বিভিন্ন স্থানে আনন্দমার্গের সেমিনার

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়
Seminar-Anandanagar
অানন্দ নগরের সেমিনার

আনন্দনগর ঃ  গত ২৯, ৩০শে জুন  ও ১লা জুলাই  আনন্দনগরে  আনন্দমার্গের সেমিনার  অনুষ্ঠিত হয়৷  এই সেমিনারে আধ্যাত্মিক  ও সামাজিক অর্থনৈতিক দর্শনের বিভিন্ন দিকের ওপর ক্লাশ নেন কেন্দ্রীয়  সহকারী প্রকাশন সচিব আচার্য সর্বাত্মানন্দ অবধূত৷ আনন্দনগর  এলাকার  প্রায়  ১০০ মার্গের কর্মীও অনুগামী এই সেমিনারে  যোগদান করেন৷ আচার্য সর্বাত্মানন্দজী আনন্দমার্গের ব্রহ্মসাধনা ও একজন আনন্দমার্গীর আচরণ কেমন হবে--- এ সম্পর্কে যেমন  আলোচনা করেন,  তেমনি  সামাজিক  সুবিচার ও সুসংবদ্ধ কৃষির  ব্যাপারেও প্রাউটের  নীতির ওপর আলোকপাত করেন৷

রাইগঞ্জ ঃ  গত ২৯, ৩০শে জুন ও  ১লা জুলাই  রাইগঞ্জে আনন্দমার্গের ১ম  ডায়োসিস  স্তরীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হল৷  এইRaiganja Seminar সেমিনারে  আনন্দমার্গের আধ্যাত্মিক  ও সমাজদর্শনের  বিভিন্ন দিকগুলির ওপর আলোচনা করেন আচার্য তন্ময়ানন্দ অবধূত৷

রাইগঞ্জের  অতিথি নিবাসে  (মৎসভবন) অনুষ্ঠিত এই সেমিনার উত্তর দিনাজপুর  ও  দক্ষিণ দিনাজপুর  জেলার  বিভিন্ন  ব্লক থেকে  প্রায় ২০০ জন আনন্দমার্গী সমবেত হয়েছিলেন৷ ৩০শে জুন আনন্দমার্গের পক্ষ থেকে এক বর্র্ণঢ্য শোভাযাত্রারও আয়োজন  করা হয়েছিল৷  এই শোভাযাত্রা রাইগঞ্জ শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে৷ মাঝে এক পথসভা  অনুষ্ঠিত  হয়৷  পথসভায় আচার্য সত্যস্বরূপানন্দ  অবধূত ও আচার্য বিশ্বমিত্রানন্দ অবধূত আনন্দমার্গের  আদর্শের  ওপর  বক্তব্য রাখেন৷ আচার্য সত্যস্বরূপানন্দ অবধূত বলেন, মানুষের  জীবনের  লক্ষ্য ব্রহ্মসম্প্রাপ্তি৷ ব্রহ্ম বা ঈশ্বর মানুষের  অন্তরে৷ 

তাই ঈশ্বর সাধনার  জন্যে তীর্থে তীর্থে ঘুরে বেড়াতে হয় না, মনকে  অন্তর্মুখী করে অন্তরাস্থিত ঈশ্বরের সঙ্গে যুক্ত হতে হয়৷ এজন্যে  প্রয়োজন অষ্টাঙ্গিক যোগ সাধনা৷ যোগের  নিয়মিত অনুশীলনের  মধ্য দিয়ে  মানুষ শারীরিক  সুস্থতা, প্রচণ্ড মানসিক  শক্তি  ও মানসিক শান্তি লাভ করতে পারে ও ক্রমান্বয়ে  আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটাতে পারে৷

আনন্দমার্গের প্রচারকগণ সর্বত্র  এই যোগসাধনা শেখান৷ এজন্যে কোনো  অর্থব্যয় করতে হয় না৷ জাতি-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলের  জন্যে আনন্দমার্গের  দ্বার উন্মুক্ত৷

আচার্য বিশ্বমিত্রানন্দ অবধূত বলেন, শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী আধ্যাত্মিক  দর্শনের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক -অর্থনৈতিক দর্শণও দিয়েছেন--- তার নাম ‘প্রাউট’৷ ‘প্রাউট’ বর্তমান  সমাজে  সমস্ত প্রকারের সামাজিক -অর্থনৈতিক  সমস্যার সমাধানের পথ দেখিয়েছে৷

