেকে ৫৭ বছর আগে সারা পৃথিবীকে সর্বপ্রকার ভয় দারিদ্র্য মুক্ত করতে এক নবতর সামাজিক অর্থনৈতিক দর্শন আমরা পেলাম প্রাচ্যের এই ভারত থেকেই৷ দর্শণের নাম প্রাউট বা প্রগেসিভ ইউটিলাইজেশন থিয়োরী৷ যিনি এই দর্শণের জনক, তাঁর নাম শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার৷
মানুষের প্রশ্ণ৷ সাধারণ পত্র পত্রিকা বা টিভি চ্যানেলে প্রাউটের কথা বা আলোচনা আসে না কেন? এখন সারা দুনিয়ায় ছড়ি ঘোরাচ্ছে সম্মিলিত ধণতন্ত্রের শক্তি বুদ্ধি ৷ কম্যুনিজম মর মর৷ ঐ দু পক্ষই জানে, যে মূহূর্তে সাধারণ মানুষ প্রাউট বিষয়ে সত্য তথ্য জেনে যাবে তখন থেকে ওদের অর্থনৈতিক ও বৌদ্ধিক ও জাতপাত ধর্মমতের শোষণ বন্ধ হয়ে যাবে তাই প্রাউট বিষয়ে কোন আলোচনা বা সংবাদ বা সেমিনার বা শিবির বিষয়ে ওরা একটি শব্দ ও খরচ করে না৷ কারণ প্রাউট ওদের মৃত্যুবাণ৷ কি এমন আছে ওদের এত ভীত হবার ৷ কারণ ঐ দুপক্ষই তাঁদের অস্তিত্ব ও বাড় বাড়ন্তের জন্যে দরিদ্র ও দারিদ্র্য দুটোই চান৷ মানুষকে ভয়ে চাপে রাখা চাই৷ প্রাউট চায় অতি দ্রুত ভয় ও সার্বিক দারিদ্র্য মুক্ত সমবৃদ্ধির পৃথিবী৷ তাই ওরা নিজেদের স্বার্থে প্রাউট থেকে মুখ ঘুরিয়ে থাকতে চাইলেও যে হারে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে, পোশাক, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার ক্রমাগত দাম বাড়ছে, মানুষের সুরক্ষার অভাব বাড়ছে, শহরের ভিড় বাড়ছে দূষণ বাড়ছে৷ হঠাৎ ধনী হবার জন্যে যাবতীয় অসামাজিক দুর্নীতির কাজে যুব সমাজ জড়িয়ে পড়ছে ৷ নিষ্ঠুরতা নেশাগ্রস্ত জীবন, নারীদেহ ও অস্ত্রের সাথে যাবতীয় নেশার ব্যবসা , ধর্মমতের ব্যবসা৷
বাধ্য হয়ে মানুষ প্রাউট বুঝে নেবে অচিরে৷ প্রভাত রঞ্জনের ভাষায় ‘‘স্থূল জগতে, সূক্ষ্ম জগতে, কারণ জগতে যা কিছু সম্পদ নিহিত আছে তার উৎকর্ষ সাধন করতে হবে জীব কল্যাণে৷ ‘‘অতীতে কী অ্যাডাম স্মিথ কী কার্লমার্কস বা তাঁদের অনুগামীদের কারো মাথায় ত্রিভুবনে থাকা সম্পদ ও তার উৎকর্ষ সাধন বা সর্বজীবের কল্যাণ ধারণা ছিলই না৷ প্রাউট বাস্তবায়িত হলে এক নিমেষে সারা পৃথিবী থেকে দারিদ্র্য অত্যাচার অসুখের ভয় মুছে যাবে তার বাইরে মানুষের বুদ্ধির মুক্তিতে একটা মানবিক বিশ্ব আবিস্কার করে নেবে৷ কেবল সবার জন্য সমবৃদ্ধির পৃথিবী হয়ে যাবে সেটাই শেষ কথা নয়৷ এর থেকেও বড় কথা সর্বপ্রাণীন ও অপ্রাণীন সত্বার মধ্যে অদৃশ্য হয়ে থাকা চেতনার অখন্ড প্রবাহে আমরা সবাই বহমান, বহু বিচিত্র বাইরে বাইরে অন্তরেতে এক ৷ এই একের ভিত্তি কারণ জগতের অভিজ্ঞতা ছাড়া হতেই পারে না৷ এখানেই অন্য দুই ব্যর্থ দর্শন প্রাউটের কাছে পরাজিত হতে বাধ্য হচ্ছে ৷ পরের সপ্তাহে প্রাউটের বিস্ময়কর সম্ভাবনা নিয়ে লেখার ইচ্ছে রইল৷
- Log in to post comments