অসম রাজ্য বলে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মানচিত্রে যে ভূখন্ডটি বর্তমানে চিহ্ণিত, সেটি ইতিহাসের দৃষ্টিতে মূলতই প্রাচীন অখণ্ড বঙ্গদেশের অন্তর্ভুক্ত ও এর পূর্বেকার নাম ছিল প্রাগ্জ্যোতিষপুর৷ ব্রিটিশ সরকার বাংলার সেই অংশ কেটে নিয়ে ‘বঙ্গ ও অসম প্রদেশ’ তৈরী করে ৷ এছাড়া অহম বা অসমীয়রা প্রকৃত বিচারে মঙ্গোলীয় গোষ্ঠীভুক্ত ও বার্র্ম (বর্তমান মায়ানমার) থেকে আগত৷ সুতরাং তারা এদেশে বহিরাগত৷ কিন্তু ব্রিটিশ শাসকদের পরও হিন্দী সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তকারীদের ষড়যন্ত্রে বিগত ১৯৫০ সালে অসমে ‘বঙাল খেদা’ আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল৷ অসমের নেলির গণহত্যার পচা ঘা এখনও শুকোয়নি ৷ মানুষ আজও ভুলতে পারেনি বরাকভ্যালী তথা কাছাড়ে এগারটি বাঙালী তাজা প্রাণের আত্মবলিদান৷
কিন্তু, অসম সাহিত্য পরিষদ ও তারই মন্ত্রশিষ্য আসু বা অগপ সমেত বাঙালী বিদ্বেষী সমস্ত অশুভ শক্তিরা একের পর এক চক্রান্তের জাল বিছিয়ে চলেছে--- কীভাবে বাঙালীদের নিজস্ব বাস্তুভিটে ও স্বভূমি থেকে বিতাড়িত করা যায়৷ একই কারণে দিল্লীর কংগ্রেস সরকার ও বর্তমান বিজেপি সরকারও তাতে মদত যুগিয়ে চলেছেন৷ অসম বিধানসভার গত নির্র্বচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাঙালীর নাগরিকত্বের সুরাহা করবেন৷ তবে নেহেরুজীর পথ ধরে মোদিজী তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি খেলাপ করেন৷ শুধু তাই নয়৷ ২০০৩ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন মেনে এখন এন.আর.সি চাপিয়ে দিয়ে প্রায় দেড়কোটি বাঙালীকে উৎখাত করার চক্রান্তে নেমে অসম সরকার আর কেন্দ্রীয় সরকার নীরবে মজা লুঠছেন৷
কিন্তু বাঙালীর শৌর্য-বীর্যের কথা যদি তারা ভুলে গিয়ে থাকেন , তাহলে তারা খুবই ভুল করছেন ও আগুন নিয়ে খেলছেন ৷ আমরা বাঙালী দল এ অন্যায় ও অবিচার কিছুতেই মেনে নেবে না৷ তাই, আমরা বাঙালীর ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি আগামী ১১ই জানুয়ারী রাজধানী আগরতলা শহরে বিশাল বিক্ষোভ জমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে৷ এরপরও যদি অসমে সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার বাঙালীর সর্বনাশের পথ পরিহার না করেন তবে আমরা বাঙালী অস্তিত্ব রক্ষা ও মর্র্যদা রক্ষার জন্যে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে৷ আর সেজন্যে যদি ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে সে দায় বর্তাবে উক্ত দুই রাজ্য আর কেন্দ্রীয় সরকারে ওপর৷ বাঙালী কোনদিন অন্যায় বরদাস্ত করেনি আর কখনও করবেও না৷