গুয়াহাটি ঃ গত ২২, ২৩ ও ২৪ শে জুন গুয়াহাটির  জয়নগর আনন্দমার্গ আশ্রমে আনন্দমার্গের  ত্রিদিবসীয়  সেমিনার  অনুষ্ঠিত হয়৷  এই সেমিনারে  অসমের  বিভিন্ন  এলাকা থেকে  প্রায় ২০০ আনন্দমার্গী  যোগদান করেছিলেন৷ সেমিনার ‘ব্রহ্মসদ্ভাব’, ‘সামাজিক  সুবিচার’, ‘সুসংবদ্ধ কৃষি’--- প্রভৃতি  বিষয়ের  ওপর আলোচনা  করেন আচার্য নির্মলশিবানন্দ  অবধূত ও আচার্য  বোধিসত্তানন্দ অবধূত৷

সেমিনারে এই বিষয়গুলির ওপর আলোচনা  ছাড়া ও প্রভাত সঙ্গীত, কীর্ত্তন, মিলিত সাধনা  ও বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মসূচীও ছিল৷ যেমন ২২ তারিখে সমবেত আনন্দমার্গীরা গুয়াহাটি  রাস্তাঘাটে ‘কালেক্টিভ  স্যোশ্যাল সার্বিস’ (সি.এস.এস) এর কর্মসূচীর  মাধ্যমে রাস্তাঘাট  পরিষ্কার করেন৷ ২৩ তারিখে  হাসপাতালে রোগীদের  মধ্যে ফল বিতরণের কর্মসূচী গৃহীত হয়৷ এছাড়া জনবহুল কামাখ্যা মন্দিরের কাছে  ভক্তমণ্ডলীর  সুবিধার্থে জলসত্রের ব্যবস্থা করা হয়৷ এদিন  বিকেলে  এক সিম্পোসিয়ামের আয়োজন করা হয়৷ তাতে গুয়াহাটির বহু  ছাত্র-যুবা-বুদ্ধিজীবীদের  আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ৷ সিম্পোসিয়ামে  আলোচ্য বিষয় ছিল ‘ডগমা’৷ এই বিষয়ে  বক্তব্য রাখেন  শ্রী খগেন দাস, আচার্য প্রমথেশানন্দ অবধূত প্রমুখ৷ সভায় সভাপতিত্বের আসন অলঙ্কৃত করেন শ্রী চিদানন্দনাথ৷

আচার্য প্রমথেশানন্দ অবধূত  বলেন, ধর্মের নামে  বেশির ভাগ ক্ষেত্রে  মানুষ নানারকম  অন্ধবিশ্বাস, যুক্তিহীন ভাবজড়তাকে  মেনে চলে, মানুষের আধ্যাত্মিক  প্রগতির জন্যে  মনকে একাগ্র করে নিজের  অন্তরেই  ঈশ্বরের ধ্যান করতে হবে৷ এজন্যে তীর্থে  তীর্থে মন্দিরে  মন্দিরে ঘোরারও  কোনে প্রয়োজন নেই৷

এই সেমিনারের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় ছিলেন মুখ্যতঃ আচার্য উদিতানন্দ অবধূত ৷

ডিমাপুর ঃ নাগাল্যাণ্ডের রাজধানী ডিমাপুরে  গত ২৯, ৩০ জুন ও ১লা জুলাই  আনন্দমার্গের সেমিনার হয়৷ এখানে আনন্দমার্গ দর্শনের বিভিন্ন দিকের  ওপর  ক্লাস নেন আচার্য নির্ম্মলশিবানন্দ অবধূত ও আচার্য বোধিসত্তানন্দ অবধূত৷ তিন দিন ধরে  সেমিনারের আলোচনা ছাড়াও প্রভাত সঙ্গীত, অখন্ড কীর্ত্তন নগর  কীর্ত্তন প্রভৃতি  মাধ্যমে  এখানে এক অপূর্ব  স্বর্গীয়  পরিবেশের  সৃষ্টি  হয়েছিল৷

‘আনন্দ আহার’ ঃ ডিমাপুরে ১লা জুলাই থেকে স্থানীয় আনন্দমার্গ  ইয়ূনিটের তরফ থেকে এক বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে৷  এর নাম ‘আনন্দ আহার’৷ এই  কর্মসূচীতে  প্রতি রবিবার এলাকার সমস্ত ভিখারীদের মধ্যাহ্ণভোজনের  ব্যবস্থা করা হবে৷  এদিনও সমস্ত ভিখারীদের আমন্ত্রণ  করে মধ্যাহ্ণ ভোজনে  আপ্যায়িত  করা হয়৷ এই সংবাদ দিয়েছেন  এখানকার  আনন্দমার্গের ডিট সেক্রেটারী আচার্য সদ্বোধানন্দ অবধূত৷