গত ১১ই আগষ্ট ‘আমরা বাঙালী’র পক্ষ থেকে সর্বত্র ক্ষুদিরাম বসুর আত্মবলিদান দিবস গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করা হয়৷ এদিন কলকাতার শ্যামবাজারে আমরা বাঙালীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমরা বাঙালীর কেন্দ্রীয় সচিব ও অন্যান্য কর্মীরা সমবেত হয়ে শহীদ ক্ষুদিরামের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন৷ স্পান্দনিকের পক্ষ থেকে মাল্যদান করেন শ্রীমতী সুরশ্রী মাইতি ও তিনি উদ্বোধনী সঙ্গীত হিসেবে ‘‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি...’’ গানটি গাইলে এক অপূর্ব ভাবগম্ভীর পরিবেশ সৃষ্টি হয়৷ এরপর বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সচিব বকুল চন্দ্র রায়, জ্যোতিবিকাশ সিন্হা, উজ্জ্বল ঘোষ, সুপ্রিয় রায়, প্রশান্ত দত্ত, সুনন্দা সাহা, মালা সরকার, রবীন্দ্রনাথ সেন প্রমুখ৷ তাঁরা ক্ষুদিরাম বসুর অতুলনীয় দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের বর্ণনা দিয়ে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন৷
কেন্দ্রীয় সচিব বকুলচন্দ্র রায় বলেন, শ্রী অরবিন্দের নেতৃত্বে সেদিন ক্ষুদিরাম , প্রফুল্ল চাকীসহ দলে দলে বিপ্লবীরা বঙ্গভঙ্গ রদ করতে মরণপণ লডাই শুরু করেছিলেন ও আত্মবলিদান করেছিলেন৷ কিন্তু শোষকদের ষড়যন্ত্রে পরেসেই বিশাল বাংলা খণ্ড-বিখণ্ডই হ’ল, যার পরিণতিতে লক্ষ লক্ষ বাঙালী গৃহহারা, উদ্বাস্তু হয়ে চরম জীবনযন্ত্রণা ভোগ করছে৷ আজ অসমে যে লক্ষ লক্ষ বাঙালী শোষণ ও নির্র্যতনের শিকার---তার মূল কারণই হ’ল বাংলার খণ্ডিতকরণ৷ আজ অসমসহ উত্তরপূর্র্বাঞ্চলের বাঙালীদের যে চরম নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে, এই সমস্যার একমাত্র স্থায়ী সমাধান খণ্ডিত বাংলাকে আবার যুক্ত করে বাঙালীর নিজস্ব বাসভূমি ‘বাঙালীস্তান’ গড়ে তোলা৷
অন্যান্য বক্তারাও তাঁদের অন্যান্য বক্তব্যের সঙ্গে অসমে যে প্রায় ৪ লক্ষ বাঙালীদের অন্যায়ভাবে নাগরিকত্ব হরণ করা হচ্ছে, তার তীব্র প্রতিবাদ করেন ও এই অন্যায়ের প্রতিবাদে সমস্ত বাঙালীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সামিল হতে আবেদন জানান৷
হাওড়া ঃ গত ১১ই অগাষ্ট ‘আমরা বাঙালী’র পক্ষ থেকে হাওড়ার আলমপুরে ন্যাশানাল হাই রোডের মোড়ে শহীদ ক্ষুদিরামের আত্মবলিদান দিবস পালন করা হয়৷ ক্ষুদিরামের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে ‘আমরা বাঙালী’র পক্ষ থেকে বিভিন্ন বক্তা ক্ষুদিরামের দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের ওপর বক্তব্য রাখেন৷ তাঁরা বলেন, যে অখণ্ড বাঙলার জন্যে ক্ষুদিরাম আত্মবলিদান দিয়েছিলেন, আজ সেই বাঙলাকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে অসম, মণিপুর, ত্রিপুরা, বিহার, ঝাড়খণ্ড ওড়িশ্যা প্রভৃতির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে৷ এই কারণেই অসমে বর্তমানে বাঙালীরা নিজভূমে পরবাসী ও আজ তাই নূতন নাগরিকপঞ্জী তৈরীর নামে তাদের বিদেশী তক্মা দিয়ে বিতাড়নের চেষ্টা চলছে৷ হিন্দী সাম্রাজ্যবাদীরা ও অসমের উগ্র জাতীয়তাবাদের চক্রান্ত এর পেছনে ক্রিয়াশীল৷ এর প্রতিবাদে সমস্ত বাঙালীকে আজ গর্জে ওঠতে হবে৷
এখানে বক্তব্য রাখেন, জেলা সচিব রামচন্দ্র মান্না, কেন্দ্রীয় সচিব বকুলচন্দ্র রায় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অর্ণব কুণ্ডু চৌধুরী, উৎপল কুণ্ডু চৌধুরী, শ্রীমতী গোপা শীল, সুব্রত সাহা, সুপ্রিয় রায়, প্রশান্ত দাস প্রমুখ৷ বক্তাদের বক্তব্য রাখার পর ন্যাশান্যাল হাইরোড অবরোধ করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের কুশপুত্তলিকা দাহ করে অসমের বাঙালী নির্যাতনের প্রতিবাদ জানানো হয়৷