কলকাতা ঃ এন আর সি-র চূড়ান্ত খসড়া তালিকা থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ বাঙালীর নাম বাদ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ‘আমরা বাঙালী’র কেন্দ্রীয় সচিব শ্রী বকুল চন্দ্র রায় আজ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাঙালীরা নিজেদের ভূমিতেই পুরুষানুক্রমে বাস করা সত্ত্বেও স্বাধীনতার পর থেকে সাম্রাজ্যবাদী রাজনৈতিক চক্রান্তে বারবার তাদের ওপর নানান ভাবে নির্যাতন চলছে৷ স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত উত্তর -পূর্বাঞ্চলের বাঙালীদের ওপর যেভাবে বার বার নানান অজুহাতে নির্যাতন চলছে ও তাদের জীবন ও সম্পত্তি বিপন্ন হচ্ছে, এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দাবী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সমস্ত বাঙালী অধূ্যষিত এলাকা নিয়ে অবিলম্বে ‘বাঙালীস্তান’ গড়তে হবে৷ ভারতের সংবিধানের ধারা মেনেই এটা সম্ভব৷ আর এছাড়া বাঙালীদের নিরাপত্তাজনিত সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়৷ তিনি আরও বলেন অসমে বারবার ‘বাঙালী খেদা’ আন্দোলন, ‘নেলী’তে বাঙালী গণহত্যা, ডি-ভোটার তক্মা দিয়ে লক্ষ লক্ষ বাঙালীদের অন্যায়ভাবে ডিটেনশন ক্যাম্পে (জেলা কারাগারগুলির বর্ধিত অংশে) বন্দী রেখে তাদের ওপর অত্যাচার চালানো, মণিপুরে বার বার বাঙালীদের ওপর আক্রমণ ও বাঙালী বিতাড়নের চক্রান্ত, ত্রিপুরাতেও বাঙালীদের বিদেশী তক্মা দিয়ে ক্রমাগত নির্যাতন, এসব চলতেই আছে৷ তার ওপর গত ৩০শে জুলাই অসমে নূতন জাতীয় পঞ্জীকরণের চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ করে এক ধাক্কায় প্রায় ৪০ লক্ষ বাঙালীর কার্যত নাগরিকত্ব হরণ করা হ’ল৷ যদিও বলা হচ্ছে তাদের আবেদনের সুযোগ রয়েছে৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও যে লক্ষ লক্ষ বাঙালীর জীবনে চরম অনিশ্চিততা ও অন্ধকার নেমে আসবে তাতে কোন সন্দেহ নেই৷
অথচ অসমের বৃহদাংশ মণিপুরের বৃহদংশ ও প্রায় সমগ্র ত্রিপুরা আসলে প্রাচীন বাঙলারই অংশ৷ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী ও অর্বাচীন ক্ষমতালোভী একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতাদের জন্যেই বাঙলার এই সমস্ত অবিচ্ছেদ্য অংশ অন্য রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বা অন্য নামে অভিহিত করে (যেমন ত্রিপুরা) বাঙালীদের নিজ ভূমে পরবাসী করে তোলা হয়েছে ও তাদের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তোলা হয়েছে৷
এই পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা সঙ্গতভাবেই দাবী রাখছি অবিলম্বে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সমস্ত বাঙালী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিকে নিয়ে ‘বাঙালীস্তান’ গড়ে তোলা ছাড়া এই অঞ্চণ্ডেলর বাঙালীদের সমস্যার স্থায়ী কোন সমাধানের আশা নেই৷